আমরা তো ইলিশের গন্ধও পাই না : প্রধান বিচারপতি
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত আপিল শুনানিকালে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, আপনার বাড়ি পদ্মার পাড়ে তাই ইলিশ দেখেন; আমরা তো ইলিশের গন্ধও পাই না। বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময়সীমা আবারো বৃদ্ধি করেন। আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত এই সময় বাড়িয়েছেন আদালত। এ সংক্রান্ত শুনানিকালে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতকে বলেন, এখনও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, কেন আমরা তো আদেশ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমার বাড়ি পদ্মার পাড়ে। আমি তো এখনও দেখি, কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার বাড়ি পদ্মার পাড়ে তাই আপনি ইলিশ দেখেন; আমরা তো ইলিশের গন্ধও পাই না। প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর না হলে আমাদের কী করার আছে। যত তাড়াতাড়ি এটা (ভ্রাম্যমান আদালত আইন) ঠিক করবেন, ততই সরকারের লাভ। এর আগে প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, আমি আপনাকে একটা তালিকা দেবো। সিআরপিসি’র সঙ্গে এর কয়েকটি ধারা সাংঘর্ষিক। এগুলো ঠিক হওয়া উচিত। আমরা আইনের বাইরে বিচার করবো না। আইনের অধীনেই বিচার করবো।’ পরে অ্যাটর্নি জেনারেলের সময় আবেদন মঞ্জুর করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ ১০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। এ নিয়ে কয়েক দফায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালানোর সময় নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১১ মে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত ২০০৯ সালের আইনের ১১টি ধারা ও উপধারাকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ আইনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাও অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ২১ মে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
No comments