ছাত্রলীগকে কী সামলানো যাবে না? -মুক্তিপণ ও চাঁদা দাবি
দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দুটি অঘটন, তবে
অভিযুক্ত ছাত্রসংগঠন একটিই। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে দুটি
ঘটনা ঘটেছে, তা দুর্বৃত্তপনা এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যথারীতি সরকারি দলের
ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ও কর্মী। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন তাদের
ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অপরাধ ও অপকর্ম করবেন—এটাই যে নীতি হয়ে
দাঁড়িয়েছে!
সরকারি দলের ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা কেন অপরাধ ও অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন, তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, তাঁদের ক্ষেত্রে আইন নিজের মতো করে চলে না, যা খুশি তা করে পার পাওয়া যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে এক কলেজছাত্রকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাই স্বাভাবিকভাবেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
ইমরান হোসেন ছাত্রলীগের কর্মী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী, কিন্তু থাকতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে। ছাত্রলীগের উপপরিবেশবিষয়ক সম্পাদকের রুম ব্যবহার করতেন তিনি। এই অনিয়ম সম্ভব হয়েছে, কারণ দুজনেই ছাত্রলীগ করেন। এই রুম ব্যবহার করা হয়েছে এক কলেজছাত্রকে আটকে রাখা ও মুক্তিপণ দাবির কাজে। আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক সানোয়ার হোসেন এক বিশ্ববিদ্যালয়-কর্মচারীর কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি বা টেন্ডারবাজির অভিযোগের পাহাড় জমেছে। তাঁদের সামাল দেবে কে? আইন অনুযায়ী অভিযুক্তরা বিচারের মুখোমুখি হলে বা সংগঠন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটত। সরকারি দলের ছাত্রসংগঠন অপরাধী তৈরির সংগঠন হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে, নাকি রাজনীতি বা আদর্শ নিয়ে চলবে, সেটা সত্যিই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
No comments