ট্রেন দুর্ঘটনা-দায়ীদের শাস্তি হোক
অপেক্ষাকৃত নিরাপদ যান বলে ভ্রমণের জন্য ট্রেন অনেকের প্রথম পছন্দ। সাম্প্রতিক সময়ে সড়ক দুর্ঘটনার ক্রমবর্ধমান হার ট্রেনের জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। পর্যাপ্ত ট্রেনের অভাব, টিকিটের দুষ্প্রাপ্যতা ইত্যাদি নানা ঝক্কি স্বীকার করেই যাত্রীরা ট্রেনে ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু সে ট্রেনই যদি দুর্ঘটনায় পতিত হয় তবে স্বাভাবিকভাবেই যাত্রীদের মনে তীব্র হতাশা ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। শুক্রবার গাজীপুরের ধীরাশ্রমের কাছে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস যেভাবে দুর্ঘটনায় পতিত হলো তা ট্রেনযাত্রীদের মনে ভীতির জন্ম দিয়েছে। এক রহস্যময় কারণে ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। বিপরীত দিক থেকে ট্রেন এসে ধাক্কা দেয়নি, রেল লাইনেও গোলযোগের আভাস ছিল না। কিন্তু সহসা ট্রেনের ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি উল্টে গেল। মুহূর্তেই শুরু হলো বিপন্ন যাত্রীদের ছোটাছুটি। ভয়ঙ্কর এ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এক যাত্রী, আহত হয়েছেন শতাধিক। দুর্ঘটনার যে ধরন তাতে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। স্বস্তির ব্যাপার যে, সেটি ঘটেনি। কিন্তু এ দুর্ঘটনা বলে দিচ্ছে, রেল দুর্ঘটনার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সচেতনতা বাড়ানো দরকার। ট্রেন লাইনে নিয়মিত তদারকি থাকা দরকার। বর্ষা মৌসুমে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তদারকি ছাড়া তা সারিয়ে তোলার উপায় নেই। আর যদি পয়েন্টসম্যানের অদক্ষতায় ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে সেটিরও বিহিত করা দরকার। ট্রেন দুর্ঘটনার পর ধীরাশ্রম স্টেশনের মাস্টারসহ কর্মচারীদের দায়িত্ব ছিল দুর্ঘটনা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তা না করে তারা পালিয়ে গেছেন। এটি খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীন মনোভঙ্গি। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন দেওয়ার দিনও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন যথাসময়ে জনসমক্ষে প্রকাশ করা উচিত। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনার কারণগুলোও দূর করতে হবে। আমরা চাই রেলযাত্রা নিরাপদ থাকুক। রেলে ভ্রমণে মানুষ উৎসাহিত হোক। মানুষের মন জয় করেই রেল তার হারানো গৌরব ফিরে পাক।
No comments