চরাচর-বাবা দিবস by শরাফত হোসেন
জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বাবা দিবস। সে হিসাবে এ বছর ১৯ জুন বিশ্ব বাবা দিবস। তবে প্রথম বাবা দিবসটি কিন্তু পালিত হয়েছিল ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায়। ইতিহাসে অবশ্য ফেয়ারমন্টের গির্জায় বাবা দিবস পালনের স্বীকৃতি নেই।
বরং ইতিহাস সোনার স্মার্ট ডোডের উদ্যোগে ১৯১০ সালের ১৯ জুন বাবা দিবস পালনের সূত্রপাত বলে স্বীকার করে নেয়। জানা যায়, বাবা দিবস পালনের সূত্রপাতকারী সোনার ডোডের জ�� ১৮৮২ সালের ১৮ ফেব্র�য়ারি। তাঁর বাবা উইলিয়াম জেকসন স্মার্ট (১৮৪২-১৯১৯) ছিলেন কৃষক, তবে মার্কিন গৃহযুদ্ধের সময় তিনি বীরত্বের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন ডোডের মা অ্যালেন ভিক্টোরিয়া চেক স্মার্ট (১৮৫১-১৮৯৮) পুরো পরিবার নিয়ে চলে যান ওয়াশিংটনের স্পোকেনে এবং সেখানেই জ�� হয় সোনার স্মার্ট ডোডের। যখন তাঁর বয়স ১৬, তখন তাঁর মা ষষ্ঠ সন্তান জ�� দিতে গিয়ে মারা যান। পরিবারে সোনারই ছিলেন একমাত্র কন্যা। বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের স্রোত নানা বাঁকে মিশে এক মোহনায় মিলিত হয়। বাবা উইলিয়াম স্মার্টকে তিনি মাঝেমধ্যে অস্থির করে তুলতেন। সোনার স্মার্ট বিয়ে করেন জন ব্রোস ডোডকে (১৮৭০-১৯৪৫)। তাঁদের কোল আলো করে এল সন্তান জ্যাক ডোড। সোনার ছোটবেলা থেকেই নিজের সন্তানকে বাবার জন্য ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিতে থাকেন। কেননা মা হারানো পরিবারে বড় হয়েছেন সোনার।
�বাবা দিবস� ঘোষণার বিষয়টি সোনারের মাথায় আসে ১৯১০ সালের মা দিবসে। এ দিবসটি পালিত হয় মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারে। মা দিবসের অনুষ্ঠানে ওই বছর চার্চে যান সোনার। অনুষ্ঠানে এসেই তাঁর মনে হয়, মা দিবসের মতো বাবাদের জন্যও একটি দিবস করা প্রয়োজন। এ ভাবনা থেকেই স্পোকেনের মন্ত্রিসভার কাছে তিনি তাঁর নিজের বাবার জ��দিন ৫ জুনকে বাবা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব পাঠান। তাঁর প্রস্তাব প্রশংসিত হলেও মন্ত্রিসভা ৫ জুন নয়, জুন মাসের তৃতীয় রবিবারকে বাবা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯১০ সালের ১৯ জুন প্রথম বাবা দিবস উদ্যাপিত হয় স্পোকেন শহরে। বাবা দিবস বেশ টানাপড়েনের মধ্য দিয়েই পালিত হতো। মা দিবস নিয়ে মানুষ যতটা উৎসাহ দেখাত, বাবা দিবসে তেমনটা দেখাত না; বরং বাবা দিবসের বিষয়টি তাদের কাছে বেশ হাস্যকরই ছিল। ধীরে ধীরে অবস্থা পাল্টায়।
আমরা আজকাল বাবাকে নানা শব্দে ডাকলেও একদা বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে একমাত্র আব্বা শব্দটিই প্রচলিত ছিল। আর এই আব্বা শব্দটি এসেছে সম্ভবত হিব্র� ভাষায় প্রচলিত �আব্বাহ্� থেকে। বাংলা বাবার কাছাকাছি একটি সম্বোধন করে চীনারা, যেন ওরা আমাদের বাবাকে ছোট করে নিয়ে �বা� বলে ডাকে। জার্মান ভাষায় বাবার প্রতিশব্দটি হচ্ছে �ফ্যাট্যা�, ড্যানিশ ভাষায় �ফার�, আফ্রিকান ভাষায় �ভাদের� হচ্ছে বাবা! কানাডিয়ান ক্রি ভাষায় বাবা হচ্ছে �পাপা�, ক্রোয়েশিয়ানে �ওটেক�। পর্তুগিজ ভাষায় বাবা ডাক হচ্ছে �পাই�। ডাচ্ ভাষায় পাপা, ভাডের আর পাপাই�এই তিনটি হচ্ছে বাবা ডাক। ফিলিপিনো ভাষায় বাবা হচ্ছে �তাতেই�, �ইতেই�, �তেয়� ও �আমা�। সবচেয়ে বেশি প্রতিশব্দ বোধ হয় ইংরেজি ভাষায়ই, ইংরেজরা বাবাকে ডাকে �ফাদার�, �ড্যাড�, �ড্যাডি�, �পপ�, �পপা�, �পাপা� ইত্যাদি! ইংরেজি এসব শব্দ ক্রমাগত আমরা আ�স্থ করে নিচ্ছি। অবশ্য পূর্ব আফ্রিকায় নাকি বাবাকে �বাবা� বলেই ডাকা হয়।
যদিও আমাদের এখানে এসব দিবস নিয়ে এখনো যথেষ্ট দ্বিধা-সংকোচ রয়ে গেছে। আসুন, আমরা সংকোচের বিহ্বলতা কাটিয়ে এবার বাবা দিবসে প্রত্যেকেই যাঁর যাঁর বাবাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চমকে দিই।
শরাফত হোসেন
�বাবা দিবস� ঘোষণার বিষয়টি সোনারের মাথায় আসে ১৯১০ সালের মা দিবসে। এ দিবসটি পালিত হয় মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারে। মা দিবসের অনুষ্ঠানে ওই বছর চার্চে যান সোনার। অনুষ্ঠানে এসেই তাঁর মনে হয়, মা দিবসের মতো বাবাদের জন্যও একটি দিবস করা প্রয়োজন। এ ভাবনা থেকেই স্পোকেনের মন্ত্রিসভার কাছে তিনি তাঁর নিজের বাবার জ��দিন ৫ জুনকে বাবা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব পাঠান। তাঁর প্রস্তাব প্রশংসিত হলেও মন্ত্রিসভা ৫ জুন নয়, জুন মাসের তৃতীয় রবিবারকে বাবা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯১০ সালের ১৯ জুন প্রথম বাবা দিবস উদ্যাপিত হয় স্পোকেন শহরে। বাবা দিবস বেশ টানাপড়েনের মধ্য দিয়েই পালিত হতো। মা দিবস নিয়ে মানুষ যতটা উৎসাহ দেখাত, বাবা দিবসে তেমনটা দেখাত না; বরং বাবা দিবসের বিষয়টি তাদের কাছে বেশ হাস্যকরই ছিল। ধীরে ধীরে অবস্থা পাল্টায়।
আমরা আজকাল বাবাকে নানা শব্দে ডাকলেও একদা বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে একমাত্র আব্বা শব্দটিই প্রচলিত ছিল। আর এই আব্বা শব্দটি এসেছে সম্ভবত হিব্র� ভাষায় প্রচলিত �আব্বাহ্� থেকে। বাংলা বাবার কাছাকাছি একটি সম্বোধন করে চীনারা, যেন ওরা আমাদের বাবাকে ছোট করে নিয়ে �বা� বলে ডাকে। জার্মান ভাষায় বাবার প্রতিশব্দটি হচ্ছে �ফ্যাট্যা�, ড্যানিশ ভাষায় �ফার�, আফ্রিকান ভাষায় �ভাদের� হচ্ছে বাবা! কানাডিয়ান ক্রি ভাষায় বাবা হচ্ছে �পাপা�, ক্রোয়েশিয়ানে �ওটেক�। পর্তুগিজ ভাষায় বাবা ডাক হচ্ছে �পাই�। ডাচ্ ভাষায় পাপা, ভাডের আর পাপাই�এই তিনটি হচ্ছে বাবা ডাক। ফিলিপিনো ভাষায় বাবা হচ্ছে �তাতেই�, �ইতেই�, �তেয়� ও �আমা�। সবচেয়ে বেশি প্রতিশব্দ বোধ হয় ইংরেজি ভাষায়ই, ইংরেজরা বাবাকে ডাকে �ফাদার�, �ড্যাড�, �ড্যাডি�, �পপ�, �পপা�, �পাপা� ইত্যাদি! ইংরেজি এসব শব্দ ক্রমাগত আমরা আ�স্থ করে নিচ্ছি। অবশ্য পূর্ব আফ্রিকায় নাকি বাবাকে �বাবা� বলেই ডাকা হয়।
যদিও আমাদের এখানে এসব দিবস নিয়ে এখনো যথেষ্ট দ্বিধা-সংকোচ রয়ে গেছে। আসুন, আমরা সংকোচের বিহ্বলতা কাটিয়ে এবার বাবা দিবসে প্রত্যেকেই যাঁর যাঁর বাবাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চমকে দিই।
শরাফত হোসেন
No comments