পলাতক খুনীদের দ্রম্নত ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা হবে- সংসদে আইনমন্ত্রী
বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে মৃতু্যদ-প্রাপ্ত পলাতক খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করা হবে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অধ্যৰ মতিউর রহমানের প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ এমন দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ৩৪ বছর অপেৰা করতে হলেও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর করার মাধ্যমে জাতি আজ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। জাতির জনকের কাছে জাতির ঋণ কোন কিছু দিয়ে পরিশোধ করা যাবে না, তবুও আলস্নাহতায়ালা দীর্ঘদিন পরে হলেও ওই ঋণের কিঞ্চিত অংশ তাঁর হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর করার মাধ্যমে পরিশোধ করার সুযোগ দিয়েছেন।সংসদ সদস্য তহুরা আলীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, সারাদেশে জমির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধানত্মের ব্যাপারে আপত্তি উঠেছে। জমির মূল্য নির্ধারণের জন্য অর্থমন্ত্রণালয় থেকে গঠিত একটি কমিটি সারাদেশে অনুসন্ধান চালিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করেছে। রিপোর্টের ভিত্তিতে দ্রম্নতই জমির বর্ধিত মূল্য কমিয়ে আনা হবে।
সরকারী দলের সংসদ সদস্য কেএইচ রশীদুজ্জামানের প্রশ্নোত্তরে মন্ত্রী জানান, দ্রম্নত মামলা নিষ্পত্তির জন্য ইতোমধ্যে ২০৯ সহকারী জজ নিয়োগ করা হয়েছে। একই পদে আরও এক শ' জনকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি জানান, দেওয়ানি মামলার েেত্র বিদ্যমান বিচার ব্যবস্থার পাশাপাশি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। বিকল্প পদ্ধতিতে বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়টি বর্তমানে বাধ্যতামূলক নয়। এ পদ্ধতি বাধ্যতামূলকভাবে প্রয়োগের জন্য আইন সংশোধনের চিনত্মাভাবনা করা হচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ১৪ মাসে বর্তমান সরকার নয়টি বিশেষ আইন তৈরি করেছে। এছাড়া পাঁচটি বিশেষ আইনের সংশোধনী আনা হয়েছে। বিশেষ আইনের মধ্যে রয়েছে-মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০০৯, সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯, তথ্য অধিকার আইন ২০০৯, ভোক্তা অধিকার সংরণ আইন ২০০৯, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯, মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯, জাতির পিতার পরিবার সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন ২০০৯, মৎস্য খাদ্য ও পশু খাদ্য আইন ২০১০ ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০। এছাড়া যেসব বিশেষ আইনের সংশোধনী আনা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে_ বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক (এ্যামেন্ডমেন্ট) এ্যাক্ট ২০০৯, বাংলাদেশ লজ (রিভিশন এ্যান্ড ডিকেয়ারেশন) (এ্যামেন্ডমেন্ট) এ্যাক্ট ২০০৯, আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রম্নত বিচার) (সংশোধন) আইন ২০০৯, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন ২০০৯ ও ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইবু্যনালস) (এ্যামেন্ডমেন্ট) এ্যাক্ট ২০০৯।
এক লাখ ৪৫ হাজার পদ শূন্য
দেশে সরকারী বিভিন্ন বিভাগে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীতে মোট এক লাখ ৪৫ হাজার পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে ৩য় শ্রেণীতে ৯৮ হাজার ৬৯ এবং ৪র্থ শ্রেণীতে মোট শূন্যপদের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৯শ' ৩১টি। সরকারী দলের সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের অপর এক প্রশ্নের জবাবে সংসদকার্যে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ তথ্য দেন।
তিনি জানান, এসব শূন্যপদ পূরণের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/অধিদফতর/পরিদফতর/স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/কর্পোরেশন বিভিন্ন সময় ছাড়পত্র চেয়ে থাকে। বিভিন্ন বিভাগের চাহিদা মোতাবেক সরকারী নীতিমালার আলোকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয় হতে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়। এসব শূন্যপদ পূরণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। মোহাম্মদ শাহ আলমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লৰ্য বাসত্মবায়নে জেলা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে মন্ত্রণালয়/বিভাগে সরাসরি ই- গবর্নেন্স স্থাপনের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। এ জন্য সংস্থাপন মন্ত্রণালয় গত বছর ১৮ আগস্ট নির্বাচন কমিশন সচিবালয় হতে সংগৃহীত ৬৬৫ ল্যাপটপ দেশের জেলা উপজেলা প্রশাসনে বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিটি ল্যাপটপের সাথে একটি করে ওয়েবক্যাম, মোবাইল ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি, স্ক্যানার প্রদান করা হয়েছে। সকল বিভাগীয় কমিশনার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ই-মেইলে একাউন্ট ও গ্রম্নপ ই-মেইল প্রদান করা হয়েছে।
সকল বিভাগীয় কমিশনার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ই-মেইল ওয়েবসাইট, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট ও স্ক্যানারের ব্যবহারের ওপর প্রশিৰণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া সকল মন্ত্রণালয়ে এবং এর অধীনস্থ অফিসসমূহে ডিজিটাল পদ্ধতির নথি নম্বর ব্যবহার করার নির্দেশ প্রদান করা হবে।
No comments