দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখুন, সংসদে এসে কথা বলুন- সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগ
যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ছেড়ে বিএনপিকে সংসদে এসে দায়িত্বশীল বিরোধীদলের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ বলেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান সংবিধানের আলোকে কিভাবে অবাধ,
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা যায় তা নিয়ে কোন প্রস্তাব থাকলে সংসদে এসে উত্থাপন করুন। মঙ্গলবার বিকেলে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে ভাষণ নিয়ে বিএনপি নেতাদের নেতিবাচক মন্তব্যের জবাব দিতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের মানবপ্রাচীর কর্মসূচী প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, দেড় কোটি মানুষের ঢাকা শহরে কয়েক হাজার মানুষ নিয়ে মানবপ্রাচীর করলেই প্রমাণ হয় না যে জনমত তাদের সঙ্গে রয়েছে। মানবপ্রাচীরে বিএনপির চেয়ে জামায়াতের লোক বেশি ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।‘প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ জনমতের প্রতি পরিহাস’ মর্মে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের বক্তব্যের জবাবে বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- যখন বিশ্বব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছে, তখন ঈর্ষান্বিত হয়ে কেবল বিরোধিতার কারণেই অযৌক্তিকভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে বিএনপি নেতারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
বাম দলগুলোর ডাকা বুধবারের হরতাল প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। বাম দলগুলোকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে মনে করি। দলীয় কারণে তারা হরতাল দিতে পারে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেউ আইনের উর্ধে নন, তিনি যত বড় মাপের নেতাই হোন না কেন।
বিএনপির সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নেয়া হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিরোধীদলকে সংলাপে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপিকেও এক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের সঙ্গে বর্তমান সরকারের আমলের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরায় তাদের (বিএনপি) ব্যর্থতার চিত্র জনগণের সামনে উন্মোচিত হয়েছে। এতে বিএনপি নেতাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিরোধীদল দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা ক্রমাগতভাবে সংসদ বর্জন করে চলছে কিন্তু সংসদ সদস্য হিসেবে প্রাপ্য সব সুযোগ-সুবিধাই গ্রহণ করছে। রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা রক্ষার জন্য বিরোধীদলীয় নেতাসহ তারা সবাই সংসদে পদ রক্ষার জন্য হাজিরা দিয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনি দেশের বাইরে রয়েছেন। দলের অধিকাংশ নেতাও চট্টগ্রামে ১৪ দলের জনসভায় যোগ দিতে গেছেন। এ কারণে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাউকেই দেখা যায়নি। হাতেগোনা কয়েক নেতার ভিড়ে নিষ্প্রভ মনে হয়েছে সংবাদ সম্মেলনকে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এমপি, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম ও সুজিত রায় নন্দী।
No comments