হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির মামলায় যুবলীগ নেতা চপল গ্রেপ্তার
সুনামগঞ্জে হাওরে ফসলহানি ও ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা ওরফে চপল। খায়রুল হুদা জেলা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি এবং বাঁধ নির্মাণের অন্যতম ঠিকাদার। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে দুদক। চপল বর্তমানে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) পরিচালক। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটের ছোট ভাই। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য আজ বুধবার দুপুরে খায়রুল হুদার গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করেছেন। গত ২ জুলাই সুনামগঞ্জের হাওরে হাজার কোটি টাকার ফসলহানির ঘটনা ও ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক আহমদ। মামলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৫ কর্মকর্তাসহ বাঁধের কাজের ৪৬ জন ঠিকাদারকে আসামি করা হয়। চপল এই মামলার অন্যতম আসামি। ওই দিনই দুদক ঢাকা থেকে পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের বরখাস্ত হওয়া সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দিন ও বাঁধের কাজের এক ঠিকাদার মো. বাচ্চু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এই দুজন বর্তমানে জেলহাজতে আছেন। দুদকের মামলা ছাড়াও একইভাবে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ৩ আগস্ট সুনামগঞ্জের বিশেষ আদালতে আরেকটি মামলা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল হক। এই মামলায় দুদকের মামলার ৬১ আসামিসহ বাঁধের কাজের ৭৮ জন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলাও তদন্ত করছে দুদক। গত এপ্রিল মাসে সুনামগঞ্জে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ১৫৪টি হাওরের বোরো ফসল তলিয়ে যায়। এতে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬১২ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৯০টি কৃষক পরিবার। এই কৃষকেরা ফসল হারিয়ে এখন নিঃস্ব। হাওরে ফসলডুবির পরই বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি ও চরম গাফিলতির অভিযোগ ওঠে।
No comments