সেন্টমার্টিনে জমি দখল-প্রভাবশালী মহলের দৌরাত্ম্য থামুক
প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের জমি দখল করে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা তৈরি করছে কিছু প্রভাবশালী লোক। আরও বড় শঙ্কার কথা হলো, বাড়ি তৈরি করতে দ্বীপের পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এভাবে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত সেন্টমার্টিন।
সোমবার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, দ্বীপে এরই মধ্যে দেড় শতাধিক বাড়িঘর, হোটেল ও গেস্টহাউস নির্মিত হয়েছে। এ ছাড়া বহিরাগত বিত্তশালীরা দ্বীপের জমি কিনে নিচ্ছেন, দখল করছেন খাসজমি। অপরিকল্পিতভাবে ইমারত ও ঘরবাড়ি গড়ে তোলা হয়েছে। অথচ সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ ঘোষণার অংশ হিসেবে এই দ্বীপে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ থাকার কথা। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রবাল দ্বীপটিতে পর্যটকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারেও প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু সরকার ঘোষিত এসব উদ্যোগ সফল হচ্ছে না নজরদারির অভাবে। যেখানে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ বিপর্যয় ঘটেই চলেছে, সেখানে দ্বীপ থেকে পরিবেশ অধিদফতরের অফিস গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। পরিবেশ অধিদফতরের কক্সবাজার অফিসের একজন কর্মকর্তা কারণ হিসেবে জানিয়েছেন জনবল সংকটের কথা। কিন্তু জনবল সংকটের দোহাই দিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রবাল দ্বীপ থেকে এভাবে পরিবেশ অধিদফতরের অফিস গুটিয়ে ফেলার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা মনে করি সেন্টমার্টিন দ্বীপের স্বার্থেই সেখানে পরিবেশ অধিদফতরের একটি অফিস থাকা জরুরি। এর মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি বজায় রাখা সম্ভব হবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপে অবৈধ স্থাপনা থাকলেও এসব উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান হয় না। সমকালের প্রতিবেদন থেকে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বরের একটি অভিযানের কথা জানা যায়। সেই অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ দখলে থাকা ৫৫ একর জমি উদ্ধার করা হয়। কিন্তু তত্ত্বাবধানের অভাবে সেই উদ্ধারকৃত জমি আবারও দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। আমরা মনে করি, সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে নিয়মিত অবৈধ স্থাপনা উদ্ধার অভিযান জরুরি। এ ছাড়া দ্বীপের পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। পরিবেশ অধিদফতরকে এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। জনবল সংকটের যে বিষয়টি উঠে এসেছে তার সমাধানও করতে হবে। সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষায় সমন্বিত কার্যক্রম জরুরি।
No comments