ইরানি ও চীনা নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত

পরমাণু কর্মসূচিতে অবৈধভাবে ইরানকে সহায়তার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র এক ইরানি ও এক চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার জন্য পরমাণু সম্পর্কিত সরঞ্জামাদি অবৈধভাবে পাঠানোর চেষ্টার জন্য অভিযোগ আনা হয়েছে। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এ কথা জানান।


ওই ইরানি নাগরিকের নাম পারভিজ খাকির (৪৩)। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ গত মাসে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্ত চীনা নাগরিক ই জংচেং এখনো পলাতক।
ওয়াশিংটনের ফেডারেল গ্র্যান্ড জুরিদের অভিযোগপত্র অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালানোর জন্যও পৃথক অভিযোগ আনা হয়েছে ইরানি নাগরিক পারভিজ খাকির (৪৩) বিরুদ্ধে। ওই দুজনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে কয়েক দশকের কারাদণ্ড হতে পারে তাঁদের।
তবে এ কাজে জড়িত যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকও জড়িত বলে জানা গেছে। যদিও তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়নি।
জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লিসা মোনাকো বলেন, 'ইরানের অবৈধভাবে পরমাণু সরঞ্জামাদি সংগ্রহের চেষ্টার বিষয়টি এ অভিযোগপত্র থেকে স্পষ্ট।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ ধরনের সরঞ্জামাদিও পাওয়ার ব্যাপারে যে তাঁরা আগ্রহী সেটি বোঝা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে উন্নত প্রযুক্তি নেওয়ার জন্য ইরানের লোকজন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে রয়েছে। তার নানা ছল-চাতুরি ও প্রতারণার মাধ্যমে এ কাজ করে যাচ্ছে।'
যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে গত মে মাসে ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ খাকিরকে গ্রেপ্তার করে। তবে চীনা নাগরিক ই জংচেং এখনো পলাতক। বিচার বিভাগের অভিযোগ, খাকি ও ই জংচেংকে যেসব সরঞ্জামাদি পাঠাতে বলেছিল, সেগুলো হলো সি-৩৫০ মারাজিং স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম খাদ ও ভ্যাকুয়াম পাম্প। গ্যাস সেন্ট্রিফিউজের ক্ষমতা বাড়াতে ও নমনীয় করতে মারাজিং স্টিল ব্যবহৃত হয়।
মার্কিন কর্তারা বলেছেন, খাকি ও জেংচংয়ের মধ্যকার আদান-প্রদান হওয়া বেশ কয়েকটি ই-মেইল তাঁদের কাছে রয়েছে। ২০০৮ সালে খাকির চীনের এক ব্যক্তিকে ই-মেইল করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কম্পানির কাছ থেকে ইরানের জন্য ২০ টন সি-৩৫০ মারাজিং স্টিল কেনার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যক্তির সঙ্গে খাকির যোগাযোগ করিয়ে দেন জেংচং।
মার্কিন ওই নাগরিককে খাকির বলেন, 'এসব পণ্যের পরিমাণ সীমিত এবং এগুলো বিপজ্জনক তা আপনার-আমার উভয়েরই জানা।' এ ব্যবসার মাধ্যমে যে তাঁরা মোটা অঙ্কের অর্থ পাবেন, সে বিষয়ে দুজনের মধ্যে কথা হয়।
পশ্চিমা দেশগুলো ও ইসরায়েলের অভিযোগ, পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্যই ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ করছে। তবে ইরানের দাবি, শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্যই তারা পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্র : এএফপি, এপি।

No comments

Powered by Blogger.