বৃষ্টিপাতে ডুবছে শহর, শুষ্ক থাকছে গ্রামাঞ্চল
জলবায়ু পরিবর্তনে তাপমাত্রা বেড়ে ক্রমশ আরও বেশি বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে বিভিন্ন শহর। কিন্তু শুষ্ক থেকে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চল ও চাষাবাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৃষিজমি। অস্ট্রেলিয়ার একটি গবেষণায় এ ফলাফল পাওয়া গেছে। অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের (ইউএনএসডব্লিউ) গবেষকেরা তাঁদের গবেষণার ফলাফলে দেখেছেন, ক্রমেই বেশি উষ্ণ আবহাওয়া শহরাঞ্চলে শক্তিশালী ঝড় ও ভারী বর্ষণ সৃষ্টি করছে। এতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিচ্ছে। আবার এই উষ্ণতা মাটির স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমিয়ে ফেলছে। এর ফলে বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও দ্রুতই পানি শোষিত হচ্ছে এবং গ্রাম্য নদ-নদীতে পানিপ্রবাহ কমছে। গত শুক্রবার নেচার সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনটি। বিশ্বের ১৬০টি দেশের প্রায় অর্ধলাখ বর্ষণপ্রবণ ও নদী পর্যবেক্ষণ স্থানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন। ইউএনএসডব্লিউয়ের জলবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আশিষ শর্মা এএফপিকে বলেন, ‘বেশি উষ্ণতায় যখন (শহরে) বড় ধরনের বৃষ্টিপাত ঘটছে তখন আকস্মিক বন্যা দেখা দিচ্ছে। এই পানির একটা বড় অংশই মাটি শোষণ করে ফেলছে। তাই শহরের বাইরে পানিপ্রবাহ ঘটছে কম।’ বিশেষজ্ঞরা বলেন, গ্রামাঞ্চল ও কৃষিজমিতে পানিপ্রবাহ কমে যাওয়াটা চাষাবাদ ও খাদ্যনিরাপত্তায় হুমকি তৈরি করছে। আগামী দুই দশকের মধ্যে বিশ্ব জনসংখ্যা ২৩ শতাংশ বেড়ে ৯০০ কোটিতে উন্নীত হতে পারে। এ অবস্থায় বিষয়টিতে জরুরি ভিত্তিতে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। ইতিমধ্যে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন, অতিবৃষ্টিজনিত আকস্মিক বন্যা মোকাবিলায় শহরের অবকাঠামো হিমশিম খাচ্ছে। বন্যায় ২০১৩ সালে বিশ্বজুড়ে ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ ছিল আনুমানিক ৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি। আগামী ২০ বছরে ক্ষয়ক্ষতির এ পরিমাণ দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গবেষণা প্রতিবেদনের মূল রচয়িতা ইউএনএসডব্লিউয়ের অধ্যাপক কনরাড ওয়াস্কো বলেন, ‘এটা একটা দ্বিগুণ সংকট।’ তিনি বলেন, ‘দিনে দিনে বন্যা আরও খারাপ আকার ধারণ করছে, মানুষ ক্রমেই বেশি হারে শহরমুখী হচ্ছে।’
No comments