শুভেচ্ছা ও অভিবাদন by মতিউর রহমান
প্রিয় পাঠক, শুভেচ্ছা, অভিবাদন, কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ। আজ প্রথম আলোর চতুর্দশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৫ বছরের প্রথম দিন। সত্যি সত্যি, আপনাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার কোনো সীমা নেই। আপনাদের সবার সহযোগিতা আর অংশগ্রহণ নিয়েই প্রথম আলো আজ প্রথম আলো হয়ে উঠেছে।
একটি দৈনিক পত্রিকা প্রতিদিন পাঠকদের সামনে হাজির হয় পরীক্ষার্থীর মতো। বা, বলা যায়, নির্বাচনের প্রার্থীর মতো। প্রতিদিনই তার ভোটের দিন। আপনারা, পাঠকেরা, সিদ্ধান্ত নেন, এটা পাস করল, নাকি ফেল করল। আপনার প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে ওই পত্রিকা আজ হোক কাল হোক, আপনি আর রাখবেন না।
আমরা এ কথা ভেবে আপ্লুুত বোধ করি যে, প্রথম আলোর প্রচারসংখ্যা প্রতিবছর বেড়েই চলেছে। কোনো বছরই আমাদের মুদ্রণসংখ্যা কমেনি। এরই মধ্যে আমরা পাঁচ লাখ কপির মাইলফলক অতিক্রম করেছি। এখন আমরা ছাপছি পাঁচ লাখ ২০ হাজার থেকে ২৬ হাজার কপি।
প্রায় দেড় বছর আগের জরিপেই আমাদের প্রতিদিনের পাঠকসংখ্যা, জরিপকারী পেশাদার প্রতিষ্ঠানের হিসাব অনুযায়ী ৫৩ লাখ অতিক্রম করেছিল। এ বছরের জরিপের ফল এখনো হাতে আসেনি, এর মধ্যে আমাদের প্রচারসংখ্যা অনেক বেড়েছে, কাজেই মোট পাঠকসংখ্যাও আরও বেড়েছে।
শুধু প্রচারসংখ্যাই একমাত্র নিয়ামক নয়, প্রথম আলোর প্রতি আপনাদের ভালোবাসার প্রমাণ আমরা নিত্যদিন নানাভাবে পাই। আপনারা যেকোনো ভালো কাজের উদ্যোগ নিলে আমাদের বলেন, সঙ্গে থাকুন, কেন থাকবেন না, আপনারাই তো বলেছেন, যা কিছু ভালো তার সঙ্গে প্রথম আলো। ভালো কাজ করতে গিয়ে কোনো বাধার সম্মুখীন হলে উদ্যোগী মানুষ আওয়াজ তোলে, বদলে যাও বদলে দাও। বলেন, পরিবর্তন হবেই। আর তাঁরা আমাদেরও বলেন, আপনারাও বদলান, ইতিবাচকভাবে বদলান, ভালো থেকে আরও ভালো হোন, তা হলে দেশটাও ভালো থেকে আরও ভালোর দিকে এগোবে।
প্রথম আলোর প্রতি আপনাদের এই যে ভালোবাসা, এর উৎস কী? আমরা কখনো হয়তো কাগজ-কলম নিয়ে হিসাব করতে বসিনি। কিন্তু আমরা জানি, আজ থেকে ১৪ বছর আগের দিনটি থেকেই আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একেবারে পরিষ্কার ছিল। আমরা স্বাধীন, নিরপেক্ষ, সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতা করব। আমরা কোনো দলের মুখপত্র হব না, জনগণের পক্ষে কোনো সত্য উচ্চারণে আমরা শঙ্কিত হব না। আমরা পেশাদারি দক্ষতা ও উৎকর্ষ অর্জনে সব সময় সচেষ্ট থাকব। আমরা পরিবর্তনের সহযোগী হব। আমরা গণতন্ত্র আর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মূল্যবোধকে ধারণ করব, নারী-শিশুর অধিকার, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু অধিকারের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রাখব।
সেই সব লক্ষ্যে আমরা অবিচল রয়েছি।
আমরা চেয়েছি পারিবারিক কাগজ হতে। আপনাদের পরিবারের একজন সদস্য হয়ে উঠতে। আমরা তাই এমন কিছু প্রকাশ করি না, যা আমাদের সাংস্কৃতিক ও পারিবারিক মূল্যবোধে আঘাত হানে। আবার বাড়ির ছোট্ট শিশুটি থেকে গৃহিণী, কর্মজীবী নারী থেকে প্রবীণতম সদস্যের চাহিদা যেন এই কাগজের মাধ্যমে মেটানো যায়।
আজকের এই আনন্দের দিনে আমি আপনাদের একটা চমৎকার তথ্য জানাতে চাই। .িঢ়ৎড়ঃযড়স-ধষড়.পড়স সারা পৃথিবীর এক নম্বর বাংলা ওয়েবসাইট। গুগল অ্যালেক্সা রেটিংয়ে এটা জানা যায়। এর সঙ্গে .িবঢ়ৎড়ঃযড়সধষড়.পড়স যোগ করলে এই অবস্থান একেবারেই নিরঙ্কুশ হয়ে ওঠে। আর গুগল অ্যানালেটিকস অনুযায়ী, প্রথম আলো পঠিত হয় সারা পৃথিবীতে ১৯০টি দেশে। আমাদের পাশের দেশের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা কাগজটি অনেক বড়, কিন্তু তাদের ওয়েবসাইট এত জনপ্রিয় নয়, রেটিংয়ে অনেক পিছিয়ে।
বাংলাদেশের মানুষ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। তাঁরা নিজেদের ভাগ্য বদলের জন্য গেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা দেশের অগ্রগতিতে বিশাল অবদান রাখছেন। তাঁরা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির ভিতকে মজবুত করছেন এবং নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এবার ঈদের প্রাক্কালে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। তাঁরা অবদান রাখছেন নতুন নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে, নতুন নতুন ধারণা নিয়ে আসছেন তাঁরা এই দেশে। নতুন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে দেশে।
দেশে আর দেশের বাইরের পরিবর্তনশীল মানুষের শতমুখী চেষ্টায় দেশ কিন্তু এগিয়েই চলেছে। শত বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও বাংলাদেশে এগোচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই। এই যে মধ্যপ্রাচ্যে বা ইউরোপে, উত্তর আমেরিকায় বা আফ্রিকায় বাংলাদেশের মানুষটি কাজ করে চলেছেন, তিনি কিন্তু তাঁর দেশকে ভোলেননি, ভাষাকে ভোলেননি, তিনি তাই নিয়ম করে সময় বের করে নেন বাংলাদেশের কাগজ পড়তে, বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল দেখতে। সেখানেই প্রথম আলো তাঁর প্রথম পছন্দ। মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে তো প্রথম আলোর ছাপা কপিও বিক্রি হয় নিয়মিত।
বাংলা ভাষাভাষী মানুষ পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, তাঁরা ভালোর সঙ্গে আছেন, পরিবর্তনের জন্য কাজ করে চলেছেন। এই প্রেক্ষাপটে প্রথম আলোর এবারের স্লোগান: বিশ্বজুড়ে বাংলা, বিশ্বজুড়ে প্রথম আলো। বাংলা পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা, আর প্রথম আলো সারা পৃথিবীর আকাশে অনেক উঁচুতে তুলে ধরতে চায় বাংলার পতাকা। যেখানেই বাংলা, সেখানেই প্রথম আলো। বাংলা আর বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে পড়ুক পৃথিবীজুড়ে। বাংলার ইতিবাচক খবর আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই বিশ্বব্যাপী। আর এ কাজে আমাদের অনুপ্রেরণা দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অনেক বাংলাদেশি, যাঁরা নিজেরা নানা রকমের ভালো কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। আমরা যাঁরা দেশে আছি, যাঁরা বিদেশে আছেন, আসুন—সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই।
মতিউর রহমান: সম্পাদক, প্রথম আলো।
আমরা এ কথা ভেবে আপ্লুুত বোধ করি যে, প্রথম আলোর প্রচারসংখ্যা প্রতিবছর বেড়েই চলেছে। কোনো বছরই আমাদের মুদ্রণসংখ্যা কমেনি। এরই মধ্যে আমরা পাঁচ লাখ কপির মাইলফলক অতিক্রম করেছি। এখন আমরা ছাপছি পাঁচ লাখ ২০ হাজার থেকে ২৬ হাজার কপি।
প্রায় দেড় বছর আগের জরিপেই আমাদের প্রতিদিনের পাঠকসংখ্যা, জরিপকারী পেশাদার প্রতিষ্ঠানের হিসাব অনুযায়ী ৫৩ লাখ অতিক্রম করেছিল। এ বছরের জরিপের ফল এখনো হাতে আসেনি, এর মধ্যে আমাদের প্রচারসংখ্যা অনেক বেড়েছে, কাজেই মোট পাঠকসংখ্যাও আরও বেড়েছে।
শুধু প্রচারসংখ্যাই একমাত্র নিয়ামক নয়, প্রথম আলোর প্রতি আপনাদের ভালোবাসার প্রমাণ আমরা নিত্যদিন নানাভাবে পাই। আপনারা যেকোনো ভালো কাজের উদ্যোগ নিলে আমাদের বলেন, সঙ্গে থাকুন, কেন থাকবেন না, আপনারাই তো বলেছেন, যা কিছু ভালো তার সঙ্গে প্রথম আলো। ভালো কাজ করতে গিয়ে কোনো বাধার সম্মুখীন হলে উদ্যোগী মানুষ আওয়াজ তোলে, বদলে যাও বদলে দাও। বলেন, পরিবর্তন হবেই। আর তাঁরা আমাদেরও বলেন, আপনারাও বদলান, ইতিবাচকভাবে বদলান, ভালো থেকে আরও ভালো হোন, তা হলে দেশটাও ভালো থেকে আরও ভালোর দিকে এগোবে।
প্রথম আলোর প্রতি আপনাদের এই যে ভালোবাসা, এর উৎস কী? আমরা কখনো হয়তো কাগজ-কলম নিয়ে হিসাব করতে বসিনি। কিন্তু আমরা জানি, আজ থেকে ১৪ বছর আগের দিনটি থেকেই আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একেবারে পরিষ্কার ছিল। আমরা স্বাধীন, নিরপেক্ষ, সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতা করব। আমরা কোনো দলের মুখপত্র হব না, জনগণের পক্ষে কোনো সত্য উচ্চারণে আমরা শঙ্কিত হব না। আমরা পেশাদারি দক্ষতা ও উৎকর্ষ অর্জনে সব সময় সচেষ্ট থাকব। আমরা পরিবর্তনের সহযোগী হব। আমরা গণতন্ত্র আর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মূল্যবোধকে ধারণ করব, নারী-শিশুর অধিকার, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু অধিকারের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রাখব।
সেই সব লক্ষ্যে আমরা অবিচল রয়েছি।
আমরা চেয়েছি পারিবারিক কাগজ হতে। আপনাদের পরিবারের একজন সদস্য হয়ে উঠতে। আমরা তাই এমন কিছু প্রকাশ করি না, যা আমাদের সাংস্কৃতিক ও পারিবারিক মূল্যবোধে আঘাত হানে। আবার বাড়ির ছোট্ট শিশুটি থেকে গৃহিণী, কর্মজীবী নারী থেকে প্রবীণতম সদস্যের চাহিদা যেন এই কাগজের মাধ্যমে মেটানো যায়।
আজকের এই আনন্দের দিনে আমি আপনাদের একটা চমৎকার তথ্য জানাতে চাই। .িঢ়ৎড়ঃযড়স-ধষড়.পড়স সারা পৃথিবীর এক নম্বর বাংলা ওয়েবসাইট। গুগল অ্যালেক্সা রেটিংয়ে এটা জানা যায়। এর সঙ্গে .িবঢ়ৎড়ঃযড়সধষড়.পড়স যোগ করলে এই অবস্থান একেবারেই নিরঙ্কুশ হয়ে ওঠে। আর গুগল অ্যানালেটিকস অনুযায়ী, প্রথম আলো পঠিত হয় সারা পৃথিবীতে ১৯০টি দেশে। আমাদের পাশের দেশের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা কাগজটি অনেক বড়, কিন্তু তাদের ওয়েবসাইট এত জনপ্রিয় নয়, রেটিংয়ে অনেক পিছিয়ে।
বাংলাদেশের মানুষ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। তাঁরা নিজেদের ভাগ্য বদলের জন্য গেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা দেশের অগ্রগতিতে বিশাল অবদান রাখছেন। তাঁরা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির ভিতকে মজবুত করছেন এবং নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এবার ঈদের প্রাক্কালে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। তাঁরা অবদান রাখছেন নতুন নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে, নতুন নতুন ধারণা নিয়ে আসছেন তাঁরা এই দেশে। নতুন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে দেশে।
দেশে আর দেশের বাইরের পরিবর্তনশীল মানুষের শতমুখী চেষ্টায় দেশ কিন্তু এগিয়েই চলেছে। শত বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও বাংলাদেশে এগোচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই। এই যে মধ্যপ্রাচ্যে বা ইউরোপে, উত্তর আমেরিকায় বা আফ্রিকায় বাংলাদেশের মানুষটি কাজ করে চলেছেন, তিনি কিন্তু তাঁর দেশকে ভোলেননি, ভাষাকে ভোলেননি, তিনি তাই নিয়ম করে সময় বের করে নেন বাংলাদেশের কাগজ পড়তে, বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল দেখতে। সেখানেই প্রথম আলো তাঁর প্রথম পছন্দ। মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে তো প্রথম আলোর ছাপা কপিও বিক্রি হয় নিয়মিত।
বাংলা ভাষাভাষী মানুষ পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, তাঁরা ভালোর সঙ্গে আছেন, পরিবর্তনের জন্য কাজ করে চলেছেন। এই প্রেক্ষাপটে প্রথম আলোর এবারের স্লোগান: বিশ্বজুড়ে বাংলা, বিশ্বজুড়ে প্রথম আলো। বাংলা পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা, আর প্রথম আলো সারা পৃথিবীর আকাশে অনেক উঁচুতে তুলে ধরতে চায় বাংলার পতাকা। যেখানেই বাংলা, সেখানেই প্রথম আলো। বাংলা আর বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে পড়ুক পৃথিবীজুড়ে। বাংলার ইতিবাচক খবর আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই বিশ্বব্যাপী। আর এ কাজে আমাদের অনুপ্রেরণা দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অনেক বাংলাদেশি, যাঁরা নিজেরা নানা রকমের ভালো কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। আমরা যাঁরা দেশে আছি, যাঁরা বিদেশে আছেন, আসুন—সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই।
মতিউর রহমান: সম্পাদক, প্রথম আলো।
No comments