‘বাবা, কৃষক হয়ো না’
‘কৃষক হয়ো না।’ নিজের ছেলের উদ্দেশে এটিই ছিল তাঁর শেষ কথা। এ কথা বলার কিছুক্ষণ পরই আত্মহত্যা করেন ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের ওই কৃষক। খবর এনডিটিভির। মেদাক জেলার রায়াভারাম গ্রামের একটি বিদ্যালয়ে পড়ে সাত বছর বয়সী ভামশি। সেখানে তিন সপ্তাহ আগে তাকে দেখতে যান বাবা। তিনি ছেলেকে একটি চায়ের দোকানে নিয়ে যান। বনরুটি ও চা খাওয়ানোর পর ভামশির হাতে পাঁচ রুপি দেন এবং খুব ভালো করে পড়াশোনা করতে বলেন। তারপর খুব জোর দিয়ে বলেন, বাবা, কখনো কৃষক হয়ো না। ফেরার সময় বিদ্যালয়ের ফটকে তাদের সঙ্গে দেখা হয় ভামশির শিক্ষক কৃষ্ণর।তিনি বলেন, ভামশির বাবা সেদিন আমার সঙ্গে কুশলবিনিময় করেন এবং ছেলের পড়াশোনা ঠিকমতো হচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে বলেন। তারপর ছেলের কাছ থেকে বিদায় নেন। মাত্র আধা ঘণ্টা পরেই খবর এল, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। পার্শ্ববর্তী থিমাকাপাল্লি গ্রামের নারী ভূলক্ষ্মীর ছেলে শ্রীরামুলু হায়দরাবাদে চলে যাওয়ায় তিনি খুশি। ছেলের সঙ্গে মাসের পর মাস দেখা না হলেও তাঁর দুঃখ নেই। ভূলক্ষ্মীর স্বামী ছিলেন কৃষক। তিনি গত ডিসেম্বরে বিষপানে আত্মহত্যা করেন। তাঁর ছোট ছেলে রবিও দূরে কোথাও চলে যেতে চান। কিন্তু পারিবারিক দেনা বেশি হওয়ায় এখনই যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমরা যা-ই উৎপাদন করি, লোকসান হয়। ঋণ শুধু বাড়তেই থাকে, কখনো কমে না।’ সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, জীবিকা হিসেবে কৃষিকাজ এখন অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে।স্কুলশিক্ষক পুলিরাজু বলেন, কোনো মা-বাবাই এখন চান না, তাঁদের সন্তান কৃষক হোক। কারণ একজন শ্রমিকের উপার্জনও এখন কৃষকের চেয়ে বেশি। আর কৃষকদের আজীবন ঋণের জালে বন্দী থাকতে হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভারতে অদূর ভবিষ্যতে খাদ্যসংকট দেখা দেবে৷
No comments