এরপর কী হবে, ভেবে কাঁদছেন বিপ্লব
সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিপ্লব পাল। পা দুটো ব্যান্ডজে মোড়ানো। পায়ে কোনো শক্তি নেই, তবে আছে প্রচণ্ড যন্ত্রণা। আদৌ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন কি না, জীবিকার কী হবে, দুই ছেলেকে মানুষ করতে পারবেন কি না—এসব চিন্তা কুরে কুরে খাচ্ছে মধ্যত্রিশের এই ব্যবসায়ীকে। আজ রোববার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, বিপ্লবের বিছানার পাশে বসে আছেন তাঁর বোন অর্পণা পাল। কী থেকে কী হয়ে গেল, তা-ই নিয়ে দুই ভাইবোন অঝরে কাঁদছিলেন। বিপ্লব বললেন, তাঁর বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখায়। তিনি চিড়া, মুড়ির মোয়া তৈরি করে বিক্রি করেন। সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়ক দিয়ে বাড়ি যেতে হয় তাঁকে। হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে রওনা হয়ে একটু সামনে গিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনীতে আটকে যান তিনি। এরপরও ফাঁক দিয়ে শিববাড়ি পার হওয়ার কথা ভাবতে থাকেন তিনি।
কারণ, একটু এগিয়ে গেলেই বাড়ি যাওয়ার গাড়ি পাবেন। ভাবনামতো হেঁটে রওনা হতে না হতেই সন্ধ্যার দিকে বিস্ফোরণ হয়। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যান। অন্যরা উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে নেয়। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহল ঘিরে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। জঙ্গিবিরোধী এই অভিযানের মধ্যে গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে আতিয়া মহলের প্রায় দেড় শ গজ দূরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সেনাবাহিনী। এই সম্মেলন শেষ হতে না-হতেই আতিয়া মহল থেকে প্রায় আড়াই শ গজ দূরে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এর ৪০-৪৫ মিনিট পর আবারও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। দ্বিতীয় বিস্ফোরণস্থলটি ছিল প্রথম বিস্ফোরণস্থল থেকে শ খানেক গজ দূরে। এই দুটি বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। সাংবাদিক, পুলিশ, র্যাব সদস্যসহ ৫০ জন আহত হয়েছেন।
No comments