প্রাথমিক শিক্ষার টাকা লুটপাট-আন্তমন্ত্রণালয় কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থা নিন
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। জাতি গঠনে সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি প্রাথমিক শিক্ষা জাতির ভবিষ্যৎ গঠনের ভিত্তি। শনিবার কালের কণ্ঠের রিপোর্টে এই প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচির অবকাঠামো নির্মাণ, উপকরণ ও আসবাব সরবরাহ নিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের যে চিত্র প্রকাশ পেয়েছে, তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো তথ্য রয়েছে।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ব্যয় করা সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে খোদ আইএমইডি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচিতে বরাদ্দ টাকা ব্যাপক লুটপাট ও অনিয়ম হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বরাদ্দ যথাযথভাবে ব্যবহার না করে লুটে নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা অবকাঠামো নির্মাণের তদারকিতে থাকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) মুখ্যত দায়ী করেছেন। উল্লেখ্য, গত বছরের জুন মাসে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে দেড় বছর পার না হতেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়েছে, মেঝেতে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এবং দরজা-জানালার কাঠ বাঁকা হয়ে গেছে। এটা সহজেই বোধগম্য যে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও কাজের নিম্নমানের কারণেই এ অবস্থা। অনেক আসবাব ইতিমধ্যেই ভেঙে গেছে। আর্সেনিকমুক্ত নলকূপ স্থাপনের কথা থাকলেও অনেক জায়গায় তা বসানো হয়নি। স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার নির্মাণের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। অথচ এসব খাতে অগ্রিম অর্থও ছাড় করা হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে অনিয়ম ও অর্থ লুটপাটের এই চিত্র বাংলাদেশে নতুন নয়। উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ নিজেদের পকেটস্থ করার এই রেওয়াজ যত দিন বন্ধ না হবে, তত দিন উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল আশা করা যায় না। এই কর্মসূচির অর্থ লুটপাটে জড়িত প্রকল্প কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে রয়েছে আরেক জটিলতা। স্বয়ং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এসব অনিয়মের সঙ্গে জেলা ও উপজেলা প্রকৌশলীরা জড়িত। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বটে; কিন্তু চিরাচরিত যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার আশঙ্কা রয়েছে, তাতে তিনি কতটা ব্যবস্থা নিতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে। উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ বা মনিটরিংয়ের দায়িত্ব আইএমইডির। প্রকল্প পরিদর্শন করে প্রতিবেদন তৈরি ও সুপারিশ করা ছাড়া এ বিভাগের বিশেষ করণীয় নেই। যা করার তা বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় করে থাকে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) কখনো কখনো পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রকল্পের দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত করে থাকে। এ প্রকল্পের অর্থ লুটপাটের ব্যাপারে একটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে তদন্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য বলে আমরা মনে করি। এ বিষয়ের বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষার মতো উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থ ব্যয়ে যে বা যারাই অনিয়ম করে থাকুক, তারা দেশের শত্রু। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে অনিয়ম ও অর্থ লুটপাটের এই চিত্র বাংলাদেশে নতুন নয়। উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ নিজেদের পকেটস্থ করার এই রেওয়াজ যত দিন বন্ধ না হবে, তত দিন উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল আশা করা যায় না। এই কর্মসূচির অর্থ লুটপাটে জড়িত প্রকল্প কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে রয়েছে আরেক জটিলতা। স্বয়ং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এসব অনিয়মের সঙ্গে জেলা ও উপজেলা প্রকৌশলীরা জড়িত। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বটে; কিন্তু চিরাচরিত যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার আশঙ্কা রয়েছে, তাতে তিনি কতটা ব্যবস্থা নিতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে। উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ বা মনিটরিংয়ের দায়িত্ব আইএমইডির। প্রকল্প পরিদর্শন করে প্রতিবেদন তৈরি ও সুপারিশ করা ছাড়া এ বিভাগের বিশেষ করণীয় নেই। যা করার তা বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় করে থাকে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) কখনো কখনো পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রকল্পের দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত করে থাকে। এ প্রকল্পের অর্থ লুটপাটের ব্যাপারে একটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে তদন্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য বলে আমরা মনে করি। এ বিষয়ের বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষার মতো উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থ ব্যয়ে যে বা যারাই অনিয়ম করে থাকুক, তারা দেশের শত্রু। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
No comments