জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি-প্রেমিক ও বিপ্লবী চিরতরুণ কবি by শান্তা মারিয়া
কোনো কিছু না বলতেই/তুমি বোললে; 'চিনি, পড়েছি/কবিতা, কাগজে দেখেছি ছবি,/শুনেছি লোকের মুখে খুব ভালো কবি।' আরেকটু এগিয়ে যেতেই/তুমি বোললে : 'না,/আমি কোনো কবিকে চিনি না।' কবিতাটি তিনি লিখলেও তাঁকে না চেনা সত্যিকারভাবে কোনো বাঙালির পক্ষে সম্ভব নয়। বাংলা কবিতায় তাঁকে এড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব। তিনি কবি নির্মলেন্দু গুণ।
কবিতা লেখেন অনেকেই। কিন্তু কবি হয়ে উঠতে পারেন কজন? পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত? অন্তরে বাহিরে, আত্মায়? নির্মলেন্দু গুণ কবি_তাঁর প্রতিটি রক্তকণিকায়।
২১ জুন ১৯৪৫ সাল থেকে ২০১১_পেরিয়ে গেছে অনেকগুলো বছর। কিন্তু নির্মলেন্দু গুণ, আমাদের প্রিয় গুণদাকে কি প্রবীণ কবি বলা সম্ভব? না, কখনোই নয়। তিনি চিরতরুণ, চিরসবুজ। চিরদিনের কবি। কবির কখনো বয়স বাড়ে না, কবির জন্মদিনে কবি আরো তরুণ, আরো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেন। ১৯৪৫ সালের ২১ জুন নেত্রকোনোর বারহাট্টার কাশবন গ্রামে জন্ম নেওয়া সুখেন্দু প্রকাশ গুণ চৌধুরীর সন্তান নির্মলেন্দু গুণ তাঁর সাহিত্যিক জীবনে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন অবিস্মরণীয় সব গ্রন্থে। প্রেমাংশুর রক্ত চাই (১৯৭০) তাঁর প্রথম কবিতার বই। তারপর একের পর এক প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসাধারণ বই_না প্রেমিক না বিপ্লবী (১৯৭২), কবিতা, অমীমাংসিত রমণী, (১৯৭৩), দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী, চৈত্রের ভালোবাসা, ও বন্ধু আমার, আনন্দ, কুসুম, বাংলার মাটি বাংলার জল, তার আগে চাই সমাজতন্ত্র, চাষাভুষার কাব্য।
পৃথিবীজোড়া গান, অচল পদাবলী, দুরূহ দুঃশাসন, ইসক্রা, প্রথম দিনের সূর্য, শান্তির ডিক্রি, আবার একটা ফুঁ দিয়ে দাও, মুজিব-লেলিন-ইন্দিরা, নেই কেন সেই পাখি, নিরঞ্জনের পৃথিবী, চিরকালের বাঁশি, দুঃখ করো না, বাঁচো, সোনার কুঠার, যখন আমি বুকের পাঁজর খুলে দাঁড়াই, ধাবমান হরিণের দ্যুতি, অনন্ত বরফবীথি, আনন্দউদ্যান_তালিকাটি আরো অনেক দীর্ঘ। সেই ষাটের দশক থেকে কোনো তরুণ-তরুণী যখন ভালোবাসে তখন নির্মলেন্দু গুণের কবিতা পড়ে, যখন আন্দোলনে অংশ নেয় তখন তাঁর কবিতা পড়ে। যখন বৃষ্টি দেখে উচ্ছ্বসিত হয়, যখন রোদ্দুরে বাড়িয়ে দেয় হাত, গভীর রাতে কিংবা মধ্য দুপুরে, প্রশান্ত সকালে সর্বদাই এ কবির কবিতা হয়ে ওঠে প্রিয় সঙ্গী। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি। তিনি প্রেমিক এবং বিপ্লবী। বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার থেকে শুরু করে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। কিন্তু সবচেয়ে বড় পুরস্কার তাঁর পাওয়া হয়ে গেছে_সাহিত্যে চিরস্থায়ী আসন, অনাগত কালজুড়ে অসংখ্য পাঠকের অপরিসীম ভালোবাসা। আমাদের প্রেমে, বিরহে, বিপ্লবে, শান্তিতে তিনি চিরসঙ্গী। সাধারণ মানুষের জন্মদিন মানে বয়সের খাতায় এক বছর যোগ। কিন্তু কবির জন্মদিন মানে সৃষ্টিশীলতায় আরো এক বছরের সমৃদ্ধি। নির্মলেন্দু গুণ বাংলা কবিতার বাঁক ফেরানো কবি। তিনি জন্ম দিয়েছেন বহু নতুন শব্দ, উপমা, উৎপ্রক্ষা, রীতি। প্রসঙ্গত বলা যায়, মুঠোফোন শব্দটি তাঁরই সৃষ্টি। চিরপ্রেমিক, চিরতরুণ প্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুণের তুলনা তিনি নিজেই। আজ তাঁর জন্মদিন। আজ পৃথিবীতে যত ফুল ফুটেছে তার সবগুলো কবি নির্মলেন্দু গুণের জন্য উৎসর্গিত।
শান্তা মারিয়া
২১ জুন ১৯৪৫ সাল থেকে ২০১১_পেরিয়ে গেছে অনেকগুলো বছর। কিন্তু নির্মলেন্দু গুণ, আমাদের প্রিয় গুণদাকে কি প্রবীণ কবি বলা সম্ভব? না, কখনোই নয়। তিনি চিরতরুণ, চিরসবুজ। চিরদিনের কবি। কবির কখনো বয়স বাড়ে না, কবির জন্মদিনে কবি আরো তরুণ, আরো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেন। ১৯৪৫ সালের ২১ জুন নেত্রকোনোর বারহাট্টার কাশবন গ্রামে জন্ম নেওয়া সুখেন্দু প্রকাশ গুণ চৌধুরীর সন্তান নির্মলেন্দু গুণ তাঁর সাহিত্যিক জীবনে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন অবিস্মরণীয় সব গ্রন্থে। প্রেমাংশুর রক্ত চাই (১৯৭০) তাঁর প্রথম কবিতার বই। তারপর একের পর এক প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসাধারণ বই_না প্রেমিক না বিপ্লবী (১৯৭২), কবিতা, অমীমাংসিত রমণী, (১৯৭৩), দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী, চৈত্রের ভালোবাসা, ও বন্ধু আমার, আনন্দ, কুসুম, বাংলার মাটি বাংলার জল, তার আগে চাই সমাজতন্ত্র, চাষাভুষার কাব্য।
পৃথিবীজোড়া গান, অচল পদাবলী, দুরূহ দুঃশাসন, ইসক্রা, প্রথম দিনের সূর্য, শান্তির ডিক্রি, আবার একটা ফুঁ দিয়ে দাও, মুজিব-লেলিন-ইন্দিরা, নেই কেন সেই পাখি, নিরঞ্জনের পৃথিবী, চিরকালের বাঁশি, দুঃখ করো না, বাঁচো, সোনার কুঠার, যখন আমি বুকের পাঁজর খুলে দাঁড়াই, ধাবমান হরিণের দ্যুতি, অনন্ত বরফবীথি, আনন্দউদ্যান_তালিকাটি আরো অনেক দীর্ঘ। সেই ষাটের দশক থেকে কোনো তরুণ-তরুণী যখন ভালোবাসে তখন নির্মলেন্দু গুণের কবিতা পড়ে, যখন আন্দোলনে অংশ নেয় তখন তাঁর কবিতা পড়ে। যখন বৃষ্টি দেখে উচ্ছ্বসিত হয়, যখন রোদ্দুরে বাড়িয়ে দেয় হাত, গভীর রাতে কিংবা মধ্য দুপুরে, প্রশান্ত সকালে সর্বদাই এ কবির কবিতা হয়ে ওঠে প্রিয় সঙ্গী। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি। তিনি প্রেমিক এবং বিপ্লবী। বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার থেকে শুরু করে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। কিন্তু সবচেয়ে বড় পুরস্কার তাঁর পাওয়া হয়ে গেছে_সাহিত্যে চিরস্থায়ী আসন, অনাগত কালজুড়ে অসংখ্য পাঠকের অপরিসীম ভালোবাসা। আমাদের প্রেমে, বিরহে, বিপ্লবে, শান্তিতে তিনি চিরসঙ্গী। সাধারণ মানুষের জন্মদিন মানে বয়সের খাতায় এক বছর যোগ। কিন্তু কবির জন্মদিন মানে সৃষ্টিশীলতায় আরো এক বছরের সমৃদ্ধি। নির্মলেন্দু গুণ বাংলা কবিতার বাঁক ফেরানো কবি। তিনি জন্ম দিয়েছেন বহু নতুন শব্দ, উপমা, উৎপ্রক্ষা, রীতি। প্রসঙ্গত বলা যায়, মুঠোফোন শব্দটি তাঁরই সৃষ্টি। চিরপ্রেমিক, চিরতরুণ প্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুণের তুলনা তিনি নিজেই। আজ তাঁর জন্মদিন। আজ পৃথিবীতে যত ফুল ফুটেছে তার সবগুলো কবি নির্মলেন্দু গুণের জন্য উৎসর্গিত।
শান্তা মারিয়া
No comments