বেড়ায় হাজার মানুষ পানিবন্দী
বেড়ার নগরবাড়ী মথুরা পয়েন্টে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বণ্যা পরিস্থিতির অবনতিতে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির আশঙ্কায় অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন। এদিকে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় তাঁত শিল্প চরম লোকসানের মুখে পড়েছে। সরেজমিনে এসব এলাকা ঘুরে, স্থানীয় মানুষ ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে এই দুর্ভোগের চিত্র উঠে এসেছে। বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, নগড়বাড়ির মথুরা পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি ৩০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বাঘাবাড়ি পয়েন্টে হুরাসাগর নদীর পানি বিপদসীমার ৬০ সেমি উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। নগড়বাড়ি থেকে বাধেরহাট পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে। বেড়া উপজেলার নিন্মাঞ্চলসহ হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ডের প্রায় দুই হাজার পরিবার, নতুন ভারেঙ্গা ও পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার পরিবার, কৈটলা ইউনিয়নের দেড় হাজার পরিবার ও ঢালারচর ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ঢালারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কোরবান আলী জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আজ রাতের মধ্যেই পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। নতুন করে আরো প্রায় দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়বে। প্রতিটি ইউনিয়নের চিত্র প্রায় একই রকম। বন্যার পানি বৃদ্ধিতে মারাত্বক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এলাকার তাঁত শিল্প। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এ অঞ্চলের তাঁত কারখানায় লুঙ্গি উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। লুঙ্গি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সুতা শুকানোর জায়গা না থাকায় এ শিল্পে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। হাটুরিয়া নাকালিয়া তাঁত শিল্প ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদ আলী সরকার জানান, মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এসব তাঁত শিল্প পরিচালিত হয়। ঈদে লোকসান হলে ঋণ শোধ করা সম্ভব হবে না। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শামীম এহসান জানান, বন্যা দুর্গত এলাকার চেয়ারম্যানরা এখন পর্যন্ত তাদের এলাকায় বণ্যার ক্ষয়ক্ষতি তথ্য এবং সাহায্যের জন্য কোন আবেদন করেননি। আজ (বুধবার) ইউপি চেয়ারম্যনদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।
No comments