জলকামানের মুখে এবার ফুটপাথে অবস্থান নেবেন শিক্ষকরা- এমপিওভুক্তির দাবি
এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছেন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে শিক্ষকরা রাস্তায় নেমে পড়লে পুলিশ তাঁদের ওপর চড়াও হয়। পুলিশ শিক্ষকদের ওপর পিপার স্প্রে ও জলকামান থেকে গরম পানি ছিটিয়ে সরিয়ে দেয়।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ২ শিক্ষককে ধ্বংসাত্মক কর্মকা- থেকে বিরত রাখতে ধরে অন্যত্র সরিয়ে দেয়। এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষকরা ফুটপাথেই আন্দোলন কর্মসূচী চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানাধীন সোবহানবাগ মসজিদের সামনের রাস্তায় ৫ শতাধিক বেসরকারী মাধ্যমিক শিক্ষক অবস্থান নেন। তাঁদের দাবি এমপিওভুক্ত করতে হবে। এক পর্যায়ে শিক্ষকরা রাস্তায় নেমে পড়েন। এ সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ শিক্ষকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শিক্ষকরা দাবি আদায় না করে সরে যাবে না বলে জানান। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পিপার স্প্রে ও জলকামান থেকে গরম পানি ছেটায়। এতে শিক্ষকরা অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হন। এ সময় পুলিশ আবুল কালাম ও নূহ ইসলাম নামে দুই শিক্ষককে জোরপূর্বক অন্যত্র নিয়ে যায়। আবুল কালাম নোয়াখালীর সুবর্ণচরের কেরামতনগর জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর নূহ ইসলাম রাজশাহীর চারঘাটের সিরাজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।দুই শিক্ষককে আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মঞ্জুরুল কবির জনকণ্ঠকে জানান, কোন শিক্ষককে আটক করা হয়নি। শুধু ধ্বংসাত্মক কর্মকা- থেকে বিরত রাখতে ওই দুই শিক্ষককে অন্যত্র সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তাঁদের আটক বা তাদের সম্মানহানি হয় এমন কোন কর্মকা- পরিচালিত হয়নি। অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সময় শিক্ষকদের মাঝে দুই শিক্ষককে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়ে। আসলে তাঁদের আটক বা গ্রেফতার কোনটিই করা হয়নি।
পরে শিক্ষকরা ডিএমপির রমনা বিভাগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকার এসে অবস্থান নেন। পিপার স্প্রে সম্পর্কে রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, টিয়ারশেল ব্যবহার করা খুবই বিপজ্জনক। কারণ টিয়ারশেলের এলুমিনিয়ামের খোলস খুবই শক্ত। অনেক সময় টিয়ারশেল ছুড়লে তা মানুষের গায়ে লেগে মানুষ মারা পর্যন্ত যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য এখন টিয়ারশেলের পরিবর্তে পিপার স্প্রে করা হয়। এটি টিয়ারশেলের মতোই। কাজও এক। শুধু কোন প্রকার বিপদ হওয়ার সম্ভবনা থাকে না। টিয়ারশেলেও চোখ জ্বলে। পিপার স্প্রেতেও একই কাজ হয়। পিপার স্প্রে খুবই নিরাপদ। টিএসসিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির দাবিতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। তাঁরা শহীদ মিনার ও সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানেও কর্মসূচী পালন করেন। দুটি জায়গা থেকেই তাদের সরিয়ে দেয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁরা মঙ্গলবার সোবহানবাগ মসজিদের কাছে অবস্থান নেন। সেখান থেকে সরিয়ে দিলে পরে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থান নেন। এখান থেকেও তাদের তুলে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন। টিএসসি থেকে উঠিয়ে দিলে ফুটপাথে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
No comments