মোজাফ্ফর আহমদের স্মরণসভায় বক্তারা-হার মেনেছিল ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থ
কেউ কি ঘুণাক্ষরেও কখনো জানতে পেরেছিল, মোজাফ্ফর আহমদ গত ১০টি বছর ধরে প্রাণঘাতী এক রোগে ভুগছিলেন? এই এক দশকজুড়ে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বারবার হার মেনেছে মোজাফ্ফর আহমদের কাজের প্রতি অদম্য স্পৃহার কাছে।
তিনি ছিলেন এমনই এক মানুষ, প্রকৃতিও যাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত হয়ে গোটা পৃথিবীকে বলে, ‘এই হলো মানুষ’।
গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে এভাবেই ৫৫ বছরের প্রিয় সাথিকে বিদায় জানালেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, ক্রমশ ক্ষয় হতে থাকা শরীর নিয়েও গত ১০ বছরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি প্রতিষ্ঠান—ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। শুধু সভা-সেমিনার করেই দায়িত্ব সারেননি, এসব দায়িত্ববোধ আর অঙ্গীকারের জায়গা থেকে নিরলস কাজ করেছেন। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে থেকেছেন।
বাপা, টিআইবি, সুজন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি, সিপিডি, আইন ও সালিশ কেন্দ্র ও আইবিএ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক স্মরণসভায় সদ্য প্রয়াত মোজাফ্ফর আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মোজাফ্ফর আহমদ এমনই একজন মানুষ, যিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপটে অভিভূত না হয়ে দেশের জন্য, দশের জন্য আজীবন দায়বদ্ধ থেকেছেন। দেশে আজকে আমরা মরা বুড়িগঙ্গা দেখি, তবু এখনো যে বুড়িগঙ্গাটা বেঁচে আছে, এখনো যে দেশে মোটামুটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, দুর্নীতিবিরোধী চেতনা এখনো যে বিরাজমান, সে জন্য একজনের কথা যদি স্বীকার করতে হয়, আমি মোজাফ্ফর আহমদের কথা বলব।’
মোজাফ্ফর আহমদের হঠাৎ প্রয়াণে শোকস্তব্ধ স্ত্রী রওশন জাহান। তবু স্রষ্টার প্রতি তাঁর কোনো অনুযোগ নেই বলে জানান রওশন। কারণ, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ক্ষুদ্র, ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি দেশ ও দশের জন্য নিরলস শ্রম দিয়ে যেতে পেরেছেন। স্রষ্টা তাঁকে আলোকিত মন দিয়েছিলেন, সাহস দিয়েছিলেন। তিনি একটি স্বনির্ভর জীবন যাপন করতেন, শেষ দিন পর্যন্ত তিনি শারীরিক, মানসিকভাবে স্বনির্ভর ছিলেন। ন্যায়ভিত্তিক, পরিবেশবান্ধব, দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গড়তে মোজাফ্ফর আহমদ যে সুকঠিন পথে হেঁটেছেন, সবাইকে তিনি সেই যাত্রা অব্যাহত রাখতে অনুরোধ জানান।
মোজাফ্ফর আহমদের জীবনে রওশন জাহানের অবদানের কথা উল্লেখ করে ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় একবার মোজাফ্ফর আহমদ বলেছিলেন, তাঁর জীবন নিয়ন্ত্রিত হয়েছে তিনটি এফ দিয়ে, ফেইথ (বিশ্বাস), ফাদারল্যান্ড (জন্মভূমি) ও ফ্যামিলি (পরিবার)। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ধর্ম, জন্মভূমি আর মা-ভাই-বোনের প্রতি অকুণ্ঠচিত্তে তিনি তাঁর কর্তব্য পালন করে গেছেন। নিজের সততা আর নীতির প্রতি অবিচল আস্থা তাঁকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন মোজাফ্ফর আহমদকে বাঙালি মূল্যবোধের ধারক-বাহক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘কঠিন সময়ে অনেকে মূল্যবোধ থেকে সরে এসেছে। তিনি কখনো সরে আসেননি। সময়মতো যা বলা দরকার, তিনি তা বলতে দ্বিধাবোধ করেননি। তিনি আমাদের তরুণ সমাজের জন্য রোল মডেল। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করলে যতগুলো রোগ আছে, এ সমাজে তরুণেরা সেসব রোগ প্রতিহত করতে পারবে।’
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জামিলুর রেজা চৌধুরী, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান কর্মক্ষেত্রে মোজাফ্ফর আহমদ কীভাবে তাঁদের ‘দীক্ষাগুরু’ হয়ে উঠেছিলেন, সে সম্পর্কে বক্তব্য দেন।
জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ঢাকা মহানগরের জন্য যখন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার কাজ চলছিল, তখন তাঁর শরীর ভালো যাচ্ছিল না। তবু প্রতিটি বৈঠকে তিনি হাজির হতেন। তাঁর কর্মস্পৃহা ঈর্ষণীয়। একজীবনে তাঁর যে অর্জন, কয়েক জীবনেও তা অর্জন করা দুরূহ।
সুলতানা কামাল তাঁর জীবনে মোজাফ্ফর আহমদ উজ্জ্বল আসনে আসীন মন্তব্য করে বলেন, একজন মানুষের হয়ে ওঠায় শুধু মা-বাবার অবদান থাকে না, আরও অনেকে তাঁকে পূর্ণাঙ্গ করে তোলে। সুলতানা কামাল তাঁর নিষ্ঠা, ব্যক্তিত্ব, সততার বোধ তৈরিতে মোজাফ্ফর আহমদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
ইফতেখারুজ্জামানের মতে, তাঁর পেশাগত জীবনের স্বর্ণোজ্জ্বল সময়ের গুরু মোজাফ্ফর আহমদ। সরকারের কাছে তাঁদের মতো মানুষেরা কখনো আদৃত, কখনো ঘৃণিত। দৃঢ়তার সঙ্গে, আইনানুগভাবে কীভাবে সত্যের পথে থাকতে হয়, সে শিক্ষা মোজাফ্ফর আহমদের কাছ থেকে পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে একটি ঘটনার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, একুশে পদক কারা পেতে পারেন, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছিল। অনেকের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল, নির্বাচকদের মনে অনেকের বিষয়ে কিন্তু ছিল, বিতর্ক ছিল। মোজাফ্ফর আহমদ একমাত্র ব্যক্তি, যাঁর সম্পর্কে কেউ কখনো প্রশ্ন তোলেননি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ করেন মোজাফ্ফর আহমদের নামে একটি ‘চেয়ার’ প্রবর্তন করার।
শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এ সময়ের একজন ব্যতিক্রমী মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করেন মোজাফ্ফর আহমদকে। তিনি বলেন, ‘আমরা এমনভাবে আপস করে যাচ্ছি। অতি সামান্য দামে বিক্রি হয়ে গেলাম। দূষিত রাজনৈতিক সমাজ সিভিল সোসাইটিকে গ্রাস করে ফেলল। কিন্তু মোজাফ্ফর আহমদ শেষ পর্যন্ত বিক্রি হননি।’
নাগরিক শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাপার সভাপতি এ এস এম শাহজাহান, সাবেক ব্যাংকার খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতির মহাসচিব সৈয়দ মো. শাহেদ, আইবিএ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হাসান, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শোকবাণী পড়ে শোনান বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হাবীব। রাষ্ট্র ও সমাজের সম্মানীয় অগণন প্রতিনিধি গতকাল শোকসভায় উপস্থিত থেকে মোজাফ্ফর আহমদের প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে এভাবেই ৫৫ বছরের প্রিয় সাথিকে বিদায় জানালেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, ক্রমশ ক্ষয় হতে থাকা শরীর নিয়েও গত ১০ বছরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি প্রতিষ্ঠান—ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। শুধু সভা-সেমিনার করেই দায়িত্ব সারেননি, এসব দায়িত্ববোধ আর অঙ্গীকারের জায়গা থেকে নিরলস কাজ করেছেন। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে থেকেছেন।
বাপা, টিআইবি, সুজন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি, সিপিডি, আইন ও সালিশ কেন্দ্র ও আইবিএ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক স্মরণসভায় সদ্য প্রয়াত মোজাফ্ফর আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মোজাফ্ফর আহমদ এমনই একজন মানুষ, যিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপটে অভিভূত না হয়ে দেশের জন্য, দশের জন্য আজীবন দায়বদ্ধ থেকেছেন। দেশে আজকে আমরা মরা বুড়িগঙ্গা দেখি, তবু এখনো যে বুড়িগঙ্গাটা বেঁচে আছে, এখনো যে দেশে মোটামুটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, দুর্নীতিবিরোধী চেতনা এখনো যে বিরাজমান, সে জন্য একজনের কথা যদি স্বীকার করতে হয়, আমি মোজাফ্ফর আহমদের কথা বলব।’
মোজাফ্ফর আহমদের হঠাৎ প্রয়াণে শোকস্তব্ধ স্ত্রী রওশন জাহান। তবু স্রষ্টার প্রতি তাঁর কোনো অনুযোগ নেই বলে জানান রওশন। কারণ, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ক্ষুদ্র, ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি দেশ ও দশের জন্য নিরলস শ্রম দিয়ে যেতে পেরেছেন। স্রষ্টা তাঁকে আলোকিত মন দিয়েছিলেন, সাহস দিয়েছিলেন। তিনি একটি স্বনির্ভর জীবন যাপন করতেন, শেষ দিন পর্যন্ত তিনি শারীরিক, মানসিকভাবে স্বনির্ভর ছিলেন। ন্যায়ভিত্তিক, পরিবেশবান্ধব, দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গড়তে মোজাফ্ফর আহমদ যে সুকঠিন পথে হেঁটেছেন, সবাইকে তিনি সেই যাত্রা অব্যাহত রাখতে অনুরোধ জানান।
মোজাফ্ফর আহমদের জীবনে রওশন জাহানের অবদানের কথা উল্লেখ করে ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় একবার মোজাফ্ফর আহমদ বলেছিলেন, তাঁর জীবন নিয়ন্ত্রিত হয়েছে তিনটি এফ দিয়ে, ফেইথ (বিশ্বাস), ফাদারল্যান্ড (জন্মভূমি) ও ফ্যামিলি (পরিবার)। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ধর্ম, জন্মভূমি আর মা-ভাই-বোনের প্রতি অকুণ্ঠচিত্তে তিনি তাঁর কর্তব্য পালন করে গেছেন। নিজের সততা আর নীতির প্রতি অবিচল আস্থা তাঁকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন মোজাফ্ফর আহমদকে বাঙালি মূল্যবোধের ধারক-বাহক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘কঠিন সময়ে অনেকে মূল্যবোধ থেকে সরে এসেছে। তিনি কখনো সরে আসেননি। সময়মতো যা বলা দরকার, তিনি তা বলতে দ্বিধাবোধ করেননি। তিনি আমাদের তরুণ সমাজের জন্য রোল মডেল। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করলে যতগুলো রোগ আছে, এ সমাজে তরুণেরা সেসব রোগ প্রতিহত করতে পারবে।’
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জামিলুর রেজা চৌধুরী, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান কর্মক্ষেত্রে মোজাফ্ফর আহমদ কীভাবে তাঁদের ‘দীক্ষাগুরু’ হয়ে উঠেছিলেন, সে সম্পর্কে বক্তব্য দেন।
জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ঢাকা মহানগরের জন্য যখন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার কাজ চলছিল, তখন তাঁর শরীর ভালো যাচ্ছিল না। তবু প্রতিটি বৈঠকে তিনি হাজির হতেন। তাঁর কর্মস্পৃহা ঈর্ষণীয়। একজীবনে তাঁর যে অর্জন, কয়েক জীবনেও তা অর্জন করা দুরূহ।
সুলতানা কামাল তাঁর জীবনে মোজাফ্ফর আহমদ উজ্জ্বল আসনে আসীন মন্তব্য করে বলেন, একজন মানুষের হয়ে ওঠায় শুধু মা-বাবার অবদান থাকে না, আরও অনেকে তাঁকে পূর্ণাঙ্গ করে তোলে। সুলতানা কামাল তাঁর নিষ্ঠা, ব্যক্তিত্ব, সততার বোধ তৈরিতে মোজাফ্ফর আহমদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
ইফতেখারুজ্জামানের মতে, তাঁর পেশাগত জীবনের স্বর্ণোজ্জ্বল সময়ের গুরু মোজাফ্ফর আহমদ। সরকারের কাছে তাঁদের মতো মানুষেরা কখনো আদৃত, কখনো ঘৃণিত। দৃঢ়তার সঙ্গে, আইনানুগভাবে কীভাবে সত্যের পথে থাকতে হয়, সে শিক্ষা মোজাফ্ফর আহমদের কাছ থেকে পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে একটি ঘটনার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, একুশে পদক কারা পেতে পারেন, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছিল। অনেকের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল, নির্বাচকদের মনে অনেকের বিষয়ে কিন্তু ছিল, বিতর্ক ছিল। মোজাফ্ফর আহমদ একমাত্র ব্যক্তি, যাঁর সম্পর্কে কেউ কখনো প্রশ্ন তোলেননি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ করেন মোজাফ্ফর আহমদের নামে একটি ‘চেয়ার’ প্রবর্তন করার।
শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এ সময়ের একজন ব্যতিক্রমী মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করেন মোজাফ্ফর আহমদকে। তিনি বলেন, ‘আমরা এমনভাবে আপস করে যাচ্ছি। অতি সামান্য দামে বিক্রি হয়ে গেলাম। দূষিত রাজনৈতিক সমাজ সিভিল সোসাইটিকে গ্রাস করে ফেলল। কিন্তু মোজাফ্ফর আহমদ শেষ পর্যন্ত বিক্রি হননি।’
নাগরিক শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাপার সভাপতি এ এস এম শাহজাহান, সাবেক ব্যাংকার খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতির মহাসচিব সৈয়দ মো. শাহেদ, আইবিএ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হাসান, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শোকবাণী পড়ে শোনান বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হাবীব। রাষ্ট্র ও সমাজের সম্মানীয় অগণন প্রতিনিধি গতকাল শোকসভায় উপস্থিত থেকে মোজাফ্ফর আহমদের প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
No comments