বাবার জন্য ভালোবাসা by একরামুল হক শামীম
'কাটে না সময় যখন আর কিছুতে/বন্ধুর টেলিফোনে মন বসে না/জানালার গ্রিলটাতে ঠেকাই মাথা/মনে হয় বাবার মতো কেউ বলে না। আয় খুকু আয়, আয় খুকু আয়।' শ্রাবন্তী মজুমদার ও হেমন্ত মুখার্জির গাওয়া এই গানটি প্রায় সবাই শুনেছেন। যাদের বাবা বেঁচে নেই তাদের এই গান নস্টালজিক করে দেয়।
মাঝে মধ্যে এমনও তো সময় হয়, যখন আর কিছুতেই মন বসে না। বন্ধুর সঙ্গে জমিয়ে টেলিফোন আলাপেও মন সায় দেয় না। টুপ টুপ বৃষ্টির শব্দ তখন হয়তো জানালার ওপাশে। গ্রিলটাতে মাথা রেখে সেই পড়ন্ত বৃষ্টির ফোঁটার দিকে চেয়ে থাকা সন্তানের স্মৃতির জগতে একে একে হাজির হয় পুরনো স্মৃতিরা। তখন মনে হতেই পারে যে বাবার মতো কেউ তাকে ডাকে না।
জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে বাবা দিবস পালিত হয়। তৃতীয় রোববারের হিসাবে এ বছর ১৯ জুন পালিত হচ্ছে বাবা দিবস। বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যই এই দিবস। ইতিহাসের আশ্রয় নিলে জানা যায় বাবা দিবস উদযাপনের প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ১৯০৮ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় ৫ জুলাই এই দিবস পালন করা হয়। মিসেস গ্রেস গোল্ডেন ক্লেইটনের উদ্যোগেই মা দিবসের আদলে দিবসটি পালিত হয়। ২০০৭ সালের একটি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ২১০ জন বাবার স্মৃতির উদ্যোগে সেইবারের দিবস। তবে তা নিয়মিত হয়নি। তার দুই বছর পরে ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনোরা ডট নতুন পরিসরে বাবা দিবস পালন করে। ১০১ বছর আগের সেই বাবা দিবসটি পালিত হয়েছিল এ বছরের মতোই ১৯ জুন। তবে বাবা দিবস তখনও জনপ্রিয়তা পায়নি। ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করেন। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রতি বছর বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন।
বাবা দিবসকে সামনে রেখে সংবাদপত্রে, ব্লগে অনেক ধরনের স্মৃতিকাতর লেখা পড়ি। সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর ব্যবহারকারীরা এখন ফেসবুক, টুইটারে বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বাবা দিবসে, বাবার স্মৃতিচারণ করে। কিছুদিন আগেই দেখলাম, ফেসবুক এবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবসে বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিদিন বাবা ও সন্তানের স্মরণীয় ছবি প্রকাশ করছে, সঙ্গে ছবির পেছনের গল্প। বাবা দিবস এখন মোটামুটি ঘটা করেই পালিত হচ্ছে। তারপরও এমন ভাবনা অনেকের মধ্যেই দেখি_ বাবার জন্য একদিন কেন! কেউ কেউ বলে থাকেন_ 'বাবা দিবসটা ঠিক আমাদের জন্য। বাবার জন্য আমাদের অনুভূতি প্রতিদিনকার। তার জন্য আলাদা দিনের দরকার নেই।' কারও কারও অভিযোগ, এই ধরনের দিবসগুলো করপোরেট কিছু বিষয়কেই বিজ্ঞাপিত করে। একটা প্রাসঙ্গিক তথ্য দেওয়া যাক। ২০১০ সালের বাবা দিবসে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই ৯৫ মিলিয়ন শুভেচ্ছা কার্ড পেয়েছিলেন বাবারা। বলা যেতেই পারে, এ কেবল কার্ড বিজনেস। কিন্তু সবকিছুর পরেও তো বাবা দিবসে প্রিয় সন্তানের কাছে বাবারা পেয়েছেন শুভেচ্ছা কার্ড, বৃদ্ধাশ্রমে থাকা বাবাটি দীর্ঘদিন পর দেখা পেয়েছেন প্রিয় সন্তানের।
প্রায় চার বছর আগে, ২০০৭ সালে বাবা দিবসের কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম গাজীপুরের একটি বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে। সেখানে সারাদিন কাটিয়ে এসে বুঝতে পেরেছিলাম নচিকেতার সেই গানের বাস্তবতা। 'ছেলে আমার মস্ত মানুষ, মস্ত অফিসার/মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার-ওপার। নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামি দামি/সবচেয়ে কম দামি ছিলাম একমাত্র আমি/ছেলে আমার, আমার প্রতি অগাধ সম্ভ্রম/আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম।' সেই বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে দেখেলিাম এমন অনেক বাবাকে যারা তাদের জীবনের সেরা সময়গুলোকে বিলিয়ে দিয়েছেন সন্তানের সুখের জন্য। অথচ শেষ বয়সে সেই বাবাদেরই আশ্রয় হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। বৃদ্ধাশ্রম নয়, বাবার আশ্রয় প্রিয় সন্তানদের কাছেই থাকুক। বাবা দিবসে পৃথিবীর সকল বাবাকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতা।
জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে বাবা দিবস পালিত হয়। তৃতীয় রোববারের হিসাবে এ বছর ১৯ জুন পালিত হচ্ছে বাবা দিবস। বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যই এই দিবস। ইতিহাসের আশ্রয় নিলে জানা যায় বাবা দিবস উদযাপনের প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ১৯০৮ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় ৫ জুলাই এই দিবস পালন করা হয়। মিসেস গ্রেস গোল্ডেন ক্লেইটনের উদ্যোগেই মা দিবসের আদলে দিবসটি পালিত হয়। ২০০৭ সালের একটি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ২১০ জন বাবার স্মৃতির উদ্যোগে সেইবারের দিবস। তবে তা নিয়মিত হয়নি। তার দুই বছর পরে ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনোরা ডট নতুন পরিসরে বাবা দিবস পালন করে। ১০১ বছর আগের সেই বাবা দিবসটি পালিত হয়েছিল এ বছরের মতোই ১৯ জুন। তবে বাবা দিবস তখনও জনপ্রিয়তা পায়নি। ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করেন। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রতি বছর বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন।
বাবা দিবসকে সামনে রেখে সংবাদপত্রে, ব্লগে অনেক ধরনের স্মৃতিকাতর লেখা পড়ি। সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর ব্যবহারকারীরা এখন ফেসবুক, টুইটারে বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বাবা দিবসে, বাবার স্মৃতিচারণ করে। কিছুদিন আগেই দেখলাম, ফেসবুক এবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবসে বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিদিন বাবা ও সন্তানের স্মরণীয় ছবি প্রকাশ করছে, সঙ্গে ছবির পেছনের গল্প। বাবা দিবস এখন মোটামুটি ঘটা করেই পালিত হচ্ছে। তারপরও এমন ভাবনা অনেকের মধ্যেই দেখি_ বাবার জন্য একদিন কেন! কেউ কেউ বলে থাকেন_ 'বাবা দিবসটা ঠিক আমাদের জন্য। বাবার জন্য আমাদের অনুভূতি প্রতিদিনকার। তার জন্য আলাদা দিনের দরকার নেই।' কারও কারও অভিযোগ, এই ধরনের দিবসগুলো করপোরেট কিছু বিষয়কেই বিজ্ঞাপিত করে। একটা প্রাসঙ্গিক তথ্য দেওয়া যাক। ২০১০ সালের বাবা দিবসে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই ৯৫ মিলিয়ন শুভেচ্ছা কার্ড পেয়েছিলেন বাবারা। বলা যেতেই পারে, এ কেবল কার্ড বিজনেস। কিন্তু সবকিছুর পরেও তো বাবা দিবসে প্রিয় সন্তানের কাছে বাবারা পেয়েছেন শুভেচ্ছা কার্ড, বৃদ্ধাশ্রমে থাকা বাবাটি দীর্ঘদিন পর দেখা পেয়েছেন প্রিয় সন্তানের।
প্রায় চার বছর আগে, ২০০৭ সালে বাবা দিবসের কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম গাজীপুরের একটি বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে। সেখানে সারাদিন কাটিয়ে এসে বুঝতে পেরেছিলাম নচিকেতার সেই গানের বাস্তবতা। 'ছেলে আমার মস্ত মানুষ, মস্ত অফিসার/মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার-ওপার। নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামি দামি/সবচেয়ে কম দামি ছিলাম একমাত্র আমি/ছেলে আমার, আমার প্রতি অগাধ সম্ভ্রম/আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম।' সেই বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে দেখেলিাম এমন অনেক বাবাকে যারা তাদের জীবনের সেরা সময়গুলোকে বিলিয়ে দিয়েছেন সন্তানের সুখের জন্য। অথচ শেষ বয়সে সেই বাবাদেরই আশ্রয় হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। বৃদ্ধাশ্রম নয়, বাবার আশ্রয় প্রিয় সন্তানদের কাছেই থাকুক। বাবা দিবসে পৃথিবীর সকল বাবাকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতা।
No comments