রিসার্চ করলে আমি বেশি টাকা পেতাম : পাওলি
আলোচিত অভিনেত্রী পাওলি দামের একটি
কথোপকথন প্রকাশ করেছে ‘আমার আনন্দবাজার’ পত্রিকা। সেই কথোপকথনটি
বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল এখানে...
আপনার পায়ে ড্রেসিং চলছে! কেন পায়ে আবার কী হল?
দরজায় লেগে পায়ের নখটা উঠে গেছে। ভোগাচ্ছে খুব। ওটাই ড্রেসিং করছিলাম।
এই পা নিয়ে মুম্বাই ছুটলেন! অবশ্য এখন এটাই তো সব থেকে বড় ধাঁধাঁ যে পাওলি কখন কলকাতায় আর কখন মুম্বাইতে!
(খুব জোরে হেসে) আরে আমি কাজ অনুযায়ীই মুম্বাই-কলকাতা করি। আর শুধু এই দুটো জায়গা কেন! কাজ থাকলে আমি গোয়াতেও থাকতে পারি।
আপনি কি মুম্বাইতে একাই থাকছেন? না কি মা-বাবাও আছেন আপনার সঙ্গে?
না না, বাবা-ভাই কেন আমার সঙ্গে মুম্বাই দৌড়াবে! ওঁদের নিজেদের কাজ আছে। মা মাঝে মাঝে আমার সঙ্গে থাকেন।
একা, নির্ঝঞ্ঝাট মেয়ে! তবু ‘হইচই’ তো আপনার পিছু ছাড়ছে না দেখছি!
হা...হা...হা... ‘হইচই’ খুব দারুণ ছবি হবে জানেন। টগবগে তারুণ্যে ভরপুর ছবি। ইয়ং জেনারেশনের ভেতর একটা উদ্যম কাজ করে না, সেই উদ্যমটারই গল্প বলেছেন দেবারতি।
আপনি ছবিতে নতুন করে ‘হইচই’-টা কী বাঁধালেন বলুন তো?
আমি এখানে পিয়াল। একজন ডেডিকেটেড নাট্যকর্মী। আমি, প্রিয়াঙ্কা, রাহুল সবাই একসঙ্গে নাটক করি। কিন্তু আমি চাই নিজের একটা দল গড়তে। একদিন দল ভেঙে বেরিয়ে নিজের একটা দলও গড়ি। নাম দিই ‘হইচই’। আর এই দলটা নিয়েই যত হইচই। আমি তো নাটক করতাম, শুটিং-এর সময় ওই দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ে যাচ্ছিল।
আপনি নাটক করতেন!
রীতিমতো। ক্লাস ইলেভেন-টুয়েল্ভ অবধি চুটিয়ে নাটক করেছি। শৈলেন ঘোষের ‘শিশুরঙ্গন’-এ আমি নিয়মিত নাটক করতাম। শো করতে দিল্লি-মুম্বাইইতেও যেতাম। তারপর লেখাপড়ার চাপে আর কনটিনিউ করতে পারেনি। আমি থাঙ্কমণি কুট্টির কাছে অনেক দিন ভরতনাট্যমও শিখেছি। মা আবার আমাকে গানের ক্লাসেও ভর্তি করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান গাওয়াটা আমার ঠিক পোষাত না। তাই ওটা বেশিদিন করিনি।
নাটকটা একদম ছেড়ে দিলেন কেন?
সময় কোথায় পেলাম! কেমিস্ট্রিতে মাস্টার্স করার পরই তো টেলিভিশনে ঢুকে পরলাম। সেখান থেকে সিনেমা। খুব ইচ্ছে ছিল রিসার্চ করার। সেটাও তো পারলাম না। আর সময় দিতে না-পারলে কোনও কিছুই ঠিকভাবে করা যায় না।
এ সময়ের নাটকের খবরাখবর রাখেন?
নিশ্চয়ই। সুযোগ পেলেই নাটক দেখতে যাই।
শেষ কী নাটক দেখেছেন?
কৌশিক সেন-এর `ম্যাকবেথ`।
কৌশিক সেন-ব্রাত্য বসুরা কোনও দিন আপনাকে ওঁদের দলে নাটক করার জন্য ডাকেননি?
হুমম, লালদা (সুমন মুখোপাধ্যায়) আমাকে ‘বিসর্জন’ করতে বলেছিল। কিন্তু সময় দিতে পারিনি। কৌশিকদাও বলেছিল। সময় দিতে পারিনি। টানা যে রিহার্সাল করব, সে সময়টাই তো আমার নেই।
নাটক করতে ইচ্ছে করে না..?
খুব ইচ্ছে করে। করব তো বটেই। হাতের কাজগুলো একটু গুছিয়ে নিই...
এই বছরটা আপনার নিঃশ্বাস ফেলারও সময় নেই... ‘অজানা বাতাস’, ‘হারকিউলিস’, ‘হোয়াইট মিসচিফ’... একটা কোঙ্কনি ছবি, হিন্দি ছবি তো আছেই... কেন বলুন তো হঠাৎ এত ছবি করা শুরু করলেন? মুম্বাইয়ের ফ্ল্যাটের ইএমআই দিতে হচ্ছে বলে?
(জোরে হেসে) ধুস! বাংলা ছবি করে কত টাকা পাওয়া যায় সে তো আপনি জানেন! রির্সাচ করলে আমি এর থেকে বেশি টাকা পেতাম। পাওলি ফ্ল্যাটের ইএমআই দিতে অভিনয় করতে আসেনি। কোনও দিন করবেও না। অভিনয়টা আমার নেশা। স্ক্রীপ্টগুলো শুনে ভাল লেগেছে বলেই সময় বের করে ছবিগুলো আমি করেছি। আপনারা দেখলেই বুঝবেন।
বিগ বস দেখছেন; বিক্রম তো ওখানেই?
না, সময় কোথায় পাচ্ছি!
আপনার বন্ধু বিক্রমকে যতখানি চেনেন, তাতে কি মনে হচ্ছে বিক্রমের টিঁকে যাওয়া উচিৎ?
বিক্রম যাতে টিঁকে যায়, আমি তো সেটাই চাইব।
বিগ বসের জেলখানা থেকে বেরুলে বিক্রমকে একদিন আপনার মুম্বইয়ের বাড়িতে নেমন্তন্ন করে খাওয়াবেন না?
সে তো ওকে খাওয়াতেই পারি। কিন্তু আমি যদি সেই সময় কলকাতায় থাকি! ও কবে বেরুবে, জানি না তো! তবে কলকাতার বাড়িতেও ওকে ডেকে খাওয়াতে পারি।
শেষ প্রশ্ন। সত্যি বলতে হবে কিন্তু...
কেন? এতক্ষণ যা বললাম সেগুলো কোনওটা মিথ্যে নয় কিন্তু...
পাওলি কি প্রেম করছে?
করছি না আপনাকে কে বলল?
করছেন! কে বলুন তাহলে?
আমার সিনেমা, আমার অভিনয়, আমার কাজ... সবার সঙ্গে আমি প্রেম করি।
এটা একটা উত্তর হল! জানতাম এরকম একটা কিছু বলবেন...
আপনি কি এর বাইরে কিছু শুনতে চাইছেন?
নিশ্চয়ই...
তাহলে তো আমার কিছু করার নেই। আমি তো বলেই দিলাম।
ছাড়ুন, কবে কলকাতায় আসছেন? সেটাও কি আপনার কাছেও ধাঁধাঁ?
(হাসি) জুলাইয়ের শেষে-এ তো ফেরার কথা। তবে ‘হইচই’-এর প্রিমিয়ারে একদিনের জন্য কলকাতা যেতে পারি। ঠিক নেই কিছুই।
No comments