অবরোধের আগেই ভাঙচুর, আগুন-বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলের কর্মসূচি আজ
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আজ রবিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আট ঘণ্টা দেশব্যাপী রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোট। কর্মসূচি সফল করতে সাংগঠনিকভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে তারা।
রাজধানীর প্রবেশপথসহ মহানগরীর আটটি স্পটে অবস্থান করার প্রস্তুতিও রয়েছে তাদের। প্রতিটি প্রবেশপথ অবরোধ করে রাজধানীকে সারা দেশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রাখতে চায় ১৮ দল। এ জন্য সারা দেশের প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহন বের না করার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন জোটের নেতারা। তবে অ্যাম্বুলেন্স, সংবাদপত্রসহ জরুরি পরিবহন, ওষুধের দোকান, রেস্টুরেন্টগুলো অবরোধ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে বলে তাঁরা জানান। ১৮ দলীয় জোট নেতারা প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুমকি দিয়ে সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, এবার নেতা-কর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না। বাধা দিলে তার প্রতিবাদ করে সরকারকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
এদিকে অবরোধকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকার বিজয়নগরে একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও দুটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনের সামনে চারটি ককটেল বিস্ফোরিত হলে জনৈক আব্দুর রাজ্জাকসহ চার থেকে পাঁচজন পথচারী আহত হন। এ সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় ফকিরাপুল মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণে বিপুল নামের এক যুবলীগকর্মী আহত হয়েছে। ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অতর্কিতে তার পাশে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে রাজারবাগ হাসপাতালে
নেওয়া হয়; পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ৮টার দিকে মালিবাগ মোড়ে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় পিকেটাররা। তবে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল দুপুর ১টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জন যুবক বিজয়নগর এলাকার একটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি মাইক্রোবাসে অতর্কিত হামলা চালায় এবং একটি প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেয়। রমনা থানার ওসি শাহ আলম জানান, দুপুরের দিকে বিজয়নগর এলাকায় তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে পিকেটাররা। হঠাৎ গলির মুখ থেকে কিছু যুবক বেরিয়ে প্রথমে একটি প্রাইভেট কারে অগ্নিসংযোগ করে এবং একটি মাইক্রোবাস ও যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মী। গত শুক্রবার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের কমপক্ষে ৩০ জন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে বিএনপির ওয়ার্ড কাউন্সিলর, শিবিরের থানা সভাপতিও রয়েছেন। বিভিন্ন সড়ক ও বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। এ প্রসঙ্গে জামায়াতের ঢাকা মহানগরীর আমির রফিকুল ইসলাম খান এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আটটি স্পটে থাকবেন জোট নেতারা : বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, আজ রাজধানীর আটটি স্পটে দলের সিনিয়র নেতারা অবস্থান করে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ছাত্রদল ১১টি এবং স্বেচ্ছাসেবক দল ৩৮টি স্পটে অবস্থান করবে। সকাল ৬টায় একই সময়ে বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল করার প্রস্তুতিও রয়েছে। অবরোধ চলাকালে ঢাকা মহানগরীর মতিঝিল এলাকায় নেতৃত্বে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস; পোস্তগোলা, যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ পয়েন্টে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নগর বিএনপর যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন আহমেদ; নয়াবাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্পটে নগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা; আমিনবাজার, গাবতলী সড়কে নেতৃত্বে থাকবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান; উত্তরায় রাজধানীর প্রবেশমুখে থাকবেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, যুবনেতা এস এম জাহাঙ্গীর; বাড্ডা ও গুলশান স্পটে থাকবেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ কাইউম; মৌচাক ও মালিবাগে থাকবেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ; ধানমণ্ডি ও মোহাম্মদপুরে নেতৃত্বে থাকবেন যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে গতকাল ১৮ দলীয় জোটের নেতারা নিজ নিজ দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করেন। অনেকে নগরীর বিভিন্ন স্পটে সাধারণ মানুষের কাছে লিফলেটও বিতরণ করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার দুপুরে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'এখনো সময় আছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিন। সরকার যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে আজকের মধ্যে পুনর্বহাল করে, তাহলে আমরা অবরোধসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করব।' শান্তিপূর্ণ এ অবরোধ কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিলে এর দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে গতকাল রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, 'আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ-পুলিশ যদি আমাদের প্রতিহত করতে গিয়ে সংঘর্ষের পথ বেছে নেয় তবে তার দায়দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তাবে।' তিনি আরো বলেন, 'সংবাদপত্রের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, সরকার আমাদের রাজপথ অবরোধের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি প্রতিহত করবে। যদি তা করা হয়, এবার নেতা-কর্মীরা ঘরে ফিরে যাবে না। উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।' তিনি বলেন, 'এখনো সময় আছে, এই দাবি মেনে নিন। বাধা দিলে সরকার পতন আন্দোলন শুরু হবে।'
গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএমএর বিতর্কিত নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ড্যাব আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, 'অবরোধ চলাকালে নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারদলীয় লোকজনের হাত উঠলে সেই হাত ভেঙে দেওয়া হবে।'
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকার কর্মসূচি বানচালে যতই পরিকল্পনা করুক, লাভ হবে না। সরকার ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে এ পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশে ১৪৫ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে।
জোটের শরিক দল জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, বিজেপি, এনপিপি, জাগপা, ন্যাপ বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট পৃথক বিবৃতিতে অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য সংহতি প্রকাশ করেছেন সম্মিলিত সমন্বয় পরিষদের ৩১ সংগঠনের নেতারা।
অবরোধের আওতামুক্ত : ট্রেন, লঞ্চসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত হাসপাতাল-ক্লিনিকের অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, সংবাদপত্রের যানবাহন প্রভৃতি রাজপথ অবরোধ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের যানবাহন এবং শীতকালীন মহড়ার কাজে ব্যবহৃত সামরিক বাহিনীর যানবাহনও অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে। শনিবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা জানান।
এদিকে অবরোধকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকার বিজয়নগরে একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও দুটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনের সামনে চারটি ককটেল বিস্ফোরিত হলে জনৈক আব্দুর রাজ্জাকসহ চার থেকে পাঁচজন পথচারী আহত হন। এ সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় ফকিরাপুল মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণে বিপুল নামের এক যুবলীগকর্মী আহত হয়েছে। ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অতর্কিতে তার পাশে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে রাজারবাগ হাসপাতালে
নেওয়া হয়; পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ৮টার দিকে মালিবাগ মোড়ে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় পিকেটাররা। তবে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল দুপুর ১টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জন যুবক বিজয়নগর এলাকার একটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি মাইক্রোবাসে অতর্কিত হামলা চালায় এবং একটি প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেয়। রমনা থানার ওসি শাহ আলম জানান, দুপুরের দিকে বিজয়নগর এলাকায় তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে পিকেটাররা। হঠাৎ গলির মুখ থেকে কিছু যুবক বেরিয়ে প্রথমে একটি প্রাইভেট কারে অগ্নিসংযোগ করে এবং একটি মাইক্রোবাস ও যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মী। গত শুক্রবার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের কমপক্ষে ৩০ জন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে বিএনপির ওয়ার্ড কাউন্সিলর, শিবিরের থানা সভাপতিও রয়েছেন। বিভিন্ন সড়ক ও বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। এ প্রসঙ্গে জামায়াতের ঢাকা মহানগরীর আমির রফিকুল ইসলাম খান এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আটটি স্পটে থাকবেন জোট নেতারা : বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, আজ রাজধানীর আটটি স্পটে দলের সিনিয়র নেতারা অবস্থান করে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ছাত্রদল ১১টি এবং স্বেচ্ছাসেবক দল ৩৮টি স্পটে অবস্থান করবে। সকাল ৬টায় একই সময়ে বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল করার প্রস্তুতিও রয়েছে। অবরোধ চলাকালে ঢাকা মহানগরীর মতিঝিল এলাকায় নেতৃত্বে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস; পোস্তগোলা, যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ পয়েন্টে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নগর বিএনপর যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন আহমেদ; নয়াবাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্পটে নগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা; আমিনবাজার, গাবতলী সড়কে নেতৃত্বে থাকবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান; উত্তরায় রাজধানীর প্রবেশমুখে থাকবেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, যুবনেতা এস এম জাহাঙ্গীর; বাড্ডা ও গুলশান স্পটে থাকবেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ কাইউম; মৌচাক ও মালিবাগে থাকবেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ; ধানমণ্ডি ও মোহাম্মদপুরে নেতৃত্বে থাকবেন যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে গতকাল ১৮ দলীয় জোটের নেতারা নিজ নিজ দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করেন। অনেকে নগরীর বিভিন্ন স্পটে সাধারণ মানুষের কাছে লিফলেটও বিতরণ করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার দুপুরে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'এখনো সময় আছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিন। সরকার যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে আজকের মধ্যে পুনর্বহাল করে, তাহলে আমরা অবরোধসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করব।' শান্তিপূর্ণ এ অবরোধ কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিলে এর দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে গতকাল রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, 'আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ-পুলিশ যদি আমাদের প্রতিহত করতে গিয়ে সংঘর্ষের পথ বেছে নেয় তবে তার দায়দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তাবে।' তিনি আরো বলেন, 'সংবাদপত্রের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, সরকার আমাদের রাজপথ অবরোধের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি প্রতিহত করবে। যদি তা করা হয়, এবার নেতা-কর্মীরা ঘরে ফিরে যাবে না। উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।' তিনি বলেন, 'এখনো সময় আছে, এই দাবি মেনে নিন। বাধা দিলে সরকার পতন আন্দোলন শুরু হবে।'
গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএমএর বিতর্কিত নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ড্যাব আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, 'অবরোধ চলাকালে নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারদলীয় লোকজনের হাত উঠলে সেই হাত ভেঙে দেওয়া হবে।'
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকার কর্মসূচি বানচালে যতই পরিকল্পনা করুক, লাভ হবে না। সরকার ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে এ পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশে ১৪৫ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে।
জোটের শরিক দল জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, বিজেপি, এনপিপি, জাগপা, ন্যাপ বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট পৃথক বিবৃতিতে অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য সংহতি প্রকাশ করেছেন সম্মিলিত সমন্বয় পরিষদের ৩১ সংগঠনের নেতারা।
অবরোধের আওতামুক্ত : ট্রেন, লঞ্চসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত হাসপাতাল-ক্লিনিকের অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, সংবাদপত্রের যানবাহন প্রভৃতি রাজপথ অবরোধ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের যানবাহন এবং শীতকালীন মহড়ার কাজে ব্যবহৃত সামরিক বাহিনীর যানবাহনও অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে। শনিবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা জানান।
No comments