পণ্য পর্যাপ্ত, তবু দাম বেশি by মাসুদ মিলাদ
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া রমজান মাসের নিত্যপণ্য সয়াবিন, পাম তেল, ছোলা, মসুর ডাল ও চিনি আছে অন্তত ৫৯ জন ব্যবসায়ীর হাতে। এসব পণ্যের সিংহভাগ অর্থাৎ ৫৫ থেকে ৮৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে ১২টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
গত মে থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত দুই মাসে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য খালাসের তথ্য পর্যালোচনা করে এই চিত্র পাওয়া গেছে। রোজার অন্যান্য নিত্যপণ্যও ঘুরেফিরে এসব প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এবং ঢাকার মৌলভীবাজারে এসব পণ্য বিক্রি করেন আমদানিকারকেরা।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ছোট আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলে পণ্য আমদানিতে ব্যাংকের সহযোগিতা পান না। লোকসানে পড়ে অনেক ছোট আমদানিকারক পণ্য আমদানি করছেন না। আমদানি পর্যায়ে ব্যবসায়ীর সংখ্যা কমায় এই খাতে প্রতিযোগিতাও কমছে। এর ফলে যৌক্তিক দরও নিশ্চিত হচ্ছে না।
আবার পর্যাপ্ত আমদানি হওয়ায় দেশে এখন কোনো পণ্যেই সরবরাহ-সংকট নেই। তার পরও স্থানীয় বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়ছেই। কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই বাজারে। তদারকিও নেই। গত মে থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত মোট ৪২ কার্যদিবসের তথ্য সংগ্রহ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ভোজ্যতেল: গত দুই মাসে সয়াবিন ও পাম তেলের পুরোটাই আমদানি করেছে নয়টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠানের আমদানি ৮২ শতাংশ। আমদানি হওয়া প্রায় দুই লাখ টন ভোজ্যতেলের মধ্যে এক লাখ ৬৬ হাজার টনই এনেছে এই চার প্রতিষ্ঠান। আমদানির তথ্যানুযায়ী, টি কে গ্রুপের হাতে ভোজ্যতেলের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৫৮ হাজার টন। শতকরা হিসাবে ২৯ শতাংশ। এরপর এস এ গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ এবং এস আলমের কাছে রয়েছে প্রায় এক লাখ আট হাজার টন ভোজ্যতেল।
আমদানিকারকদের হিসাবে রোজায় ভোজ্যতেলের চাহিদা প্রায় দেড় লাখ টন। আর সরকারি হিসাবে চাহিদা দেড় লাখ থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার টন। তথ্যানুযায়ী, ভোজ্যতেলের সংকট নেই। তবু সয়াবিন কম থাকার অজুহাতে দাম বেড়েছে এই পণ্যের।
কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, গত মে ও জুন মাসে আমদানি হওয়া সয়াবিনের কেজিপ্রতি দাম পড়েছে যথাক্রমে ৯৯ ও ১০৫ টাকা। শুল্ক-কর ও পরিবহন খরচ এবং শোধন খরচ যোগ করে পাইকারি বাজারে এই সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে লিটারপ্রতি ১৩২ টাকায়। খুচরায় দর কেজিপ্রতি ১৩৭ টাকা।
সয়াবিনের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে এস এ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাজ্জাদ আরেফিন বলেন, দুই-তিন সপ্তাহ আগে খোলা সয়াবিনের সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বেড়েছে। তবে এখন সয়াবিনবাহী জাহাজ বন্দরে ভিড়েছে। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ ভালো। তাই এখন বাজার স্থিতিশীল হবে।
টি কে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ কালাম বলেন, রোজায় দেড় লাখ টনের চাহিদা আছে ভোজ্যতেলের। সে অনুযায়ী এখন সরবরাহ পর্যাপ্ত। তবে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে সয়াবিনের দর এখানে কম বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ছোলা: গত দুই মাসে ছোলা আমদানি করেছে ২১টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে চট্টগ্রামের রুবি ফুড প্রোডাক্টস এবং রাজশাহীর ম্যাফ ইন্টারন্যাশনালই আমদানি করেছে ৬০ শতাংশের বেশি। আমদানি করা প্রায় ৩৭ হাজার টন ছোলার মধ্যে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার টন আমদানি করে এই দুটি গ্রুপ। বিএসএম গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান রুবি ফুড প্রোডাক্টস আমদানি করে ৪০ শতাংশ ছোলা।
আমদানিকারকদের হিসাবে রোজায় ছোলার চাহিদা প্রায় ৭০ হাজার টন। আর সরকারি হিসাবে চাহিদা ২৫ হাজার টন। রমজান মাস সামনে রেখে ছোলা আমদানি হয় মূলত জানুয়ারি থেকে বিশ্বে ছোলা উৎপাদনের মৌসুমে। জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ছোলা আমদানি হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টন। প্রতি মাসের স্বাভাবিক চাহিদা বাদ দিলে ছোলার সরবরাহ মোটামুটি ভালো বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গত মাসে এই পণ্যের গড় আমদানি মূল্য পড়েছে ৫৯ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানের ছোলার আমদানি মূল্য ছিল ৬৪-৬৫ টাকা। খরচসহ দাম পড়ছে ৬৭-৬৮ টাকা। সাধারণ মানের ছোলার দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ৫৫-৫৬ টাকা। খরচ যোগ হলে দাম দাঁড়ায় ৫৯ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই ছোলাই কিনছেন ৭৩ এবং ৭৮ টাকা কেজি দরে। খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে।
বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, আমদানি পর্যায় থেকে কেজিপ্রতি ৬৬ এবং ৬৮-৬৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই ছোলার দাম খুচরায় এত বেশি হওয়ার কথা নয়।
চিনি: গত দুই মাসে এক লাখ ৯২ হাজার টন চিনি আমদানি করে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে এক লাখ ৭০ হাজার টন অর্থাৎ প্রায় ৮৮ শতাংশই আমদানি করে তিনটি গ্রুপ। এই তিনটির মধ্যে অর্ধেকের বেশি চিনি রয়েছে সিটি গ্রুপের হাতে। অন্য দুই গ্রুপ আবদুল মোনেম ও দেশবন্ধুর হাতে বাকি ৬০ হাজার টন চিনি রয়েছে।
সরকারি সংস্থার হাতেও চিনির মজুদ এখন অন্য সময়ের তুলনায় বেশি, প্রায় পৌনে দুই লাখ টন। সরকারিভাবে চিনির দাম স্থানীয় বাজারের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করায় এখন স্থানীয় বাজারেও চিনির দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা করে বেড়েছে।
দেশবন্ধু সুগার রিফাইনারির চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, রোজার চাহিদার দেড় লাখ টন ধরা হলে অন্তত তিন গুণ বেশি চিনি মজুদ আছে। বাজারে এখন যে দরে বিক্রি হচ্ছে, আমদানি মূল্যের চেয়ে কেজিপ্রতি আট টাকা কম। ভারত থেকে নিম্নমানের চিনি আসায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মসুর ডাল: মসুর ডাল আমদানি করেছে ২৮টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠানই মোট আমদানির প্রায় ৫৫ শতাংশ পূরণ করেছে। এই সময়ে আমদানি হওয়া প্রায় ৪৫ হাজার টন মসুর ডালের মধ্যে চারটি কোম্পানির হাতে আছে ২৫ হাজার টন। যেমন—নূর জামান ফ্লাওয়ার মিলস, ম্যাফ ইন্টারন্যাশনাল, রুবি ফুড প্রোডাক্টস ও ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েটস। সরকারি হিসাবে এ ডালের চাহিদা ৫০ হাজার টন।
আদা ও রসুন: পুরোপুরি আমদানিনির্ভর না হলেও চীন থেকে আমদানি হওয়া আদা ও রসুনের চাহিদা বেশি। গত দুই মাসে আদা আমদানি করেছে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান। এ সময় আমদানি হওয়া ছয় হাজার ১৮০ টন আদার প্রায় অর্ধেক বা তিন হাজার ৪৮ টন নয়টি প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে। একইভাবে চার হাজার ৮৫৬ টন রসুন আমদানি করেছে ৩০টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে আবার সাতটি প্রতিষ্ঠানের হাতে আছে অর্ধেকের বেশি, অর্থাৎ দুই হাজার ৪৭১ টন রসুন। সরকারি হিসাবে আদার চাহিদা ৩০ হাজার টন। রসুনের চাহিদা ৫০ হাজার টন। এ দুটি পণ্য দেশে উৎপাদিত হলেও তা চাহিদার তুলনায় কম।
গত দুই মাসে আমদানি মূল্য না বাড়লেও বাজারে বেড়ে গেছে রসুন ও আদার দাম। টিসিবির হিসাবে প্রতি কেজি আমদানি করা রসুন খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। অথচ, গত সপ্তাহে এই দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। গড়ে সাড়ে ২৩ শতাংশ দাম বেড়েছে এই পণ্যের। একইভাবে আদার দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। দাম বাড়ার হার ১৫ শতাংশ।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ছোট আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলে পণ্য আমদানিতে ব্যাংকের সহযোগিতা পান না। লোকসানে পড়ে অনেক ছোট আমদানিকারক পণ্য আমদানি করছেন না। আমদানি পর্যায়ে ব্যবসায়ীর সংখ্যা কমায় এই খাতে প্রতিযোগিতাও কমছে। এর ফলে যৌক্তিক দরও নিশ্চিত হচ্ছে না।
আবার পর্যাপ্ত আমদানি হওয়ায় দেশে এখন কোনো পণ্যেই সরবরাহ-সংকট নেই। তার পরও স্থানীয় বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়ছেই। কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই বাজারে। তদারকিও নেই। গত মে থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত মোট ৪২ কার্যদিবসের তথ্য সংগ্রহ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ভোজ্যতেল: গত দুই মাসে সয়াবিন ও পাম তেলের পুরোটাই আমদানি করেছে নয়টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠানের আমদানি ৮২ শতাংশ। আমদানি হওয়া প্রায় দুই লাখ টন ভোজ্যতেলের মধ্যে এক লাখ ৬৬ হাজার টনই এনেছে এই চার প্রতিষ্ঠান। আমদানির তথ্যানুযায়ী, টি কে গ্রুপের হাতে ভোজ্যতেলের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৫৮ হাজার টন। শতকরা হিসাবে ২৯ শতাংশ। এরপর এস এ গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ এবং এস আলমের কাছে রয়েছে প্রায় এক লাখ আট হাজার টন ভোজ্যতেল।
আমদানিকারকদের হিসাবে রোজায় ভোজ্যতেলের চাহিদা প্রায় দেড় লাখ টন। আর সরকারি হিসাবে চাহিদা দেড় লাখ থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার টন। তথ্যানুযায়ী, ভোজ্যতেলের সংকট নেই। তবু সয়াবিন কম থাকার অজুহাতে দাম বেড়েছে এই পণ্যের।
কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, গত মে ও জুন মাসে আমদানি হওয়া সয়াবিনের কেজিপ্রতি দাম পড়েছে যথাক্রমে ৯৯ ও ১০৫ টাকা। শুল্ক-কর ও পরিবহন খরচ এবং শোধন খরচ যোগ করে পাইকারি বাজারে এই সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে লিটারপ্রতি ১৩২ টাকায়। খুচরায় দর কেজিপ্রতি ১৩৭ টাকা।
সয়াবিনের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে এস এ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাজ্জাদ আরেফিন বলেন, দুই-তিন সপ্তাহ আগে খোলা সয়াবিনের সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বেড়েছে। তবে এখন সয়াবিনবাহী জাহাজ বন্দরে ভিড়েছে। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ ভালো। তাই এখন বাজার স্থিতিশীল হবে।
টি কে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ কালাম বলেন, রোজায় দেড় লাখ টনের চাহিদা আছে ভোজ্যতেলের। সে অনুযায়ী এখন সরবরাহ পর্যাপ্ত। তবে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে সয়াবিনের দর এখানে কম বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ছোলা: গত দুই মাসে ছোলা আমদানি করেছে ২১টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে চট্টগ্রামের রুবি ফুড প্রোডাক্টস এবং রাজশাহীর ম্যাফ ইন্টারন্যাশনালই আমদানি করেছে ৬০ শতাংশের বেশি। আমদানি করা প্রায় ৩৭ হাজার টন ছোলার মধ্যে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার টন আমদানি করে এই দুটি গ্রুপ। বিএসএম গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান রুবি ফুড প্রোডাক্টস আমদানি করে ৪০ শতাংশ ছোলা।
আমদানিকারকদের হিসাবে রোজায় ছোলার চাহিদা প্রায় ৭০ হাজার টন। আর সরকারি হিসাবে চাহিদা ২৫ হাজার টন। রমজান মাস সামনে রেখে ছোলা আমদানি হয় মূলত জানুয়ারি থেকে বিশ্বে ছোলা উৎপাদনের মৌসুমে। জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ছোলা আমদানি হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টন। প্রতি মাসের স্বাভাবিক চাহিদা বাদ দিলে ছোলার সরবরাহ মোটামুটি ভালো বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গত মাসে এই পণ্যের গড় আমদানি মূল্য পড়েছে ৫৯ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানের ছোলার আমদানি মূল্য ছিল ৬৪-৬৫ টাকা। খরচসহ দাম পড়ছে ৬৭-৬৮ টাকা। সাধারণ মানের ছোলার দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ৫৫-৫৬ টাকা। খরচ যোগ হলে দাম দাঁড়ায় ৫৯ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই ছোলাই কিনছেন ৭৩ এবং ৭৮ টাকা কেজি দরে। খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে।
বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, আমদানি পর্যায় থেকে কেজিপ্রতি ৬৬ এবং ৬৮-৬৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই ছোলার দাম খুচরায় এত বেশি হওয়ার কথা নয়।
চিনি: গত দুই মাসে এক লাখ ৯২ হাজার টন চিনি আমদানি করে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে এক লাখ ৭০ হাজার টন অর্থাৎ প্রায় ৮৮ শতাংশই আমদানি করে তিনটি গ্রুপ। এই তিনটির মধ্যে অর্ধেকের বেশি চিনি রয়েছে সিটি গ্রুপের হাতে। অন্য দুই গ্রুপ আবদুল মোনেম ও দেশবন্ধুর হাতে বাকি ৬০ হাজার টন চিনি রয়েছে।
সরকারি সংস্থার হাতেও চিনির মজুদ এখন অন্য সময়ের তুলনায় বেশি, প্রায় পৌনে দুই লাখ টন। সরকারিভাবে চিনির দাম স্থানীয় বাজারের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করায় এখন স্থানীয় বাজারেও চিনির দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা করে বেড়েছে।
দেশবন্ধু সুগার রিফাইনারির চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, রোজার চাহিদার দেড় লাখ টন ধরা হলে অন্তত তিন গুণ বেশি চিনি মজুদ আছে। বাজারে এখন যে দরে বিক্রি হচ্ছে, আমদানি মূল্যের চেয়ে কেজিপ্রতি আট টাকা কম। ভারত থেকে নিম্নমানের চিনি আসায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মসুর ডাল: মসুর ডাল আমদানি করেছে ২৮টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠানই মোট আমদানির প্রায় ৫৫ শতাংশ পূরণ করেছে। এই সময়ে আমদানি হওয়া প্রায় ৪৫ হাজার টন মসুর ডালের মধ্যে চারটি কোম্পানির হাতে আছে ২৫ হাজার টন। যেমন—নূর জামান ফ্লাওয়ার মিলস, ম্যাফ ইন্টারন্যাশনাল, রুবি ফুড প্রোডাক্টস ও ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েটস। সরকারি হিসাবে এ ডালের চাহিদা ৫০ হাজার টন।
আদা ও রসুন: পুরোপুরি আমদানিনির্ভর না হলেও চীন থেকে আমদানি হওয়া আদা ও রসুনের চাহিদা বেশি। গত দুই মাসে আদা আমদানি করেছে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান। এ সময় আমদানি হওয়া ছয় হাজার ১৮০ টন আদার প্রায় অর্ধেক বা তিন হাজার ৪৮ টন নয়টি প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে। একইভাবে চার হাজার ৮৫৬ টন রসুন আমদানি করেছে ৩০টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে আবার সাতটি প্রতিষ্ঠানের হাতে আছে অর্ধেকের বেশি, অর্থাৎ দুই হাজার ৪৭১ টন রসুন। সরকারি হিসাবে আদার চাহিদা ৩০ হাজার টন। রসুনের চাহিদা ৫০ হাজার টন। এ দুটি পণ্য দেশে উৎপাদিত হলেও তা চাহিদার তুলনায় কম।
গত দুই মাসে আমদানি মূল্য না বাড়লেও বাজারে বেড়ে গেছে রসুন ও আদার দাম। টিসিবির হিসাবে প্রতি কেজি আমদানি করা রসুন খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। অথচ, গত সপ্তাহে এই দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। গড়ে সাড়ে ২৩ শতাংশ দাম বেড়েছে এই পণ্যের। একইভাবে আদার দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। দাম বাড়ার হার ১৫ শতাংশ।
No comments