রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের ঘটনা এড়িয়ে গেলেন সু চি
জাতিসঙ্ঘের
এক কর্মকর্তার সাথে সাম্প্রতিক এক বৈঠকে রাখাইনে সেনাদের হাতে রোহিঙ্গা
নারীদের ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। আর সে কারণে ৪৫ মিনিটের ওই
বৈঠকে কোনো ফলপ্রসূ আলোচনা করা যায়নি বলে জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের ওই বিশেষ
দূত। গত সপ্তাহে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে লেখা এক চিঠিতে
এমন হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রামিলা প্যাটেন নামের ওই কর্মকর্তা। প্রামিলা
প্যাটেন সঙ্ঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে যৌন নিপীড়নের ঘটনা পর্যবেণকারী জাতিসঙ্ঘের
বিশেষ দূত। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তিনি চার দিনের জন্য মিয়ানমার সফরে
যান। সে সময় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির সাথে বৈঠকও করেছেন তিনি। গত
সপ্তাহে এ নিয়ে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে একটি চিঠি
লিখেছেন প্রামিলা। তিনি জানান, সু চির সাথে তার ৪৫ মিনিট ধরে আলোচনা হলেও
বৈঠকটি কার্যত ব্যর্থ হয়েছে; কারণ রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে রোহিঙ্গা
নারী ও কিশোরীদের ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগগুলো নিয়ে কথা বলতে চাইলে তা
এড়িয়ে গেছেন সু চি। প্রামিলার দাবি, এটি কেবলই একটি সৌজন্য সাাৎ ছিল। গত ২৫
আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার অজুহাতে স্থানীয় রোহিঙ্গা
মুসলিমদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে
পালিয়ে আসেন ছয় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে
পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাকে
জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘প্রকৃষ্ট উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে
জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। তবে এসব অভিযোগ
অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং
সান সু চিও রোহিঙ্গাদের পে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা নিতে সম হননি। এ নিয়ে
বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত হয়েছেন তিনি। হারিয়েছেন বহু সম্মাননা। প্রামিলা প্যাটেন
জানান, তার সাথে বৈঠকেও রাখাইনে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের শিকার হওয়ার
অভিযোগ নিয়ে বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন সু চি। জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবকে পাঠানো
চিঠিতে প্রামিলা লিখেছেন : ‘মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টার সাথে যে বৈঠকটি
হয়েছে, তা ছিল ৪৫ মিনিটের সৌজন্য সাাৎ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটি ফলপ্রসূ
আলোচনা ছিল না।’ জাতিসঙ্ঘের এই দূত জানান, রোহিঙ্গা নারীদের নিপীড়ন
প্রসঙ্গে সরাসরি উত্তর না দিয়ে সু চি তাকে বলেছেন প্রামিলার সাথে
মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের আরো কয়েকটি ‘ভালো বৈঠক’ আছে এবং তিনি তা উপভোগ
করবেন। প্রামিলা বলেন, ওই সব বৈঠকেও মিয়ানমারের কর্মকর্তারা নিপীড়নের
অভিযোগগুলো উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একে
অতিরঞ্জিত করেছে। যারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে গেছে তাদের সাথে সন্ত্রাসী
গোষ্ঠীগুলোর সংযোগ রয়েছে বলে পাল্টা দাবি করেছে তারা।
২ সাংবাদিক আরো ১৪ দিনের রিমান্ডে
রয়টার্স জানায়, মিয়ানমারে ঔপনিবেশিক আমলের দাফতরিক গোপনীয়তা আইনের মামলায় গ্রেফতার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে আরো ১৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার তাদেরকে আদালতে হাজির করার পর এ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। তাদের আইনজীবী এ তথ্য জানিয়েছেন। আদালতে হাজিরের সময় গ্রেফতার সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ি উকে পরিবার ও আইনজীবীর সাথে দেখা করতে দেয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর আটকের পর প্রথমবারের মতো তাদের এ সুযোগ দেয়া হলো। তবে আদালতে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। ইয়াঙ্গুনের পুলিশ দফতর থেকে তাদের আটক করা হয়েছে জানিয়ে ওয়া লোন বলেন, ‘পরিস্থিতি ঠিক আছে। আমরা সর্বোচ্চভাবে এটির মোকাবেলা করব। কারণ আমরা কোনো ভুল করিনি। সংবাদমাধ্যমের আইন ও নৈতিকতা ভঙ্গ করিনি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবো।’ দুই সাংবাদিককে দেখতে ইয়াঙ্গুনের থউত্তরের জেলার ওই আদালত ভবনের বাইরে অনেক সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যান উপস্থিত হয়েছিলেন।
২ সাংবাদিক আরো ১৪ দিনের রিমান্ডে
রয়টার্স জানায়, মিয়ানমারে ঔপনিবেশিক আমলের দাফতরিক গোপনীয়তা আইনের মামলায় গ্রেফতার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে আরো ১৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার তাদেরকে আদালতে হাজির করার পর এ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। তাদের আইনজীবী এ তথ্য জানিয়েছেন। আদালতে হাজিরের সময় গ্রেফতার সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ি উকে পরিবার ও আইনজীবীর সাথে দেখা করতে দেয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর আটকের পর প্রথমবারের মতো তাদের এ সুযোগ দেয়া হলো। তবে আদালতে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। ইয়াঙ্গুনের পুলিশ দফতর থেকে তাদের আটক করা হয়েছে জানিয়ে ওয়া লোন বলেন, ‘পরিস্থিতি ঠিক আছে। আমরা সর্বোচ্চভাবে এটির মোকাবেলা করব। কারণ আমরা কোনো ভুল করিনি। সংবাদমাধ্যমের আইন ও নৈতিকতা ভঙ্গ করিনি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবো।’ দুই সাংবাদিককে দেখতে ইয়াঙ্গুনের থউত্তরের জেলার ওই আদালত ভবনের বাইরে অনেক সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যান উপস্থিত হয়েছিলেন।
পুলিশের প্রিজন ভ্যানের পরিবর্তে একটি সাদা ভ্যানে তাদের আনা হয়। তাদের
শরীরে স্বাভাবিক পোশাক ছিল। কোনো হাতকড়াও পরানো হয়নি। তাদের পে রয়টার্সের
নিয়োগকৃত আইনজীবী থান জাউ অং বলেন, তারা দু’জন সাংবাদিক হিসেবে শুধু
নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সংবাদমাধ্যম হিসেবে
কাজ করার সময় তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ ও সরকারি আইনজীবীর
বাইরে দুই সাংবাদিকের পরিবার ও তাদের আইনজীবী ছাড়া আর কাউকে ভেতরে যেতে
দেয়া হয়নি। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর নিপীড়নে সাড়ে ছয় লাখের
বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ঘটনা কাভার করেছেন রয়টার্সের
ওই দুই সাংবাদিক। তাদের দাফতরিক গোপনীয়তা আইনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়।
এতে তাদের ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
No comments