সাদামাটা আয়োজনে শেষ হলো জাতীয় কবিতা উসব- সংস্কৃতি সংবাদ
প্রায় সকল বিবেচনায় পিছিয়ে থেকেই শেষ হলো জাতীয় কবিতা উৎসব। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রৰা করার বদলে নিয়ম রৰায় বেশি ব্যসত্ম ছিল আয়োজক সংগঠন জাতীয় কবিতা পরিষদ।
আর তাই একটি অনুকূল সময়েও উৎসবের আয়ু কমিয়ে মাত্র দুই দিন করা হয়। বাংলা ছাড়া অন্য কোন ভাষার কবি এবার যোগ দেননি। প্রবাসী কবিদের সংখ্যাটিও ছিল একেবারেই হাতেগোনা। দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার উৎসবে অনুষ্ঠিত হয় দু'টি সেমিনার। প্রথম সেমিনারের বিষয় ছিল_ ঋণ অথবা অনুকরণ : অধমর্ণদের কথা। এ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। কবি মুহম্মদ নূরম্নল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও আলোচনা করেন শামসুজ্জামান খান, বিশ্বজিৎ ঘোষ, অমিতাভ চৌধুরী, কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, নূরম্নল করিম নাসিম ও ফরিদ আহমেদ। অপর সেমিনারটির বিষয় ছিল_ কবিতার নতুন দিন, নতুন দিনের কবিতা। এ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাসুদুজ্জামান। বোরহানউদ্দীন খান জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে এতে আরও আলোচনা করেন সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত, রফিকুলস্নাহ খান, মফিদুল হক, নিশাত খান ও সৌমিত্র শেখর। বিকেলে কবি শিহাব সরকারের সভাপতিত্বে শুরম্ন হয় কবিতা পাঠ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ৭৮ জন নিজেদের লেখা কবিতা পাঠ করেন। দ্বিতীয় পর্বের কবিতা পাঠে সভাপতিত্ব করেন কাজী রোজী। এ পর্বেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগতরা নিজেদের লেখা কবিতা পড়ে শোনান। তৃতীয় ও সর্বশেষ কবিতা পাঠের আসরটিতে দেখা যায় কবি নির্মলেন্দু গুণকে। এ পর্বের সভাপতিত্ব করেন তিনি। সান্ধ্য এ আয়োজনে আমন্ত্রিত কবিসহ আয়োজক পরিষদের সদস্যরা কবিতা পাঠ করেন।অবশ্য উৎসবে পঠিত কবিতার মান নিয়ে প্রশ্ন ছিল এবারও। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উৎসবের আহ্বায়ক আসাদ চৌধুরী সরাসরি কোন উত্তর না দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কবিরা কি ভাবছেন, কী নিয়ে ভাবছেন তা এ উৎসবের মাধ্যমে জানার সুযোগ হয়। তাঁদের পাঠ করা কবিতা আমাদের এ সুযোগ করে দেয়। কবিতা অনেক রকমের হতে পারে মনত্মব্য করে তিনি বলেন, শিল্পমানের প্রশ্নটি আলাদা প্রসঙ্গ। কিন্তু কবিরা কবিতাগুলো যে দরদ দিয়ে লিখছেন এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। অবশ্য কোন কোন কবি অভিযোগ করে বলেছেন, জাতীয় কবিতা পরিষদের মঞ্চ এখন আর প্রকৃত কবিদের নেই। কবিতা পরিষদের বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে এমন অকবিরা এটি দখল করে নিয়েছেন। অনেকের কবিতা কেটেছেঁটে মঞ্চে পড়ার জন্য দেয়া হয়েছে বলেও এদিন অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে বিকেলে এক মহিলা কবিকে তীব্র আপত্তি জানাতেও দেখা যায়।
উৎসবে ভিন্ন ভাষাভাষী কবির অনুপস্থিত থাকার বিষয়টিও আলোচিত হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আসলাম সানী নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি।
উৎসবে বাংলাদেশের বাইরে একমাত্র দেশ হিসেবে যোগ দিয়েছে ভারত। ১২ জনের মতো কবি আসে দেশটি থেকে। প্রবাসী বাংলাদেশী কবির সংখ্যাও এবার সবচেয়ে কম ছিল। বইমেলাকে সামনে রেখে দেশে আসা এসব কবির মধ্য থেকে সাকল্যে ১০ জনের মতো কবি উৎসবে যোগ দেন।
তবে প্রত্যনত্ম অঞ্চলের অনেক নবীন কবি ঢাকায় এসে কবিতা পাঠ করতে পারায় দারম্নণ খুশি ছিলেন। তেমনই একজন কুষ্টিয়ার আব্দুস ছালাম। নিজেকে মহাবিশ্বের কবি উলেস্নখ করে তিনি বলেন, আমি ১৫শ' কবিতা লিখেছি। কিন্তু প্রকাশিত হলাম আজ। অনেকের মতে, এমন নবীন কবিকে প্রকাশ হতে দেয়ার সুযোগ করে দেয়াই হতে পারে ুএবারের উৎসবের একমাত্র সাফল্য।
No comments