বিমানযাত্রীদের মালপত্র চুরি-সরিষার ভূত তাড়াবে কে?
বিমানবন্দরে নিরাপত্তা কর্মীরাই যখন অভিনব পন্থায় যাত্রীদের লাগেজ থেকে মূল্যবান মালপত্র চুরি করছে তখন যাত্রীরা নিরাপত্তার জন্য আর কার কাছে যাবে? চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের লাগেজ থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ মূলবান জিনিসপত্র নিরাপত্তা কর্মীরা যোগসাজশ করে হাতিয়ে নেওয়ার পর দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দেওয়াটা স্বাভাবিক।
সিলেট ও ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রীদের মালপত্র খোয়া যাওয়াসহ যাত্রীদের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও পুরনো। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশের নাগরিকরা ছাড়াও অনেক বিদেশি প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকেন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষীদের বিরুদ্ধে আমানত খেয়ানত করার মতো অভিযোগ আসতে থাকলে জাতীয় চরিত্রের ওপরও কালিমা লাগতে পারে। বিমানবন্দরে সিসিটিভি ব্যবস্থা সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করলে এবং এটা মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা কার্যকর থাকলে এভাবে লাগেজ খুলে যাত্রীদের মূল্যবান মালপত্র সরিয়ে ফেলার প্রবণতা কমতে পারে। নিরাপত্তা কর্মীরা ডিউটি টাইমে প্রায় সর্বত্র গমন করতে পারে বিধায় তাদের ওপরও নজরদারি ব্যবস্থা নিবিড়ভাবে জারি রাখা চাই। আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা বিমানবন্দর থেকেও বিভিন্ন সময়ে যাত্রীদের লাগেজ ও মালপত্র চুরির খবর রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফনিক্স বিমানবন্দর থেকে তো কয়েক বছরে এক দম্পতি হাজারের ওপর লাগেজ চুরি করে আন্তর্জাতিক সংবাদ শিরোনাম হয়েছিল। অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে এই দম্পতি তাদের চৌর্যবৃত্তি চালিয়ে যেতে পেরেছে। কিন্তু নিরাপত্তা রক্ষীরা যাত্রীদের লাগেজ চুরি করে, এমন ঘটনা সাধারণত দেখা যায় না। এ কারণেই সেসব দেশের মানুষ প্রচলিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি অনেক আস্থাশীল। আমরা চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সব ক'টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ত্রুটিহীন করার আহ্বান জানাই। নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ যারা যাত্রীদের মালপত্র চুরির জন্য দায়ী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের স্বার্থ রক্ষাই শুধু নয়, দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্যও এটা প্রয়োজন।
No comments