মার্কিন নির্বাচন-রমনির পালে মন্থর হাওয়া by চার্লস এম ব্লো
রমনির হাতে আর বেশি সময় নেই। বিভিন্ন জরিপের সর্বশেষ ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মিট রমনি বারাক ওবামার কাছে পরাজিত হতে পারেন।
আর এটিই যদি সত্যি হয়ে যায় তাহলে তা হবে তার জন্য তিক্ত বড়ি খেয়ে মুখ চুন হওয়ার শামিল। হাতেগোনা আর কয়েক দিনে একমাত্র ভাগ্য এবং বিদ্যমান পরিস্থিতির নাটকীয় কোনো পরিবর্তন রমনির আছে ধেয়ে আসা দুর্ভাগ্য বদলে দিতে পারে। ওবামার অবশ্য ভোটের এহেন দৃশ্যপট পরিবর্তনে বেজায় খুশি হওয়ারই কথা।
রমনির কীভাবে এ দশা হলো?
অর্থনীতির হাল অব্যাহতভাবে ভালো হচ্ছে। আর রমনিকে জেতানোর পক্ষে যুক্তি ছিল, অর্থনীতির অবস্থা বেজায় খারাপ। সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতির হাল ফেরাতে হলে রমনির মতো একজন প্রতিষ্ঠিত চৌকস ব্যবসায়ীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা দরকার। রমনি এ ক্ষেত্রে তার ব্যবসায়িক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতিকে পুনরায় শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন তেমন একটা বিশ্বাস ভোটারদের মনে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু ওবামার একের পর এক নেওয়া পদক্ষেপের ফলে অর্থনীতির স্বাস্থ্য পুনরায় ফিরতে শুরু করায় এ পয়েন্টে রমনির পক্ষে প্রচার বেলুন চিমিয়ে যায়।
মার্কিন বাণিজ্য দফতরের গত অক্টোবর মাসের রিপোর্টে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে গৃহায়ন এক লাফে ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়। চার বছরের মধ্যে এটি ছিল সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। বেকারত্বের হার সেপ্টেম্বরে ৮ শতাংশের নিচে নেমে যায়। আর শুক্রবার প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, প্রত্যাশার চেয়েও বেকারত্বের হার বেশি হ্রাস হয়েছে। অর্থাৎ বেশি সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে শুক্রবার জনমত জরিপও প্রকাশ পেয়েছে। জরিপের ফলে দেখা যায়, নিয়মিত ভালো বেতনের কর্মর্সংস্থান হার সেপ্টেম্বরে যেখানে ৪৫.১ শতাংশ ছিল; সেখানে অক্টোবরে এ হার ৪৫.৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের হার জরিপের এই পদ্ধতি অনুসরণের পর গত মাসেই সর্বোচ্চ মাত্রায় এ ক্ষেত্রে উন্নীত হলো। অথচ ওবামাকে কোণঠাসা করার জন্য রমনির দরকার ছিল অর্থনীতির একটা চরম হতাশাজনক চিত্র। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও ওবামা আলোর ইশারা দেখিয়েছেন।
রমনির পালে মন্থর হাওয়া কেন?
ওবামার সঙ্গে প্রথম টিভি বিতর্কে অংশ নেওয়ার পর কিছুদিন রমনির জনপ্রিয়তার পারদ তরতর করে উঠেছিল। তখন মনে হচ্ছিল, না, তারও নির্বাচনে জিতে ওভাল অফিসের চেয়ারখানিতে বসার অধিকার রয়েছে। তখন জরিপগুলোর ফলে তারই জয়জয়কার। তার দোমনা ও হতাশ সমর্থকরাও তার পক্ষে দাঁড়ানোর যুক্তি খুঁজে পেয়েছিলেন। তারা তাদের প্রার্থীকে নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন। রমনির পক্ষে নির্বাচনী হাওয়া বেড়েই চলেছিল তখন। কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত এ হাওয়া স্থায়ী হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল জনপ্রিয়তার হাওয়াভর্তি বেলুনটা চিমিয়ে গেছে। তবে তখনও রমনি শিবির পুরোপুরি নির্বাচনে জেতার আশা ত্যাগ করেনি। আর নির্বাচন প্রচারক দলকে উদ্দীপ্ত রাখতে হলে এ ধরনের আশাবাদ তো জিইয়ে রাখতেই হয়।
টাইমসের নেটি সিলভার লিখেছেন : নির্বাচনে রমনির পক্ষে সমর্থনের গতিবেগ বজায় থাকার তৃতীয় একটা যুক্তি হলো, এ নির্বাচনে রমনি জিততে পারুন আর নাই পারুন তার পক্ষে নির্বাচনী হাওয়ার গতি দেখে বলে দেওয়া যায়, তিনি মঙ্গলবারের নির্বাচনে অবশ্যই বিজয়ী হবেন। আমার মতে এটা আদপে একটা খোঁড়া যুক্তি। এর পক্ষে যে যুক্তি খাড়া করা হয়েছে সেটা ধোপে টেকে না।
সিলভার নির্বাচন সম্পর্কিত ডাটাবেজ ঘেঁটে বলেছেন, রমনির পক্ষে নির্বাচনী হাওয়া বজায় থাকার কোনো প্রমাণ নেই। বরং বলা যায়, এখন নির্বাচনী হাওয়া কিছুটা ওবামার দিকে বইতে শুরু করেছে।
এখন এটাই সত্য। আসলে ওবামার নির্বাচন প্রচারক দল এখন তাদের পক্ষে নির্বাচনী হাওয়ার দাবি করতেই পারে।
হ্যারিকেন স্যান্ডি কি ওবামাকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে?
স্যান্ডির আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চল লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছিল। আবার এখানেই মিডিয়ার কেন্দ্র। মানুষ স্যান্ডির কারণে নির্বাচনে কোন প্রার্থী কী বলল তা ভুলে দুর্যোগের প্রতি তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। মানুষ দেখল ওবামা যোগ্য প্রেসিডেন্টের মতো তার পক্ষে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপই নিয়েছেন। তখন মানুষ একজন দক্ষ প্রেসিডেন্টকেই তাদের চোখের সামনে দেখেছে। আমেরিকার জনগণ বাইপার্টিজানশিপও প্রত্যক্ষ করেছে। ওবামা নিউজার্সির গভর্নর রিপাবলিকান ক্রিস ক্রিস্টিকে দুর্যোগ মোকাবেলায় সঙ্গী করেছেন। ক্রিস্টি রিপাবলিকান কনভেনশনে রমনির পক্ষে প্রধান বক্তা ছিলেন। দুর্যোগ মোকাবেলায় ক্রিস্টি, এমনকি নিউইয়র্কের স্বতন্ত্র মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গের প্রশংসাও ওবামা পেয়েছেন। রমনি কেবল ওহাইওতে তার নির্বাচনী প্রচারকে দুর্যোগ ত্রাণে কাজে লাগিয়েছেন।
সত্য-মিথ্যার লড়াই : তথ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, এ পর্যন্ত মার্কিন ইতিহাসে যত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাদের মধ্যে অসত্য তথ্য প্রদান করার ক্ষেত্রে রমনি সেরা। রমনি বলেছেন, রাশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী) দিমিত্রি মেদভেদেভ নাকি বলেছেন, ওবামা পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারলে রাশিয়ার সঙ্গে স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনার ব্যাপারে নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবেন। রমনির বক্তব্য হলো_ রাশিয়া যেখানে এখনও যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক প্রধান প্রতিপক্ষ সেখানে ওবামা তাদের প্রতি নমনীয় হচ্ছেন, এটা শুভ নয়। তবে শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে দেখা যায়, সম্প্রতি রমনির ছেলে রাশিয়া সফর করেছেন এবং সে সময় তিনি এক বাহক মারফত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে রমনির পক্ষে এক বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সে বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, রমনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হলে রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। নির্বাচনী প্রচারের বক্তব্যকে অকাট্য না ধরার জন্য ওই বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এর অর্থ দাঁড়ায়, ওবামা এখন রাশিয়ার ব্যাপারে যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছেন সে একই দৃষ্টিভঙ্গি রমনিও গ্রহণ করবেন। বরং রমনি আরও নমনীয় হতে পারেন। এ ধরনের হিপোক্রেসির আশ্রয় অনায়াসেই নিতে দেখা যাচ্ছে রমনিকে।
এসব কারণে জনমত ওবামার দিকে ঘুরে গেছে। জরিপগুলোতে দ্রুতই ওবামার সঙ্গে রমনির ভোটের ব্যবধান বাড়তে দেখা যাচ্ছে। অধিকাংশ স্বতন্ত্র ভোটার, এমনকি এক-পঞ্চমাংশ রিপাবলিকানও মনে করেন ওবামাই মঙ্গলবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হবেন। বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন না ঘটলে ওবামার পক্ষে এখন বাজি ধরা যায়।
চার্লস এম ব্লো : মার্কিন সাংবাদিক ও কলাম লেখক, নিউইয়র্ক টাইমস থেকে ভাষান্তর সুভাষ সাহা
রমনির কীভাবে এ দশা হলো?
অর্থনীতির হাল অব্যাহতভাবে ভালো হচ্ছে। আর রমনিকে জেতানোর পক্ষে যুক্তি ছিল, অর্থনীতির অবস্থা বেজায় খারাপ। সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতির হাল ফেরাতে হলে রমনির মতো একজন প্রতিষ্ঠিত চৌকস ব্যবসায়ীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা দরকার। রমনি এ ক্ষেত্রে তার ব্যবসায়িক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতিকে পুনরায় শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন তেমন একটা বিশ্বাস ভোটারদের মনে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু ওবামার একের পর এক নেওয়া পদক্ষেপের ফলে অর্থনীতির স্বাস্থ্য পুনরায় ফিরতে শুরু করায় এ পয়েন্টে রমনির পক্ষে প্রচার বেলুন চিমিয়ে যায়।
মার্কিন বাণিজ্য দফতরের গত অক্টোবর মাসের রিপোর্টে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে গৃহায়ন এক লাফে ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়। চার বছরের মধ্যে এটি ছিল সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। বেকারত্বের হার সেপ্টেম্বরে ৮ শতাংশের নিচে নেমে যায়। আর শুক্রবার প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, প্রত্যাশার চেয়েও বেকারত্বের হার বেশি হ্রাস হয়েছে। অর্থাৎ বেশি সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে শুক্রবার জনমত জরিপও প্রকাশ পেয়েছে। জরিপের ফলে দেখা যায়, নিয়মিত ভালো বেতনের কর্মর্সংস্থান হার সেপ্টেম্বরে যেখানে ৪৫.১ শতাংশ ছিল; সেখানে অক্টোবরে এ হার ৪৫.৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের হার জরিপের এই পদ্ধতি অনুসরণের পর গত মাসেই সর্বোচ্চ মাত্রায় এ ক্ষেত্রে উন্নীত হলো। অথচ ওবামাকে কোণঠাসা করার জন্য রমনির দরকার ছিল অর্থনীতির একটা চরম হতাশাজনক চিত্র। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও ওবামা আলোর ইশারা দেখিয়েছেন।
রমনির পালে মন্থর হাওয়া কেন?
ওবামার সঙ্গে প্রথম টিভি বিতর্কে অংশ নেওয়ার পর কিছুদিন রমনির জনপ্রিয়তার পারদ তরতর করে উঠেছিল। তখন মনে হচ্ছিল, না, তারও নির্বাচনে জিতে ওভাল অফিসের চেয়ারখানিতে বসার অধিকার রয়েছে। তখন জরিপগুলোর ফলে তারই জয়জয়কার। তার দোমনা ও হতাশ সমর্থকরাও তার পক্ষে দাঁড়ানোর যুক্তি খুঁজে পেয়েছিলেন। তারা তাদের প্রার্থীকে নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন। রমনির পক্ষে নির্বাচনী হাওয়া বেড়েই চলেছিল তখন। কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত এ হাওয়া স্থায়ী হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল জনপ্রিয়তার হাওয়াভর্তি বেলুনটা চিমিয়ে গেছে। তবে তখনও রমনি শিবির পুরোপুরি নির্বাচনে জেতার আশা ত্যাগ করেনি। আর নির্বাচন প্রচারক দলকে উদ্দীপ্ত রাখতে হলে এ ধরনের আশাবাদ তো জিইয়ে রাখতেই হয়।
টাইমসের নেটি সিলভার লিখেছেন : নির্বাচনে রমনির পক্ষে সমর্থনের গতিবেগ বজায় থাকার তৃতীয় একটা যুক্তি হলো, এ নির্বাচনে রমনি জিততে পারুন আর নাই পারুন তার পক্ষে নির্বাচনী হাওয়ার গতি দেখে বলে দেওয়া যায়, তিনি মঙ্গলবারের নির্বাচনে অবশ্যই বিজয়ী হবেন। আমার মতে এটা আদপে একটা খোঁড়া যুক্তি। এর পক্ষে যে যুক্তি খাড়া করা হয়েছে সেটা ধোপে টেকে না।
সিলভার নির্বাচন সম্পর্কিত ডাটাবেজ ঘেঁটে বলেছেন, রমনির পক্ষে নির্বাচনী হাওয়া বজায় থাকার কোনো প্রমাণ নেই। বরং বলা যায়, এখন নির্বাচনী হাওয়া কিছুটা ওবামার দিকে বইতে শুরু করেছে।
এখন এটাই সত্য। আসলে ওবামার নির্বাচন প্রচারক দল এখন তাদের পক্ষে নির্বাচনী হাওয়ার দাবি করতেই পারে।
হ্যারিকেন স্যান্ডি কি ওবামাকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে?
স্যান্ডির আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চল লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছিল। আবার এখানেই মিডিয়ার কেন্দ্র। মানুষ স্যান্ডির কারণে নির্বাচনে কোন প্রার্থী কী বলল তা ভুলে দুর্যোগের প্রতি তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। মানুষ দেখল ওবামা যোগ্য প্রেসিডেন্টের মতো তার পক্ষে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপই নিয়েছেন। তখন মানুষ একজন দক্ষ প্রেসিডেন্টকেই তাদের চোখের সামনে দেখেছে। আমেরিকার জনগণ বাইপার্টিজানশিপও প্রত্যক্ষ করেছে। ওবামা নিউজার্সির গভর্নর রিপাবলিকান ক্রিস ক্রিস্টিকে দুর্যোগ মোকাবেলায় সঙ্গী করেছেন। ক্রিস্টি রিপাবলিকান কনভেনশনে রমনির পক্ষে প্রধান বক্তা ছিলেন। দুর্যোগ মোকাবেলায় ক্রিস্টি, এমনকি নিউইয়র্কের স্বতন্ত্র মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গের প্রশংসাও ওবামা পেয়েছেন। রমনি কেবল ওহাইওতে তার নির্বাচনী প্রচারকে দুর্যোগ ত্রাণে কাজে লাগিয়েছেন।
সত্য-মিথ্যার লড়াই : তথ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, এ পর্যন্ত মার্কিন ইতিহাসে যত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাদের মধ্যে অসত্য তথ্য প্রদান করার ক্ষেত্রে রমনি সেরা। রমনি বলেছেন, রাশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী) দিমিত্রি মেদভেদেভ নাকি বলেছেন, ওবামা পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারলে রাশিয়ার সঙ্গে স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনার ব্যাপারে নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবেন। রমনির বক্তব্য হলো_ রাশিয়া যেখানে এখনও যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক প্রধান প্রতিপক্ষ সেখানে ওবামা তাদের প্রতি নমনীয় হচ্ছেন, এটা শুভ নয়। তবে শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে দেখা যায়, সম্প্রতি রমনির ছেলে রাশিয়া সফর করেছেন এবং সে সময় তিনি এক বাহক মারফত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে রমনির পক্ষে এক বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সে বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, রমনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হলে রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবেন। নির্বাচনী প্রচারের বক্তব্যকে অকাট্য না ধরার জন্য ওই বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এর অর্থ দাঁড়ায়, ওবামা এখন রাশিয়ার ব্যাপারে যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছেন সে একই দৃষ্টিভঙ্গি রমনিও গ্রহণ করবেন। বরং রমনি আরও নমনীয় হতে পারেন। এ ধরনের হিপোক্রেসির আশ্রয় অনায়াসেই নিতে দেখা যাচ্ছে রমনিকে।
এসব কারণে জনমত ওবামার দিকে ঘুরে গেছে। জরিপগুলোতে দ্রুতই ওবামার সঙ্গে রমনির ভোটের ব্যবধান বাড়তে দেখা যাচ্ছে। অধিকাংশ স্বতন্ত্র ভোটার, এমনকি এক-পঞ্চমাংশ রিপাবলিকানও মনে করেন ওবামাই মঙ্গলবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হবেন। বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন না ঘটলে ওবামার পক্ষে এখন বাজি ধরা যায়।
চার্লস এম ব্লো : মার্কিন সাংবাদিক ও কলাম লেখক, নিউইয়র্ক টাইমস থেকে ভাষান্তর সুভাষ সাহা
No comments