ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচন
ঢাকা
উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন জরুরি হয়ে পড়েছে সেখানকার মেয়র আনিসুল
হকের অকালমৃত্যুতে। নির্বাচন কমিশনও (ইসি) যে যথাসময়ে নির্বাচন করার বিষয়ে
আগ্রহী, সেটি তাদের কার্যক্রম থেকেই অনুধাবন করা যাচ্ছে। ইসির সচিব
গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন
নির্বাচন হবে এবং জানুয়ারিতে তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন যাতে
নির্বিঘ্নে হতে পারে, সে জন্য কমিশন তিন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের
সঙ্গেও বৈঠক করেছে। কেননা ফেব্রুয়ারির শুরুতেই এসএসসি পরীক্ষা হওয়ার কথা
আছে। অবকাঠামোগত ও লোকবলের সমস্যার কারণে একই সময়ে দুটি হতে পারবে না। এ
কারণে নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারির শেষ দিকের পরীক্ষা পিছিয়ে নেওয়ার অনুরোধ
করলে বোর্ডের চেয়ারম্যানরা রাজি হন। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনের জন্য
প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ,
বিরোধী বিএনপিসহ কয়েকটি দলের সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়েও নানা জল্পনা চলছে।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলো নির্বাচিত
প্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার বিধান থাকলেও অতীতে অনেক সংস্থাই
অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দিয়ে পরিচালিত হয়েছে, যার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়।
একদিকে যেমন নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলে নানা কথা
ভেসে বেড়াচ্ছে। শুধু মেয়রের শূন্য আসনেই নির্বাচন হচ্ছে না।
উত্তর সিটি
করপোরেশনের নতুন ওয়ার্ডগুলোতে কাউন্সিলর পদেও নির্বাচন হওয়ার কথা। সে
ক্ষেত্রে যাতে কোনো আইনগত জটিলতা দেখা না দেয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে
সজাগ থাকতে হবে। আমাদের স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর নির্বাচনের অভিজ্ঞতা
অম্লমধুর। অনেক স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আবার অনেক
নির্বাচন নানা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে
অনুষ্ঠিত কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ
হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। নির্বাচনে কোন দলের প্রার্থী জয়ী বা
পরাজিত হলেন, সেটি কমিশনের বিবেচ্য বিষয় নয়। তাদের দায়িত্ব ভোটাররা যাতে
ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করা। তবে সেই
কাজটি করতে হলে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি প্রার্থী
তথা তাঁদের পেছনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় সহায়তা প্রয়োজন। আগামী
বছরটিকে বলা হয় নির্বাচনের বছর। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচন
দিয়ে সেই যাত্রা শুরু হবে। অতএব, কেবল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভোটার
নন, সারা দেশের মানুষই চান নির্বাচনটি অবাধ ও সুষ্ঠু হোক। আমাদের
নির্বাচনী সংস্কৃতিতে নতুন ধারা ফিরে আসুক।
No comments