পাকিস্তানে ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতি’ নিয়ে সেনা কর্মকর্তাদের বৈঠক
ওসামা বিন লাদেন হত্যার ঘটনা নিয়ে
অ্যাবোটাবাদ কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরদিন
পাকিস্তানের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। গত মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর
সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা
হয়। ২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন বাহিনী কমান্ডো
অভিযান চালিয়ে আল-কায়েদার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে।
লাদেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রের কাছে বাড়িতে দীর্ঘ
সময় ধরে আত্মগোপন করে ছিলেন। পাকিস্তানকে না জানিয়েই দেশটির ভেতর ঢুকে
যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে হত্যার অভিযান চালায়। ঘটনাটি পাকিস্তানের সামরিক
বাহিনীর দর্পে আঘাত হানে। লাদেন হত্যার পর লোকজন এ কথা বলা শুরু করে যে
দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে থাকা আল-কায়েদাপ্রধানের অবস্থান নির্ণয়ে
পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ব্যর্থ। তারা ওই ‘বৈরী’
মার্কিন অভিযান আঁচ করতে বা তা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে। সোমবার গণমাধ্যমে
ফাঁস হওয়া অ্যাবোটাবাদ কমিশনের প্রতিবেদনটিতে প্রচলিত ওই কথার কম-বেশি
অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনটি ফাঁস হওয়ার পর অনুষ্ঠিত সেনা
কর্মকর্তাদের বৈঠক নিয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতি
দেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকটি ছিল নিয়মিত মাসিক বৈঠকের অংশ। এতে সামরিক
বাহিনীর পেশাগত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তবে একজন সেনা
কর্মকর্তা বলেছেন, বৈঠকে কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে তা
মূল আলোচ্য ছিল না। জেনারেলরা ওই গোপন প্রতিবেদন কীভাবে গণমাধ্যমের কাছে
ফাঁস হলো সে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। প্রতিবেদনে আল-কায়েদা বা ওই মার্কিন
কমান্ডো অভিযানে কোনো পাকিস্তানি সেনাসদস্যের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কিছু
উল্লেখ না থাকায় বৈঠকে কেউ কেউ স্বস্তি প্রকাশ করেন। লাদেন হত্যার ঘটনার
পাঁচ সপ্তাহ পর পাকিস্তানের সেনা কমান্ডারদের এক বৈঠকে তাঁদের বিরুদ্ধে সব
সমালোচনা উড়িয়ে দেওয়া হয়। জেনারেলরা সমালোচকদের এই বলে অভিযুক্ত করেন
যে, তাঁরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চিরন্তন পক্ষপাতদুষ্টতা থেকেই
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
অ্যাবোটাবাদ কমিশনের প্রতিবেদনে ওই মার্কিন কমান্ডো অভিযানকে পাকিস্তানের
জন্য এক জাতীয় অবমাননাকর ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়। লাদেনর অবস্থান
নির্ণয়ে পাকিস্তান সরকারের ব্যর্থতাকে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর সবচেয়ে
অপমানজনক ঘটনা বলে আখ্যা দেয় কমিশন। ডন।
No comments