গৌরব হারাচ্ছে শান্তির নোবেল?
চলতি বছর নোবেলজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে আগামীকাল সোমবার। এ উপলক্ষে সুইডেনের স্টকহোমে সিটি হলে প্রতিবছরই আয়োজন করা হয় জমকালো অনুষ্ঠানের। ইউরোপজুড়ে চলমান অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।
তবে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে জৌলুসের ঘাটতি চোখে না পড়লেও যাকে ঘিরে এ আয়োজন, সেই নোবেল পুরস্কারের মর্যাদা নিয়েই কয়েক বছর ধরে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশেষ করে শান্তি পুরস্কার নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে বেশি। সমালোচকরা বলছেন, বিতর্কিত ব্যক্তিদের দেওয়া হচ্ছে এ পুরস্কার। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এ পুরস্কারের মর্যাদা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কেউ কেউ নোবেল কমিটির বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, প্রস্তাব দিচ্ছেন কমিটিতে সংস্কার আনারও।
এ বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বিশ্লেষকদের মতে, শান্তি পুরস্কার নিয়ে বিতর্কের শুরু ২০০৯ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার প্রথম বছরেই এ পুরস্কার দেওয়া হয় বারাক ওবামাকে। একইভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন নানা সমস্যায় পর্যুদস্ত, কোনোভাবেই অর্থনৈতিকসহ সমস্যাগুলো সামলে উঠতে পারছে না, তখই এ বছর এই জোটকে পুরস্কারটি দেওয়া হলো। বিভিন্ন সময়ে নোবেল পাওয়া ব্যক্তিরাই কমিটির এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন। সমালোচকদের অনেকেই শান্তি পুরস্কারের ক্ষেত্রে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সাম্প্রতিক বছরগুলোর সিদ্ধান্তকে নানা বিশেষণে আক্রমণ করেছেন। তাঁদের সিদ্ধান্তকে কেউ বলছেন, 'প্রহসন', কেউ কেলেঙ্কারি', তামাশা', 'বিদ্রূপ' এবং কেউ বা 'উদ্ভট' বলে অভিহিত করছেন। ২০১০ নোবেল শান্তি পুরস্কার পান চীনের ভিন্নমতাবলম্বী লেখক ও মানবাধিকারকর্মী লিউ চিয়াওবো। পশ্চিমে চীনের কমিউনিস্ট শাসনের বিরোধিতাকারীরা এর প্রশংসা করলেও চীনে এর তীব্র সমালোচনা হয়। তারা কমিটিকে 'ভাঁড়' বলে অভিহিত করে। ২০১১ সালে পুরস্কার পান যৌথভাবে তিন নারী। তাঁরা হলেন_লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইলেন জনসন সারলিফ ও মানবাধিকারকর্মী লেইমাহ জিবুয়ি এবং ইয়েমেনের মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক তাওয়াক্কুল কারমান। পুরস্কার পাওয়ার পর জিবুয়ি নিজেই সারলিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন।
মার্কিন সাংবাদিক ও নোবেল পুরস্কার বিশেষজ্ঞ স্কট লন্ডন বলেন, 'সাম্প্রতিক বছরগুলোয় শান্তি পুরস্কারে মনোনয়ন মূলত নোবেলের দীপ্তিকে ম্লান করে দিয়েছে। অনেকেই নরওয়ের নোবেল কমিটির বৈধতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। শান্তিতে যাঁরা পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁরা কেউই অপরিচিত নন। তাই তাঁদের নিয়ে বির্তক এড়ানোরও সুযোগ নেই। তবে আমি মনে করি, কয়েক বছর ধরে অত্যন্ত ভুল এবং বাজেভাবে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে।'
নরওয়ের আইনজীবী ও নোবেল কমিটির কট্টর সমালোচক ফেডরিক হেফারমেল 'দ্য নোবেল পিস প্রাইজ : হোয়াট নোবেল রিয়েলি ওয়ান্টেড' নামে একটি বই লেখেন। কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে তাঁর মত, 'ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে; যারা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন, তাঁরা এ পুরস্কার পাচ্ছেন না। তাই এটি আইনত ও নীতিগত_উভয় দিক দিয়েই বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।'
সমালোচকদের বেশির ভাগেরই আক্রমণের লক্ষ্য পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যান থর্বজোয়ার্ন জ্যাগল্যান্ডের দিকে। তিনি ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেন। অভিযোগ রয়েছে, কমিটির অন্য চার সদস্যের ওপর তাঁর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তাই তাঁদের ওপর নিজের মতামত জাহির করারও ক্ষমতা ভোগ করছেন জ্যাগল্যান্ড। ফেডরিকের মতে, পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছা ও নির্দেশ থেকে সরে এসে তাঁরা 'পুরস্কারটিকে রীতিমতো চুরি করছেন।'
তবে অন্য মতও রয়েছে অনেকের। নোবেলের ইতিহাস বিশেষজ্ঞ অ্যান্টয়েন জ্যাকব পুরস্কারের মর্যাদা হালকা হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, 'পুরস্কারের? সম্ভবত না। এই পুরস্কার সব সময়ই অত্যন্ত আকাঙ্ক্ষিত হয়ে থাকবে এবং নিজের মর্যাদা ধরে রাখবে।' অনেকে আবার নোবেল কমিটিতে সংস্কারেরও প্রস্তাব দিয়েছেন। মূলত নরওয়ের সাবেক রাজনীতিকরাই কমিটিতে ঠাঁই পান। প্রস্তাবে কমিটিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে এবং এর স্বাধীনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের প্রাধান্য_এমনকি বিদেশি নাগরিকদেরও অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব এসেছে। সূত্র : এএফপি।
এ বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বিশ্লেষকদের মতে, শান্তি পুরস্কার নিয়ে বিতর্কের শুরু ২০০৯ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার প্রথম বছরেই এ পুরস্কার দেওয়া হয় বারাক ওবামাকে। একইভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন নানা সমস্যায় পর্যুদস্ত, কোনোভাবেই অর্থনৈতিকসহ সমস্যাগুলো সামলে উঠতে পারছে না, তখই এ বছর এই জোটকে পুরস্কারটি দেওয়া হলো। বিভিন্ন সময়ে নোবেল পাওয়া ব্যক্তিরাই কমিটির এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন। সমালোচকদের অনেকেই শান্তি পুরস্কারের ক্ষেত্রে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সাম্প্রতিক বছরগুলোর সিদ্ধান্তকে নানা বিশেষণে আক্রমণ করেছেন। তাঁদের সিদ্ধান্তকে কেউ বলছেন, 'প্রহসন', কেউ কেলেঙ্কারি', তামাশা', 'বিদ্রূপ' এবং কেউ বা 'উদ্ভট' বলে অভিহিত করছেন। ২০১০ নোবেল শান্তি পুরস্কার পান চীনের ভিন্নমতাবলম্বী লেখক ও মানবাধিকারকর্মী লিউ চিয়াওবো। পশ্চিমে চীনের কমিউনিস্ট শাসনের বিরোধিতাকারীরা এর প্রশংসা করলেও চীনে এর তীব্র সমালোচনা হয়। তারা কমিটিকে 'ভাঁড়' বলে অভিহিত করে। ২০১১ সালে পুরস্কার পান যৌথভাবে তিন নারী। তাঁরা হলেন_লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইলেন জনসন সারলিফ ও মানবাধিকারকর্মী লেইমাহ জিবুয়ি এবং ইয়েমেনের মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক তাওয়াক্কুল কারমান। পুরস্কার পাওয়ার পর জিবুয়ি নিজেই সারলিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন।
মার্কিন সাংবাদিক ও নোবেল পুরস্কার বিশেষজ্ঞ স্কট লন্ডন বলেন, 'সাম্প্রতিক বছরগুলোয় শান্তি পুরস্কারে মনোনয়ন মূলত নোবেলের দীপ্তিকে ম্লান করে দিয়েছে। অনেকেই নরওয়ের নোবেল কমিটির বৈধতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। শান্তিতে যাঁরা পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁরা কেউই অপরিচিত নন। তাই তাঁদের নিয়ে বির্তক এড়ানোরও সুযোগ নেই। তবে আমি মনে করি, কয়েক বছর ধরে অত্যন্ত ভুল এবং বাজেভাবে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে।'
নরওয়ের আইনজীবী ও নোবেল কমিটির কট্টর সমালোচক ফেডরিক হেফারমেল 'দ্য নোবেল পিস প্রাইজ : হোয়াট নোবেল রিয়েলি ওয়ান্টেড' নামে একটি বই লেখেন। কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে তাঁর মত, 'ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে; যারা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন, তাঁরা এ পুরস্কার পাচ্ছেন না। তাই এটি আইনত ও নীতিগত_উভয় দিক দিয়েই বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।'
সমালোচকদের বেশির ভাগেরই আক্রমণের লক্ষ্য পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যান থর্বজোয়ার্ন জ্যাগল্যান্ডের দিকে। তিনি ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেন। অভিযোগ রয়েছে, কমিটির অন্য চার সদস্যের ওপর তাঁর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তাই তাঁদের ওপর নিজের মতামত জাহির করারও ক্ষমতা ভোগ করছেন জ্যাগল্যান্ড। ফেডরিকের মতে, পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছা ও নির্দেশ থেকে সরে এসে তাঁরা 'পুরস্কারটিকে রীতিমতো চুরি করছেন।'
তবে অন্য মতও রয়েছে অনেকের। নোবেলের ইতিহাস বিশেষজ্ঞ অ্যান্টয়েন জ্যাকব পুরস্কারের মর্যাদা হালকা হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, 'পুরস্কারের? সম্ভবত না। এই পুরস্কার সব সময়ই অত্যন্ত আকাঙ্ক্ষিত হয়ে থাকবে এবং নিজের মর্যাদা ধরে রাখবে।' অনেকে আবার নোবেল কমিটিতে সংস্কারেরও প্রস্তাব দিয়েছেন। মূলত নরওয়ের সাবেক রাজনীতিকরাই কমিটিতে ঠাঁই পান। প্রস্তাবে কমিটিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে এবং এর স্বাধীনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের প্রাধান্য_এমনকি বিদেশি নাগরিকদেরও অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব এসেছে। সূত্র : এএফপি।
No comments