বলিউডে দুর্গাপূজা
ব্যস্ততাকে যে পাশ কাটাতেই হবে! দুর্গাপূজা বলে কথা! বলিউডের তারকারাও শুটিং থেকে ছুটি নিয়ে পূজার চার দিন মিশে যান হইহুল্লোড়ে। কেউ চলে যান পুরোনো পাড়ায়, কেউ আবার অষ্টমীর দিন সবার সঙ্গে অঞ্জলি দেন। এবারও পূজায় জমজমাট আয়োজনে মেতে উঠেছেন বলিউডের তারকারা। আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম প্রসিদ্ধ ‘মুখার্জিবাড়ির পূজা’। এ নিয়ে মুখার্জিবাড়ির পূজা এবার ৬৪-তে পা দিল। এবার এই পূজার ভাবনা ‘নবদুর্গা’। বরাবরের মতো এবারও কাজল-রানী প্রত্যক্ষভাবে এই পূজায় অংশ নিয়েছেন। মুখার্জিবাড়ির পূজার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন রুনা লায়লা, শ্রেয়া ঘোষাল, শঙ্কর মহাদেবন প্রমুখ শিল্পী।
রানী বলেন, ‘যত ব্যস্ততাই থাকুক, দুর্গাপূজার সময় অন্তত একটা দিন ঠাকুরের মুখ না দেখলে আমার ভালো লাগে না। এমনও হয়েছে, পূজার সময় আমি বিদেশে রয়েছি। শুটিংয়ের প্যাক-আপ হওয়ার পর অনেক রাত হলেও ওখানকার প্রবাসী বাঙালিদের পূজায় গিয়ে ঠাকুর দেখে এসেছি। আমি যেখানেই থাকি, দুর্গাপূজার সময় ঠাকুর দেখবইপ্রণামও করব, প্রসাদও খাব।’ কাজলের কাছে ছোটবেলার পূজার স্মৃতি এখনো অম্লান, ‘ছোটবেলার পূজা বললে প্রথমেই মনে পড়ে বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে পদ্মফুলের কুঁড়ি ফুটিয়ে ফুল বানানোর কথা; যে ফুল লাগে সন্ধিপূজার সময়। কুঁড়ির এক-একটা পাপড়ি খুব যত্ন নিয়ে ছিঁড়তাম, আর তার মধ্যে আমার স্বপ্নগুলো ভরে দিতাম। ভাবতাম, স্বপ্নের কথাগুলো এভাবেই মা দুর্গার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া যায়, সেগুলো পূরণও হয়।’
প্রতিবারের মতো এবারও লোখান্ডওয়ালা সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পূজার অন্যতম প্রধান আয়োজক গায়ক অভিজিৎ। এবার তাদের পূজার ভাবনা ‘রবীন্দ্রনাথ’। মণ্ডপ সেজেছে কবিগুরুর শিল্পকর্মের আদলে। অন্যান্য বার এই দায়িত্বটা পালন করতেন শিল্পনির্দেশক বিজন দাশগুপ্ত এবং মকবুল ফিদা হুসেন। এবার ফিদা হুসেন নেই, তাই কলকাতা থেকে আসা শতাধিক শিল্পীর কাছে দায়িত্ব সঁপে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ মঞ্চে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের, যেখানে আমন্ত্রিত রুনা লায়লা, শান, অলকা ইয়াগনিক, সুনিধি চৌহান প্রমুখ। দশমীর দিন রবীন্দ্রসংগীত গাইবেন অভিজিৎ নিজেই। তিনি বলেন, ‘আমরা চাঁদা তুলি না। মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে যা দেয়, তা-ই নিই। কারণ, আমার পূজা “করপোরেট পূজা”। স্পনসর অনেক। সপ্তমী থেকে দশমী—চার দিন ভোগ হয়। প্রতিদিন ১৫ হাজার দর্শনার্থীর জন্য ভোগের ব্যবস্থা থাকছে।’
১৪ বছর ধরে মুম্বাইয়ে আছেন বিপাশা বসু। কলকাতার দুর্গাপূজার মজা প্রায় ভুলে গেলেও মুম্বাইয়ের পূজা তিনি কখনোই মিস করতে চান না। বিপাশা বলেন, ‘মুম্বাইয়ে আমি বান্দ্রা ন্যাশনাল কলেজের দুর্গাপূজায় যাই। অঞ্জলি দিই, ভোগ খাই। একেকটা শহরে দুর্গাপূজার মজা একেক রকম। তবে ঠাকুর দেখা, অঞ্জলি দেওয়া, ভোগ খাওয়ার সময়ের ভালো লাগার অনুভূতিটা কিন্তু সব খানে এক। পূজার সময় বাইরের সব আত্মীয়স্বজন, যতই কাজ থাকুক, একসঙ্গে জড়ো হন। ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে পূজার সময় নাচ-গান হয়। আমার জেঠুর নাতনি ছোট্ট ছোট্ট হাত ঘুরিয়ে “গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ” গেয়ে নাচে, আমরা সবাই হাততালি দিয়ে কোরাস গাই। আমিও নাচি। কারণ, যদি কোনো অজুহাত দিই, তবে এই আনন্দের হাটে আমিই ব্রাত্য হয়ে থাকব। হইহুল্লোড়ে চারটি দিন কখন যে কেটে যায়...বিসর্জনের দিন কান্না পায়, খুব।’ কণ্ঠতারকা শ্রেয়া ঘোষালের কাছে দুর্গাপূজা মানে ছুটির হাওয়া। অষ্টমীর অঞ্জলি। মায়ের কাছ থেকে সালোয়ার আর শাড়ি পাওয়া। শ্রেয়া বলেন, ‘ছোটবেলায় চার-পাঁচ বছর বয়সে রাজস্থানের কোটা থেকে একটু দূরে রাওয়াতভাটায় পূজা কাটাতাম। পাঁচ বছর বয়সে প্রথম পূজায় গান গেয়েছিলাম। এখন আমার ঠিকানা চেম্বুর, মুম্বাই। তবে ঠিকানা বদলালেও স্বভাব পাল্টায়নি। এখনো দুর্গাপূজার অনুষ্ঠানে যাই। মা-বাবা এবারও একটা থ্রি-পিস এবং শাড়ি দিয়েছেন। পূজায় পরব।’ কণ্ঠতারকা শান্তনু মুখার্জি (শান) বলেন, ‘আমি যখন খুবই ছোট, তখন মুম্বাইয়ে মাত্র দুটো দুর্গাপূজা হতো। একটা বান্দ্রায়, নতুন পল্লির পূজা; অন্যটা দাদারে, বেঙ্গল ক্লাবের পূজা। পূজায় আমাদের নতুন জামাকাপড় হতো। আমি আর দিদি (সাগরিকা) প্যান্ডেলে গিয়ে বসে থাকতাম। ঠাকুর দেখতাম। একবার দুর্গাপূজায় লাল কুঠি ছবিটা দেখেছিলাম। এখনো কানে বাজে কিশোরকুমারের সেই গান, “কারও কেউ নই তো আমি, কেউ আমার নয়”।’ সংগীত পরিচালক প্রীতম এখনো রাত দুইটা-আড়াইটায় সপরিবারে বেরিয়ে পড়েন পূজার হুল্লোড়ে মেতে উঠতে। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে সপ্তমীর দিন নাগরদোলায় চড়তে যেতাম মেলায়। নামতেই চাইতাম না। শেষে নাগরদোলার মালিক প্রায়ই কোলে করে “বাবু, নেমে এসো” বলে নামিয়ে দিতেন। একবার ইচ্ছা হলো, রাহুল রায়ের মতো চুলের স্টাইল করব পূজায়। জেল তো ছিল না, তাই সারা চুলে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে একটা লাল শার্ট পরে ঘুরেছিলাম। পাড়ার দর্জিকে বিশেষ দিকনির্দেশনা দিয়ে বানিয়েছিলাম শার্টটা। আমি বড় হয়েছি এন্টালি পোস্ট অফিসের পাশে গোপ লেনে। সেখানেই ছিল আমাদের পাড়ার পূজা। সেই মহালয়ার কাকভোর থেকে আমার পূজা শুরু হতো। শুধু পূজার সময় একজন টিনের বাক্স করে শোনপাপড়ি নিয়ে বসত আমাদের প্যান্ডেলের পাশে। সারা দিন ধরে সেই শোনপাপড়ি খাওয়া চলত।’
মার্ডার ও কাইটস-এর পরিচালক অনুরাগ বসু বলেন, ‘নিজে একটু লাজুক প্রকৃতির ছিলাম বলে ইচ্ছা থাকলেও ঢাক বাজাতে পারতাম না। ছোটবেলায় হেঁটে অনেক ঠাকুর দেখেছি। কে হেঁটে কত বেশি ঠাকুর দেখতে পারে, তা দিয়েই মাপা হতো সাফল্যের হার। পূজার কদিন প্যান্ডেলে আড্ডা দিতাম। সুন্দরী মেয়ে দেখলে তাকানোটা আবশ্যিক ছিল। প্রেমে-ট্রেমে যে কখনো পড়তাম না, তা-ও নয়। তবে উল্টো দিক থেকে কখনোই সাড়া পাইনি।
প্রতিবারের মতো এবারও লোখান্ডওয়ালা সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পূজার অন্যতম প্রধান আয়োজক গায়ক অভিজিৎ। এবার তাদের পূজার ভাবনা ‘রবীন্দ্রনাথ’। মণ্ডপ সেজেছে কবিগুরুর শিল্পকর্মের আদলে। অন্যান্য বার এই দায়িত্বটা পালন করতেন শিল্পনির্দেশক বিজন দাশগুপ্ত এবং মকবুল ফিদা হুসেন। এবার ফিদা হুসেন নেই, তাই কলকাতা থেকে আসা শতাধিক শিল্পীর কাছে দায়িত্ব সঁপে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ মঞ্চে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের, যেখানে আমন্ত্রিত রুনা লায়লা, শান, অলকা ইয়াগনিক, সুনিধি চৌহান প্রমুখ। দশমীর দিন রবীন্দ্রসংগীত গাইবেন অভিজিৎ নিজেই। তিনি বলেন, ‘আমরা চাঁদা তুলি না। মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে যা দেয়, তা-ই নিই। কারণ, আমার পূজা “করপোরেট পূজা”। স্পনসর অনেক। সপ্তমী থেকে দশমী—চার দিন ভোগ হয়। প্রতিদিন ১৫ হাজার দর্শনার্থীর জন্য ভোগের ব্যবস্থা থাকছে।’
১৪ বছর ধরে মুম্বাইয়ে আছেন বিপাশা বসু। কলকাতার দুর্গাপূজার মজা প্রায় ভুলে গেলেও মুম্বাইয়ের পূজা তিনি কখনোই মিস করতে চান না। বিপাশা বলেন, ‘মুম্বাইয়ে আমি বান্দ্রা ন্যাশনাল কলেজের দুর্গাপূজায় যাই। অঞ্জলি দিই, ভোগ খাই। একেকটা শহরে দুর্গাপূজার মজা একেক রকম। তবে ঠাকুর দেখা, অঞ্জলি দেওয়া, ভোগ খাওয়ার সময়ের ভালো লাগার অনুভূতিটা কিন্তু সব খানে এক। পূজার সময় বাইরের সব আত্মীয়স্বজন, যতই কাজ থাকুক, একসঙ্গে জড়ো হন। ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে পূজার সময় নাচ-গান হয়। আমার জেঠুর নাতনি ছোট্ট ছোট্ট হাত ঘুরিয়ে “গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ” গেয়ে নাচে, আমরা সবাই হাততালি দিয়ে কোরাস গাই। আমিও নাচি। কারণ, যদি কোনো অজুহাত দিই, তবে এই আনন্দের হাটে আমিই ব্রাত্য হয়ে থাকব। হইহুল্লোড়ে চারটি দিন কখন যে কেটে যায়...বিসর্জনের দিন কান্না পায়, খুব।’ কণ্ঠতারকা শ্রেয়া ঘোষালের কাছে দুর্গাপূজা মানে ছুটির হাওয়া। অষ্টমীর অঞ্জলি। মায়ের কাছ থেকে সালোয়ার আর শাড়ি পাওয়া। শ্রেয়া বলেন, ‘ছোটবেলায় চার-পাঁচ বছর বয়সে রাজস্থানের কোটা থেকে একটু দূরে রাওয়াতভাটায় পূজা কাটাতাম। পাঁচ বছর বয়সে প্রথম পূজায় গান গেয়েছিলাম। এখন আমার ঠিকানা চেম্বুর, মুম্বাই। তবে ঠিকানা বদলালেও স্বভাব পাল্টায়নি। এখনো দুর্গাপূজার অনুষ্ঠানে যাই। মা-বাবা এবারও একটা থ্রি-পিস এবং শাড়ি দিয়েছেন। পূজায় পরব।’ কণ্ঠতারকা শান্তনু মুখার্জি (শান) বলেন, ‘আমি যখন খুবই ছোট, তখন মুম্বাইয়ে মাত্র দুটো দুর্গাপূজা হতো। একটা বান্দ্রায়, নতুন পল্লির পূজা; অন্যটা দাদারে, বেঙ্গল ক্লাবের পূজা। পূজায় আমাদের নতুন জামাকাপড় হতো। আমি আর দিদি (সাগরিকা) প্যান্ডেলে গিয়ে বসে থাকতাম। ঠাকুর দেখতাম। একবার দুর্গাপূজায় লাল কুঠি ছবিটা দেখেছিলাম। এখনো কানে বাজে কিশোরকুমারের সেই গান, “কারও কেউ নই তো আমি, কেউ আমার নয়”।’ সংগীত পরিচালক প্রীতম এখনো রাত দুইটা-আড়াইটায় সপরিবারে বেরিয়ে পড়েন পূজার হুল্লোড়ে মেতে উঠতে। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে সপ্তমীর দিন নাগরদোলায় চড়তে যেতাম মেলায়। নামতেই চাইতাম না। শেষে নাগরদোলার মালিক প্রায়ই কোলে করে “বাবু, নেমে এসো” বলে নামিয়ে দিতেন। একবার ইচ্ছা হলো, রাহুল রায়ের মতো চুলের স্টাইল করব পূজায়। জেল তো ছিল না, তাই সারা চুলে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে একটা লাল শার্ট পরে ঘুরেছিলাম। পাড়ার দর্জিকে বিশেষ দিকনির্দেশনা দিয়ে বানিয়েছিলাম শার্টটা। আমি বড় হয়েছি এন্টালি পোস্ট অফিসের পাশে গোপ লেনে। সেখানেই ছিল আমাদের পাড়ার পূজা। সেই মহালয়ার কাকভোর থেকে আমার পূজা শুরু হতো। শুধু পূজার সময় একজন টিনের বাক্স করে শোনপাপড়ি নিয়ে বসত আমাদের প্যান্ডেলের পাশে। সারা দিন ধরে সেই শোনপাপড়ি খাওয়া চলত।’
মার্ডার ও কাইটস-এর পরিচালক অনুরাগ বসু বলেন, ‘নিজে একটু লাজুক প্রকৃতির ছিলাম বলে ইচ্ছা থাকলেও ঢাক বাজাতে পারতাম না। ছোটবেলায় হেঁটে অনেক ঠাকুর দেখেছি। কে হেঁটে কত বেশি ঠাকুর দেখতে পারে, তা দিয়েই মাপা হতো সাফল্যের হার। পূজার কদিন প্যান্ডেলে আড্ডা দিতাম। সুন্দরী মেয়ে দেখলে তাকানোটা আবশ্যিক ছিল। প্রেমে-ট্রেমে যে কখনো পড়তাম না, তা-ও নয়। তবে উল্টো দিক থেকে কখনোই সাড়া পাইনি।
No comments