অত্যাচার সইছে ইছামতি by অমিত বসু
ইছামতির ইচ্ছের কোনো দাম নেই, তার মরা-বাঁচায় কিছু যায়-আসে না। বাঁচে বাঁচুক, মরে মরুক, কার কী করার আছে! শরিকি বাড়ির মতো। যে যার নিজের মতো ভোগ করছে, ভালোমন্দের দায় নেই। ভেঙে পড়লে পড়বে। তাতে যে লোকগুলো মরবে, সে খেয়াল থাকলে তো! স্বার্থপরতার সীমাবদ্ধতায় ভবিষ্যৎ অন্ধ।
টাকির কাছে ইছামতির পাড়ে সার সার নৌকা। মাথায় মাথায় পাট তুলছে মেয়েরা। অর্থকরী ফসলে ভরে উঠছে পাটাতন। দিনের কাজ শেষে পাটে বসছে সূর্য। মোট বওয়ার কাজ ফুরোতেই ঘরে ফেরার তাড়া। আমিনা বিবির পা ছুটছে খরগোশের গতিতে। কী করবে? ঘরে ছেলেমেয়েরা যে মায়ের প্রতীক্ষায় আকুল। কথা বলার সময় কই! তবু জিজ্ঞেস করলাম, ইছামতির চেহারা দেখে তোমার কষ্ট হয় না? ঝটতি জবাব, হয় বৈকি। এ তো শুধু নদী নয়, আমার মা। সবাই মিলে শুষছে। দিচ্ছে না কিছুই। ভাগের মা গঙ্গা পায় না। না, আর কথা বলার সময় কোথায়? সন্তানের টানে ঘরমুখী। সেও যে মা।
খাল কেটে সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে ইছামতীকে। অগভীর হচ্ছে। বৃষ্টি ধরে রাখার ক্ষমতা নেই। বর্ষায় ফেঁপে উঠে লোকের ঘরে ঢুকছে। বর্ষায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত একাকার। ইছামতি পাসপোর্ট-ভিসার পরোয়া করে না। ইমিগ্রেশন-কাস্টমসকে কলা দেখায়। আশপাশের ইটখোলার মালিকরা ইছামতির খবর রাখে। না রাখলে চলবে কেন? এ নদীই যে তাদের দানা-পানি জোগায়। ইছামতি আছে বলে তাই। নইলে হায় হায় করে কপাল চাপড়াত। অন্যতম মালিক বিধান মশাইকে জিজ্ঞেস করলাম, নদী মরলে খাবেন কী? হতাশ উত্তর, খাব কী। না খেয়ে মরব! যে অন্ন জোগাচ্ছে তার প্রতি কোনো দায় নেই? আমরা কী করব? দুই দেশের সরকার বুঝবে।
সবাই তাই। লাভের হিসাব ষোলো আনা। দেওয়ার বেলায় কচু। উঁচু উঁচু বাড়ি উঠছে দুই পাশে। পাড় কিন্তু আলগা। নদীর দাপটে দীর্ণবিদীর্ণ হবে যেকোনো দিন। তবু ভাঙনের তীরে ঘর বেঁধে আসছে। কাছের সুখেই স্বস্তি। দূরের কথা ভাববে কে!
হ্যাঁ, দুই দেশের সরকার ভাবছে। শুধু ভাবা নয়, বলছেও অনেক কথা। করছে কই? বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক দীর্ঘকাল বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হয়েছে। ভাঙন রোধের প্ল্যানিং চলছে। অনেক পরিকল্পনা টাকায় আটকাচ্ছে। ইছামতি সংস্কারে ভারত টাকা দেবে বলেছে। বলা আর সত্যি সত্যি দেওয়া, এক কথা নয়। কাজে-কথায় বিস্তর ফারাক। মাঝে শক্ত বাঁধ। তা ভাঙার দম নেই নদীরও। আইন, প্রশাসন, কূটনীতির ফাঁসে নাভিশ্বাস। স্থানীয় রাজনীতিকরা ভাবছেন, ইছামতির স্বাস্থ্য ফিরলে তাঁদের কী লাভ? নদীর জোয়ার-ভাটা কমে যাচ্ছে, তাঁদের রুজি-রোজগার বন্ধ হলে সর্বনাশ। খাল বৃদ্ধিতে যদি সেচ চৌপাট হয় তখন জমি মালিকরা কী ছেড়ে কথা বলবেন? ইটখোলার লোকরাও প্রতিবাদের ঝড় তুলবে। সামলাবে কে? এত ক্ষতি ঘাড়ে নিয়ে তারা কি ভোট দিতে আসবে। ইছামতীর জোয়ারে রাজনীতি-স্বার্থ ভাসলে, বাঁচার জন্য খড়কুটোও জুটবে না।
শারদ উৎসবে ইছামতির দুই পাড়ে জনজোয়ার। প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে বাংলাদেশ-ভারতের মানুষের উপচেপড়া ভিড়। প্রাণের স্রোতে দুই দেশ এখন এক। উচ্ছ্বাসের আড়ালে মৃত্যু লুকিয়ে থাকে। অন্যমনস্ক দর্শনার্থী নদীতে তলিয়েও যায়। গত বছরও গেছে। দোষ ইছামতির নয়। মানুষ আত্মসাতের ইচ্ছে তার কখনোই নেই। বরং বাঁচাতে চায়। তার বুকে দাঁড় বেয়ে লোকে দূর-দূরান্তে পেঁৗছায়। এপার-ওপারের মানুষকে ধমনিতে মিলিয়ে দেয়।
ইছামতি শুধু দিচ্ছে, নিচ্ছে না কিছুই। এ ভাবনাটা এত দিন মাথায় আসেনি বাঙালির। এবার এসেছে। লজ্জাও পেয়েছে। নদী উদার, মানুষ স্বার্থপর_মানতে দ্বিধা ছিল। মেনেছে সেটাও। কলকাতায় যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। শুধু কথায় কি নদীর ব্যথা যাবে? ১৯৭৪-এ ইন্দিরা-মুজিব চুক্তিতে যৌথ নদী কমিশন গঠিত হওয়ার ৩৮ বছর পরও অবস্থা যে কে সেই! নদীর মড়ক অব্যাহত। নদী মৃত্যুতে অশ্রু ফেলার কেউ নেই। শুধু রাজনীতি-কূটনীতির কচকচি। হৃদয় দিয়ে দেখে না কেউ।
মুজিবের মৃত্যুর পর যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক প্রায় থমকে যায়। বাংলাদেশের ৫৪টি নদীর ওপর মৃত্যুর ছায়া দীর্ঘতর হয়। বিপর্যয়ের গন্ধ পেয়ে বাংলাদেশ সদয় হলেও ভারত নীরব থাকে। ভারতের মধ্যে এখন নদী বিবাদ তুঙ্গে। দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্নাটক কাবেরীর দাবিতে বিতর্কের ঝড় তুলেছে। কেন্দ্রীয় সরকার গা বাঁচিয়ে বলেছে, এতে আমাদের কিছু করার নেই। এটা তোমাদের ব্যাপার। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মিটিয়ে নাও। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদী বাঁধ দেওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য ছিল, খোদার ওপর খোদকারীর দরকার কী? নদী বইছে, বয়ে যাক।
তাদের যুক্তি ভুল ছিল না। আজ উন্নত দেশগুলো সে কথা মানছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেনে নদী বাঁধ দেওয়া নিষিদ্ধ। সব দেশই দরিয়াকে দাবানোর আগে দশবার ভাবছে। নদীর মধ্যের রাস্তা রেখাটা যে অবৈজ্ঞানিক, ভারতও বুঝেছে। ফারাক্কা ব্যারাজ তার চরম উদাহরণ। মওলানা ভাসানী যখন ব্যারাজবিরোধী আন্দোলন করেছিলেন, তখন অনেকে নাক কুঁচকে ছিলেন। এখন সত্যিটা উপলব্ধি করছেন। মুর্শিদাবাদ, মালদহের নদীগুলো গতিপথ পরিবর্তন করে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। ঘর ভাঙছে, জনপদ বিলুপ্ত করছে। ১৯৯৬তে গঙ্গাচুক্তির পর বাংলাদেশের কিছুটা লাভ হলেও দুই দেশের ক্ষতির মাত্রা তত দিনে অনেক বেড়ে গেছে।
এত দিনে টনক নড়েছে। নদী কমিশনের ভাবনায় বেশি গুরুত্ব পেয়েছে নদী ভাঙন। মনু, মুহুরি, খোয়াই, ধরলা, সঙ্কোশ, গুমতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনার মীর সাজ্জাদ হুসেন জানিয়েছেন, আমরা ঠিক রাস্তায় এগোচ্ছি। কোনো নদী যাতে না মরে সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। ভারতের গঙ্গা কমিশনার দেবেন্দ্র শুক্ল বলেছেন, মৃত্যুপথযাত্রীকে বাঁচাতে যেমন মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়, আমরা সেভাবেই সংগঠিত হয়ে নদীর স্বাস্থ্য রক্ষায় ব্রতী হচ্ছি। সাফল্য আসবেই।
সমস্যা অন্য জায়গায়। সরকারি কথায় মানুষের ভরসা কমছে। তবু বিশ্বাস করতেই হয়। সেটা ছাড়া নদী কেন, কোনো মানুষই বাঁচতে পারে না।
লেখক : কলকাতার সাংবাদিক
খাল কেটে সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে ইছামতীকে। অগভীর হচ্ছে। বৃষ্টি ধরে রাখার ক্ষমতা নেই। বর্ষায় ফেঁপে উঠে লোকের ঘরে ঢুকছে। বর্ষায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত একাকার। ইছামতি পাসপোর্ট-ভিসার পরোয়া করে না। ইমিগ্রেশন-কাস্টমসকে কলা দেখায়। আশপাশের ইটখোলার মালিকরা ইছামতির খবর রাখে। না রাখলে চলবে কেন? এ নদীই যে তাদের দানা-পানি জোগায়। ইছামতি আছে বলে তাই। নইলে হায় হায় করে কপাল চাপড়াত। অন্যতম মালিক বিধান মশাইকে জিজ্ঞেস করলাম, নদী মরলে খাবেন কী? হতাশ উত্তর, খাব কী। না খেয়ে মরব! যে অন্ন জোগাচ্ছে তার প্রতি কোনো দায় নেই? আমরা কী করব? দুই দেশের সরকার বুঝবে।
সবাই তাই। লাভের হিসাব ষোলো আনা। দেওয়ার বেলায় কচু। উঁচু উঁচু বাড়ি উঠছে দুই পাশে। পাড় কিন্তু আলগা। নদীর দাপটে দীর্ণবিদীর্ণ হবে যেকোনো দিন। তবু ভাঙনের তীরে ঘর বেঁধে আসছে। কাছের সুখেই স্বস্তি। দূরের কথা ভাববে কে!
হ্যাঁ, দুই দেশের সরকার ভাবছে। শুধু ভাবা নয়, বলছেও অনেক কথা। করছে কই? বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক দীর্ঘকাল বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হয়েছে। ভাঙন রোধের প্ল্যানিং চলছে। অনেক পরিকল্পনা টাকায় আটকাচ্ছে। ইছামতি সংস্কারে ভারত টাকা দেবে বলেছে। বলা আর সত্যি সত্যি দেওয়া, এক কথা নয়। কাজে-কথায় বিস্তর ফারাক। মাঝে শক্ত বাঁধ। তা ভাঙার দম নেই নদীরও। আইন, প্রশাসন, কূটনীতির ফাঁসে নাভিশ্বাস। স্থানীয় রাজনীতিকরা ভাবছেন, ইছামতির স্বাস্থ্য ফিরলে তাঁদের কী লাভ? নদীর জোয়ার-ভাটা কমে যাচ্ছে, তাঁদের রুজি-রোজগার বন্ধ হলে সর্বনাশ। খাল বৃদ্ধিতে যদি সেচ চৌপাট হয় তখন জমি মালিকরা কী ছেড়ে কথা বলবেন? ইটখোলার লোকরাও প্রতিবাদের ঝড় তুলবে। সামলাবে কে? এত ক্ষতি ঘাড়ে নিয়ে তারা কি ভোট দিতে আসবে। ইছামতীর জোয়ারে রাজনীতি-স্বার্থ ভাসলে, বাঁচার জন্য খড়কুটোও জুটবে না।
শারদ উৎসবে ইছামতির দুই পাড়ে জনজোয়ার। প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে বাংলাদেশ-ভারতের মানুষের উপচেপড়া ভিড়। প্রাণের স্রোতে দুই দেশ এখন এক। উচ্ছ্বাসের আড়ালে মৃত্যু লুকিয়ে থাকে। অন্যমনস্ক দর্শনার্থী নদীতে তলিয়েও যায়। গত বছরও গেছে। দোষ ইছামতির নয়। মানুষ আত্মসাতের ইচ্ছে তার কখনোই নেই। বরং বাঁচাতে চায়। তার বুকে দাঁড় বেয়ে লোকে দূর-দূরান্তে পেঁৗছায়। এপার-ওপারের মানুষকে ধমনিতে মিলিয়ে দেয়।
ইছামতি শুধু দিচ্ছে, নিচ্ছে না কিছুই। এ ভাবনাটা এত দিন মাথায় আসেনি বাঙালির। এবার এসেছে। লজ্জাও পেয়েছে। নদী উদার, মানুষ স্বার্থপর_মানতে দ্বিধা ছিল। মেনেছে সেটাও। কলকাতায় যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। শুধু কথায় কি নদীর ব্যথা যাবে? ১৯৭৪-এ ইন্দিরা-মুজিব চুক্তিতে যৌথ নদী কমিশন গঠিত হওয়ার ৩৮ বছর পরও অবস্থা যে কে সেই! নদীর মড়ক অব্যাহত। নদী মৃত্যুতে অশ্রু ফেলার কেউ নেই। শুধু রাজনীতি-কূটনীতির কচকচি। হৃদয় দিয়ে দেখে না কেউ।
মুজিবের মৃত্যুর পর যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক প্রায় থমকে যায়। বাংলাদেশের ৫৪টি নদীর ওপর মৃত্যুর ছায়া দীর্ঘতর হয়। বিপর্যয়ের গন্ধ পেয়ে বাংলাদেশ সদয় হলেও ভারত নীরব থাকে। ভারতের মধ্যে এখন নদী বিবাদ তুঙ্গে। দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্নাটক কাবেরীর দাবিতে বিতর্কের ঝড় তুলেছে। কেন্দ্রীয় সরকার গা বাঁচিয়ে বলেছে, এতে আমাদের কিছু করার নেই। এটা তোমাদের ব্যাপার। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মিটিয়ে নাও। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদী বাঁধ দেওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য ছিল, খোদার ওপর খোদকারীর দরকার কী? নদী বইছে, বয়ে যাক।
তাদের যুক্তি ভুল ছিল না। আজ উন্নত দেশগুলো সে কথা মানছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেনে নদী বাঁধ দেওয়া নিষিদ্ধ। সব দেশই দরিয়াকে দাবানোর আগে দশবার ভাবছে। নদীর মধ্যের রাস্তা রেখাটা যে অবৈজ্ঞানিক, ভারতও বুঝেছে। ফারাক্কা ব্যারাজ তার চরম উদাহরণ। মওলানা ভাসানী যখন ব্যারাজবিরোধী আন্দোলন করেছিলেন, তখন অনেকে নাক কুঁচকে ছিলেন। এখন সত্যিটা উপলব্ধি করছেন। মুর্শিদাবাদ, মালদহের নদীগুলো গতিপথ পরিবর্তন করে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। ঘর ভাঙছে, জনপদ বিলুপ্ত করছে। ১৯৯৬তে গঙ্গাচুক্তির পর বাংলাদেশের কিছুটা লাভ হলেও দুই দেশের ক্ষতির মাত্রা তত দিনে অনেক বেড়ে গেছে।
এত দিনে টনক নড়েছে। নদী কমিশনের ভাবনায় বেশি গুরুত্ব পেয়েছে নদী ভাঙন। মনু, মুহুরি, খোয়াই, ধরলা, সঙ্কোশ, গুমতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনার মীর সাজ্জাদ হুসেন জানিয়েছেন, আমরা ঠিক রাস্তায় এগোচ্ছি। কোনো নদী যাতে না মরে সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। ভারতের গঙ্গা কমিশনার দেবেন্দ্র শুক্ল বলেছেন, মৃত্যুপথযাত্রীকে বাঁচাতে যেমন মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়, আমরা সেভাবেই সংগঠিত হয়ে নদীর স্বাস্থ্য রক্ষায় ব্রতী হচ্ছি। সাফল্য আসবেই।
সমস্যা অন্য জায়গায়। সরকারি কথায় মানুষের ভরসা কমছে। তবু বিশ্বাস করতেই হয়। সেটা ছাড়া নদী কেন, কোনো মানুষই বাঁচতে পারে না।
লেখক : কলকাতার সাংবাদিক
No comments