রাজনৈতিক দুর্নীতিই প্রধান সমস্যা টিআইয়ের জরিপ
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের
‘গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটার ২০১২’ শীর্ষক বৈশ্বিক জরিপের মোদ্দা কথাটি
হচ্ছে, বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে। সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হলো
রাজনৈতিক দল—শতকরা ৯৩ ভাগ মানুষের এই ধারণা থেকে অনুধাবন করা যায়
দুর্নীতির ব্যাপকতার মূল কারণ।
মঙ্গলবার টিআইবির সংবাদ
সম্মেলনে বৈশ্বিক জরিপ প্রকাশের সময় প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক
দলগুলোকে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিপ্রবণ হিসেবে তুলে ধরার মধ্য দিয়ে এ দেশে
বিরাজনীতিকীকরণের প্রক্রিয়াকে উসকে দেওয়া হচ্ছে কি না। টিআইবির নির্বাহী
পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও জনমুখী, আরও
শক্তিশালী করাই ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের উদ্দেশ্য। আমরা মনে করি,
জনসাধারণ রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে কী ধারণা পোষণ করে, তা তুলে ধরার মধ্যেই
টিআইয়ের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট। কিন্তু বছরের পর বছর কমবেশি একই চিত্র
প্রকাশের কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন তেমন লক্ষ করা যায়
না।
টিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্নীতির শীর্ষে আরও দুটি খাত আমাদের পুলিশ ও বিচার বিভাগ। এ তথ্যের তাৎপর্য হলো, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অন্যতম মূল ভিত্তি যে আইনের শাসন, তা এ দেশে অত্যন্ত দুর্বল। প্রকৃত বিবেচনায়, এতে আমাদের রাষ্ট্র জনমুখী চরিত্র নিয়ে শক্ত পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগই পাচ্ছে না। রাজনৈতিক দল, যার হাতে থাকে নির্বাহী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব, তার সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তথা পুলিশ এবং অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী বিচার বিভাগ—এই তিন ক্ষেত্রের দুর্নীতির শীর্ষে অবস্থান আসলে আমাদের একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক, জনমুখী রাষ্ট্রের ধারণা ও আকাঙ্ক্ষাকে পরিহাসের বিষয়ে পরিণত করেছে। এর প্রভাবে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে রাষ্ট্র ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। টিআইয়ের জরিপ প্রতিবেদনে আইন সভা, সরকারি প্রশাসন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, গণমাধ্যম, শিক্ষা, এনজিও, সামরিক বাহিনী, এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও দুর্নীতির উল্লেখ করা হয়েছে।
মজার বিষয় হচ্ছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাই সোচ্চার। এ দেশে এমন কেউ নেই যিনি দুর্নীতি সমর্থন করেন। দুর্নীতি দমনের পক্ষে সবচেয়ে বেশি কথা বলেন রাজনৈতিক দলগুলো ও তাদের নেতারা। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও নির্বাচনের আগে নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি দমন হবে তাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে বরাবরের মতো তারাও সে প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে। প্রতিবছর মন্ত্রী-সাংসদদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার কথা ছিল, তা-ও এখন বিস্মৃত বিষয়। জাতীয় দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতি দমনে ব্যর্থ। টিআইয়ের প্রতিবেদনে দুর্নীতি দমনের জন্য যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলো বহুল উচ্চারিত; কিন্তু কোনো সরকারই সেসব সুপারিশ বাস্তবায়নে আন্তরিক উদ্যোগ নেয় না।
যে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে অনৈতিক প্রবণতা প্রকট, সেখানে দুর্নীতি নেই এমন ক্ষেত্র খুঁজে পাওয়া দুরূহ। এর অর্থ এটা নয় যে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো বিকল্প আছে। বহুবিস্তৃত দুর্নীতির নিরাময় সম্ভব স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক, নৈতিকতাপূর্ণ ও জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমেই। এমন ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকেই।
টিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্নীতির শীর্ষে আরও দুটি খাত আমাদের পুলিশ ও বিচার বিভাগ। এ তথ্যের তাৎপর্য হলো, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অন্যতম মূল ভিত্তি যে আইনের শাসন, তা এ দেশে অত্যন্ত দুর্বল। প্রকৃত বিবেচনায়, এতে আমাদের রাষ্ট্র জনমুখী চরিত্র নিয়ে শক্ত পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগই পাচ্ছে না। রাজনৈতিক দল, যার হাতে থাকে নির্বাহী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব, তার সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তথা পুলিশ এবং অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী বিচার বিভাগ—এই তিন ক্ষেত্রের দুর্নীতির শীর্ষে অবস্থান আসলে আমাদের একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক, জনমুখী রাষ্ট্রের ধারণা ও আকাঙ্ক্ষাকে পরিহাসের বিষয়ে পরিণত করেছে। এর প্রভাবে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে রাষ্ট্র ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। টিআইয়ের জরিপ প্রতিবেদনে আইন সভা, সরকারি প্রশাসন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, গণমাধ্যম, শিক্ষা, এনজিও, সামরিক বাহিনী, এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও দুর্নীতির উল্লেখ করা হয়েছে।
মজার বিষয় হচ্ছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাই সোচ্চার। এ দেশে এমন কেউ নেই যিনি দুর্নীতি সমর্থন করেন। দুর্নীতি দমনের পক্ষে সবচেয়ে বেশি কথা বলেন রাজনৈতিক দলগুলো ও তাদের নেতারা। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও নির্বাচনের আগে নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি দমন হবে তাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে বরাবরের মতো তারাও সে প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে। প্রতিবছর মন্ত্রী-সাংসদদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার কথা ছিল, তা-ও এখন বিস্মৃত বিষয়। জাতীয় দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতি দমনে ব্যর্থ। টিআইয়ের প্রতিবেদনে দুর্নীতি দমনের জন্য যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলো বহুল উচ্চারিত; কিন্তু কোনো সরকারই সেসব সুপারিশ বাস্তবায়নে আন্তরিক উদ্যোগ নেয় না।
যে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে অনৈতিক প্রবণতা প্রকট, সেখানে দুর্নীতি নেই এমন ক্ষেত্র খুঁজে পাওয়া দুরূহ। এর অর্থ এটা নয় যে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো বিকল্প আছে। বহুবিস্তৃত দুর্নীতির নিরাময় সম্ভব স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক, নৈতিকতাপূর্ণ ও জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমেই। এমন ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকেই।
No comments