গোয়েন্দা প্রতিবেদন-পুঁজিবাজার নিয়ে খেলছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট by আবুল কাশেম
পুঁজিবাজার নিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট খেলছে। তারাই নিয়ন্ত্রণ করে পুরো বাজার। বিষয়টি সরকারের গোচরে থাকলেও এই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার একের পর এক উদ্যোগ নিলেও তা সফল হয়নি।
এসব বিষয় নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারিও ছিল। পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে তারা একগুচ্ছ সুপারিশসহ প্রতিবেদন তৈরি করে তা জমা দিয়েছে। গত ২২ মে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রতিবেদনে পুঁজিবাজারে সক্রিয় শক্তিশালী সিন্ডিকেটের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পরিচালকদের শেয়ার কেনা-সংক্রান্ত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) প্রজ্ঞাপনের বিরোধিতা করে আদালতে রিট আবেদনকারীদের ব্যাপারে সরকারকে আগেই সতর্ক করে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিল একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।
সংস্থাগুলো বলেছে, ২০১০ সাল থেকে পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীদের একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনায় গোয়েন্দারাও চমকে ওঠে। পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক ধস নিয়ে অসন্তোষ দানা বাঁধে সরকারের মধ্যেও। সিন্ডিকেট পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও সরকার এখনো তা ভাঙতে পারেনি। তবে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বাজার যখন চাঙ্গা হতে শুরু করে, তখনই আদালতে পিটিশন দায়ের করে বাজারকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। রিটের রায় এসইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গেলে পুঁজিবাজারে ফের ভয়াবহ ধস নামার আশঙ্কাও করেছিল সংস্থাগুলো। অবশ্য ২২ মে এসব তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগের দিন ২১ মে আদালত এসইসির সিদ্ধান্তকেই বৈধ বলে রায় দেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা-২-এর সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ ফারুক-উজ-জামান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, কোনো মহলের হঠকারী সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজার যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে সরকারের নিবিড় নজরদারি রাখা উচিত। পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্তও যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আলোচনা সাপেক্ষে হওয়া উচিত। প্রতিবেদনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বড় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনায় উদ্বুদ্ধ করা, পর্যায়ক্রমে সরকারি কম্পানিগুলোর শেয়ার বাজারে ছাড়ার ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, এসইসি, ডিএসই এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের জন্য একটি মনিটরিং কমিটি গঠনের সুপারিশও করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, '২০১০ সালের শেষ ভাগ থেকে অনেক বিনিয়োগকারী সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসতে শুরু করেন। গত এক বছরের মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন। পুঁজি হারিয়ে টঙ্গীর জামালের আত্মহত্যা, বরিশালের আহমেদ, ঢাকার বনশ্রীর লুৎফর রহমান, খুলনার মফিজুল ইসলাম, ঢাকার গোপীবাগের রঞ্জিত ও চট্টগ্রামের সাইফুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনা আমাদের চমকে দিয়েছে।'
শেয়ারবাজারে ধসের সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে কৃত্রিমভাবে দর বাড়ানোর পর উচ্চ মূল্যে শেয়ার বিক্রি করে একটি চক্র বিদেশে অর্থ পাচার করেছে বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া নামমাত্র শেয়ার ধারণ করে কম্পানির পরিচালকের পদ আঁকড়ে থাকা, ভুয়া পোর্টফোলিও দেখিয়ে শেয়ারের দাম বাড়ানো, বাজার নিয়ন্ত্রণে এসইসির ব্যর্থতা, বাংলাদেশ ব্যাংকের একপেশে সিদ্ধান্ত ও সরকারি শেয়ার বাজারে না ছাড়াসহ বিভিন্ন কারণে বাজারে ধস নামে। একপর্যায়ে সরকারের মধ্যেও পুঁজিবাজার নিয়ে অসন্তোষ দানা বাঁধতে থাকে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও সরকার কোনোভাবেই ওই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি।
পরিচালকদের ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কম্পানির মোট পরিচালকের সংখ্যা এক হাজার ৬০৯ জন। এসইসি প্রজ্ঞাপন জারির পরও গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৮৫০ জন পরিচালক ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত পূরণ করেননি। উল্টো তাঁরা এসইসির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করার পর নিজেদের পক্ষে রায় পেতে দেশের প্রখ্যাত ও বিজ্ঞ আইনজীবীদের নিয়োগ দেন। আদালতের রায়ের আগে তৈরি করা এ প্রতিবেদনে রিটের সম্ভাব্য রায়ের ফল সম্পর্কে বলা হয়েছে, রিটের রায় আবেদনকারীদের পক্ষে গেলে পরিচালকরা লাভবান হবেন। তবে এতে বাজারে ধস নেমে আসবে। আবারও লাখ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এতে বিনিয়োগকারীদের আত্মাহুতি দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। বিনিয়োগকারীরা আগের মতো সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন-সংগ্রামে নেমে পড়বেন।
পরিচালকদের শেয়ার কেনা-সংক্রান্ত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) প্রজ্ঞাপনের বিরোধিতা করে আদালতে রিট আবেদনকারীদের ব্যাপারে সরকারকে আগেই সতর্ক করে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিল একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।
সংস্থাগুলো বলেছে, ২০১০ সাল থেকে পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীদের একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনায় গোয়েন্দারাও চমকে ওঠে। পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক ধস নিয়ে অসন্তোষ দানা বাঁধে সরকারের মধ্যেও। সিন্ডিকেট পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও সরকার এখনো তা ভাঙতে পারেনি। তবে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বাজার যখন চাঙ্গা হতে শুরু করে, তখনই আদালতে পিটিশন দায়ের করে বাজারকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। রিটের রায় এসইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গেলে পুঁজিবাজারে ফের ভয়াবহ ধস নামার আশঙ্কাও করেছিল সংস্থাগুলো। অবশ্য ২২ মে এসব তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগের দিন ২১ মে আদালত এসইসির সিদ্ধান্তকেই বৈধ বলে রায় দেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা-২-এর সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ ফারুক-উজ-জামান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, কোনো মহলের হঠকারী সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজার যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে সরকারের নিবিড় নজরদারি রাখা উচিত। পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্তও যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আলোচনা সাপেক্ষে হওয়া উচিত। প্রতিবেদনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বড় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনায় উদ্বুদ্ধ করা, পর্যায়ক্রমে সরকারি কম্পানিগুলোর শেয়ার বাজারে ছাড়ার ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, এসইসি, ডিএসই এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের জন্য একটি মনিটরিং কমিটি গঠনের সুপারিশও করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, '২০১০ সালের শেষ ভাগ থেকে অনেক বিনিয়োগকারী সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসতে শুরু করেন। গত এক বছরের মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন। পুঁজি হারিয়ে টঙ্গীর জামালের আত্মহত্যা, বরিশালের আহমেদ, ঢাকার বনশ্রীর লুৎফর রহমান, খুলনার মফিজুল ইসলাম, ঢাকার গোপীবাগের রঞ্জিত ও চট্টগ্রামের সাইফুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনা আমাদের চমকে দিয়েছে।'
শেয়ারবাজারে ধসের সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে কৃত্রিমভাবে দর বাড়ানোর পর উচ্চ মূল্যে শেয়ার বিক্রি করে একটি চক্র বিদেশে অর্থ পাচার করেছে বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া নামমাত্র শেয়ার ধারণ করে কম্পানির পরিচালকের পদ আঁকড়ে থাকা, ভুয়া পোর্টফোলিও দেখিয়ে শেয়ারের দাম বাড়ানো, বাজার নিয়ন্ত্রণে এসইসির ব্যর্থতা, বাংলাদেশ ব্যাংকের একপেশে সিদ্ধান্ত ও সরকারি শেয়ার বাজারে না ছাড়াসহ বিভিন্ন কারণে বাজারে ধস নামে। একপর্যায়ে সরকারের মধ্যেও পুঁজিবাজার নিয়ে অসন্তোষ দানা বাঁধতে থাকে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও সরকার কোনোভাবেই ওই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি।
পরিচালকদের ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কম্পানির মোট পরিচালকের সংখ্যা এক হাজার ৬০৯ জন। এসইসি প্রজ্ঞাপন জারির পরও গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৮৫০ জন পরিচালক ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত পূরণ করেননি। উল্টো তাঁরা এসইসির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করার পর নিজেদের পক্ষে রায় পেতে দেশের প্রখ্যাত ও বিজ্ঞ আইনজীবীদের নিয়োগ দেন। আদালতের রায়ের আগে তৈরি করা এ প্রতিবেদনে রিটের সম্ভাব্য রায়ের ফল সম্পর্কে বলা হয়েছে, রিটের রায় আবেদনকারীদের পক্ষে গেলে পরিচালকরা লাভবান হবেন। তবে এতে বাজারে ধস নেমে আসবে। আবারও লাখ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এতে বিনিয়োগকারীদের আত্মাহুতি দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। বিনিয়োগকারীরা আগের মতো সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন-সংগ্রামে নেমে পড়বেন।
No comments