কোচ সংস্কারে ৭৬ কোটি টাকা সাশ্রয়!
রেলওয়ে
কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ১৮টি রেলকোচ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে
বাস্তব-বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। এভাবে সংস্কারের মাধ্যমে শুধু যে রেলকোচগুলো
নতুন রূপে ফিরে আসছে তা নয়, সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থেরও সাশ্রয় হবে।
বুধবার প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, জার্মান প্রযুক্তির ওই ১৮টি কোচ ১৯৯৮
সালে আমদানি করা হয়। ওই সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন
চলত ওই কোচবহর দিয়ে। পরে সুবর্ণ এক্সপ্রেসের কোচ পাল্টে দেওয়ায় এগুলো
পরিত্যক্ত হয়ে যায়। চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায় পাঁচ বছর ধরে এই
১৮টি কোচ পড়ে ছিল। এ ধরনের একটি নতুন মিটারগেজ কোচ কিনতে গেলে প্রায় পাঁচ
কোটি টাকা গুনতে হতো। সেখানে সংস্কার করতে প্রতিটি কোচে খরচ হবে প্রায় ৮০
লাখ টাকা করে। অর্থাৎ ১৮টি কোচে সরকারের সাশ্রয় হবে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোচগুলো সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর চট্টগ্রাম থেকে গত
এপ্রিল মাসে কোচগুলো সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় নিয়ে আসা হয়। রেল ভবনের
নির্দেশে সেখানেই এখন কোচগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। রেলকোচ সংস্কারে রেলওয়ে
কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগ অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। আমাদের দেশে দেখা
যায়, বিআরটিসি, হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনেক মূল্যবান
যানবাহন বা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম সংস্কার ও মেরামতযোগ্য হলেও সে পথে না
গিয়ে নতুন করে কেনা হয়। আবার অযত্ন ও অবহেলার কারণেও বিভিন্ন সরকারি
প্রতিষ্ঠানের অনেক যানবাহন ও যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়। আবার যথাযথ প্রয়োজন ছাড়াও
আমাদের দেশে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে যানবাহন ও যন্ত্রপাতি কেনা হয়।
এভাবে সরকারের যে কত কোটি কোটি টাকার অপচয় হচ্ছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। অথচ
সচেতনতা থাকলে ও শীর্ষ কর্তৃপক্ষের নজরদারি ও বাস্তব বিচার-বুদ্ধি থাকলে
অনেক অপচয়ই রোধ করা যায়। রেল কর্তৃপক্ষের এই দৃষ্টান্ত অন্য
প্রতিষ্ঠানগুলোও বিবেচনায় নিক।
No comments