বঙ্গোপসাগরে সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত -ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সম্পাদকীয়
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমুদ্রসীমা নিয়ে নতুন করে সীমানা নির্ধারণ করেছে দ্য পারমানেন্ট কোর্ট অব আরবিট্রেশন (পিসিএ)। সমুদ্রে অনুসন্ধান কাজে দু’দেশের জন্যই দীর্ঘদিনের একটি প্রতিবন্ধকতা ছিল। সেখানে নতুন তেল ক্ষেত্রের সন্ধান মিলেছে। সেখানে রয়েছে বিপুল পরিমাণের তেল। কিন্তু ওই বিরোধের জন্য জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোন সংস্থা সেখানে তেল উত্তোলন প্রক্রিয়ায় অনুৎসাহ দেখিয়েছে। দীর্ঘদিনের এই বিরোধের অবসান হয়েছে ওই রায়ে। তবে এতে দু’পক্ষেরই প্রত্যাশা পূরণ হয় নি। তবে দু’পক্ষকেই উল্লসিত হওয়ার মতো কিছু দেয়া হয়েছে এ রায়ে। ২০১২ সালে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে একই রকম বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে পিসিএ। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে নৌ-সীমানা নিয়ে বিরোধের অবসান আঞ্চলিক সহযোগিতার একটি নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। দু’পক্ষই উল্লেখযোগ্য অধিকার অর্জন করেছে। এতে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বড় ধরনের একটি দ্বিপক্ষীয় বিরোধের ইতি ঘটেছে। এখন অন্য দু’টি বড় ইস্যু অনিষ্পন্ন রয়েছে। তার শান্তিপূর্ণ সমাধান দরকার। সে ইস্যু দু’টি হলো- সীমান্ত চুক্তি ও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি। নিকট প্রতিবেশীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কি পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেন তার মধ্য দিয়ে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে। ভারতের যথার্থ অবস্থান হলো- সব দেশকেই সমুদ্র ব্যবহারে আন্তর্জাতিক আইনকে অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে। ভারত মহাসাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ বঙ্গোপসাগরকে পেইচিংয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আগ্রহের স্থান করে নিয়েছে। এর কৌশলগত পরিণাম কি হতে পারে তা অবজ্ঞা করতে পারে না নয়া দিল্লি। বছরের পর মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিবাদ মিটিয়ে ফেলেছে ভারত। এখন পিসিএর রায়ে বাংলাদেশের সঙ্গে এমন বিবাদের নিষ্পত্তি ঘটলো। দক্ষিণ ভারত সাগরে এরই মধ্যে মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে নৌ-সীমানা নিয়ে ত্রিজাতিক সহযোগিতামূলক কাজ শুরু করেছে দিল্লি। এই সহযোগিতা বিস্তৃত হতে পারে মৌরিতানিয়া ও সিসিলি পর্যন্ত। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে একই রকম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নয়া দিল্লির অগ্রাধিকারে থাকা উচিত।
No comments