দুর্বল দুর্নীতি দমন কমিশন চাই কার স্বার্থে -দুদক সংস্কার by মনজুর রশীদ খান

গত এপ্রিলে দুর্নীতি দমন আইন ২০০৪-এর প্রস্তাবিত সংশোধনী সরকারের মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদিত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বের হলে সচেতন মহলে বেশ হইচই পড়ে যায়। অনেকের মতে, এই সংশোধনী আইনটিকে অনেকটা আগের বৈশিষ্ট্যেই ফিরিয়ে নেবে। অর্থাৎ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০০৭-এর পটপরিবর্তনের পূর্বাবস্থার কাছাকাছি থেকে যাবে। তাই আশঙ্কা, এতে দুদক শক্তিশালী নয়, দুর্বল হয়ে পড়বে। মনে স্বাভাবিক প্রশ্ন জাগল, তাহলে কি মন্ত্রিপরিষদ দেশে দুর্নীতি কমে গেছে বলে নিশ্চিত হয়েই শক্তিশালী করার উদ্যোগ থেকে সরে গেছে? ১৫ মাস দেশ শাসন করে সরকার কি বুঝতে পেরেছে উপজেলা, জেলা, রাজধানীর বিভিন্ন অফিস, ছোট-বড় সংস্থা প্রভৃতি থেকে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিশুদ্ধ হয়ে ভালো হয়ে গেছেন? হয়তো মন্ত্রিপরিষদ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার গোপনীয় রিপোর্ট পড়ে, বড় কর্তাব্যক্তিদের ব্রিফিং শুনে বা দলের তৃণমূল স্তরের নেতা-কর্মীদের বক্তব্য শুনে সন্তুষ্ট হয়েছে যে, শক্তিশালী দুদকের প্রয়োজন নেই। কিন্তু সুশীল সমাজ, দাতাগোষ্ঠীসহ দেশি-বিদেশি সংগঠন এবং গণমাধ্যমের মত ভিন্ন। তাদের ধারণা, এই সংশোধনী দুদককে নিরপেক্ষ ও কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত রাখবে।
সংশোধনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো সরকারি কর্মকর্তা বিশেষ করে বড় আমলা ও রাজনৈতিক পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে হলে সরকারের পূর্বানুমতি গ্রহণ বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ তাদের জন্য বিশেষ রক্ষাকবচের ব্যবস্থা থাকবে। বাহ্যত যুক্তি হলো দুদকের মামলার ভয়ে প্রশাসন গতিহীন হয়ে পড়বে, দুদকের সদস্যদের হাতে পদস্থ কর্মকর্তাদের ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হতে হবে ইত্যাদি। সেই পুরোনো যুক্তি, যা দুই যুগ আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ ও পরে বেগম জিয়ার সময়ও শোনা যেত। প্রসংগত উল্লেখ করা যায়, ২০০৪ সালে বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকার দুর্নীতি দমন ব্যুরো বিলুপ্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের আওতায় দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করে। প্রধানত দাতাগোষ্ঠীর চাপে এই কমিশন করলেও যাঁদের চেয়ারম্যান ও সদস্য করা হয় তাঁরা নানা প্রতিকূলতার কারণে কখনোই সঠিকভাবে কাজ করতে পারেননি। হয়তো সে সরকার তেমনটাই চেয়েছিল।
কারা দুদকের নামে ভীত-সন্ত্রস্ত হতে পারে তা বোঝা অসাধ্য নয়। কে জানে না, দুর্নীতির প্রধান আখড়া যে সরকারি ছোট-বড় দপ্তরগুলো। একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর হাতে জনসাধারণের হয়রানির খবর প্রতিনিয়তই গণমাধ্যমে পাওয়া যায়। সৎ, কর্তব্যপরায়ণ, নিষ্ঠাবান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হবে কেন? যারা দুর্নীতিবাজ তারা তো আতঙ্কিত হওয়ারই কথা। প্রকৃতপক্ষে যদি এমন কিছু সংস্থা থাকে যা অপরাধী বা সম্ভাব্য অপরাধীকে ভীত-সন্ত্রস্ত রাখে, তা তো খুবই ভালো। তারা ঘুষ চাইতে শতবার ভাববে। দুদকের লোকজন যদি সরকারি কর্মকর্তাদের হয়রানি, ভোগান্তির সৃষ্টি করে ও নিজেরাই দুর্নীতির আশ্রয় নেয়, তাহলে তো সংস্কার আরও বেশি জরুরি। সুযোগ্য সুদক্ষ ও কর্তব্যপরায়ণ লোক নিয়ে একটি আদর্শ সংস্থা করে গড়ে তুলতে দুদকের যথোপযোগী আইনি সংশোধন ও সংস্কারের বিকল্প নেই। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কিছু বিষয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু মূল বিষয় যেমন পুনর্গঠিত নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে নতুন সরকারকে ক্ষমতায়ন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার কাজটি করেছে, তেমনি দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের প্রবল ঝাঁকুনির সুফল জাতির জন্য অপর একটি বড় প্রাপ্তি। সে সময় অধ্যাদেশ জারি করে দুদক আইনের যথার্থ সংস্কার এবং পুনর্গঠন করা হয়েছিল (যে অধ্যাদেশ সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত না হওয়ার ফলে বাতিল হয়ে যায়)। এর ফলে কমিশন সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গত ১৩-১৪ মাস যাবৎ দুদক অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। তাহলে জনমনে এমন ধারণাই সৃষ্টি হতে বাধ্য যে ক্ষমতাসীন দল কঠোর হাতে দুর্নীতি দমনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখতে আন্তরিক নয়।
প্রশ্ন জাগে, ক্ষমতাসীন সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঘোষিত শক্ত অবস্থান থেকে সরে আসার আরেকটি পরোক্ষ সম্ভাব্য কারণ কি ২০০৭-এর পটপরিবর্তনের পর গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুদক ও যৌথ বাহিনী পরিচালিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযান? সে সময় দুদক এবং দুর্নীতি ও গুরুতর অপরাধ দমনবিষয়ক বিভিন্ন টাস্কফোর্স অনেক ক্ষমতাবান বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে বিপুল অর্থসম্পদ লুটপাটের অভিযোগে আটক করে। তাঁদের গ্রেপ্তার এবং সাজাপ্রাপ্তির ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত রয়েছেন উভয় দলেরই কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সে সময় মহা শক্তিধর দুর্নীতিবাজদের মহা বিপদ গেছে।
কেউ কখনো কল্পনাও করেনি যে এমন গ্যাঁড়াকলে পড়তে হবে। কোনো স্বাধীন শক্তিশালী দুদক থাকলে যে মহা বিপদ আসতে পারে সেটি পূর্ববর্তী ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা বুঝতেন (দুদক শক্তিশালী ও সক্রিয় থাকলে অবাধ লুটপাট বিপজ্জনক ভাবা হতো)। যেমন তারা বুঝেছিলেন যে নিজেদের লোক তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান ও নির্বাচন কমিশনপ্রধান না হলে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসা কঠিন। দুর্নীতিবিরোধী অভিযান কিছু কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছিল, যার সব দায়ভার পড়ল গিয়ে দুদক নামের প্রতিষ্ঠানের ওপর। অথচ সে সময় অধিকাংশ হাই প্রোফাইল কেসই গুরুতর দুর্নীতি ও অপরাধ দমনবিষয়ক টাস্কফোর্সের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। ক্ষমতাসীন দলের কারও কারও আক্রোশ দুদকের ওপর। তারা দুদকের ওপর্রখড়্গহস্ত। তাদেরই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ চাপের ফল এই প্রতিষ্ঠানকে নির্বাহী নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রয়াস বলে ধারণা করা অমূলক নয়। এর সঙ্গে আমলাদের একটি শক্তিশালী মহলেরও একাত্মতা রয়েছে এমনটা অবস্থা দৃষ্টে মনে হওয়াও স্বাভাবিক।
যেসব রাঘববোয়াল দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের ভাগ্য গড়েছে, যারা নিজেদের সবকিছুর ঊর্ধ্বে মনে করত, তাদের জন্য দুর্নীতিবিরোধী অভিযান ছিল একটি ভয়ংকর রকমের ধাক্কা। সেই অভিযানের প্রধান ভূমিকায় ছিল তখনকার দুর্নীতি ও গুরুতর অপরাধ দমনবিষয়ক বিভিন্ন টাস্কফোর্সের সদস্যরা। তাদের সক্রিয়তা না থাকলে বাংলাদেশের ইতিহাসের বড় বড় লুটপাটের ঘটনা পর্দার আড়ালেই থাকত। দেশে পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবর্তনে যে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে তা স্বীকৃত বাস্তবতা। উল্লেখ্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও স্বীকার করেন, ‘একটা বড় ঝাঁকুনির প্রয়োজন ছিল।’ কোনো কোনো টাস্কফোর্সের কর্মকর্তাদের (বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে) কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়নি, কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও বাড়াবাড়ির অভিযোগ উঠেছে। তখন সঠিক দিকনির্দেশনা অনুপস্থিত ছিল এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ছিল না বলে মনে হয়। অবশ্যই এসব অভিযোগের তদন্ত হওয়া উচিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুদক আইন সংশোধন করে নতুন চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ দিয়েছিল। তৎকালীন চেয়ারম্যান দুর্নীতি নির্মূলে নানা উদ্যোগ নিয়ে প্রশংসিত হন। দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তারে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়াবাড়িতে দুদকের সদস্যরা খুব একটা জড়িত ছিল না বলেই জানা যায়। আমার মনে হয় না যে, বড় মাপের মামলার গ্রেপ্তারে চেয়ারম্যানের কোনো ভূমিকা ছিল। কিন্তু পরে দেখা গেল, সবকিছুর জন্য যেন তৎকালীন চেয়ারম্যানই দায়ী। এখন মাঠে টাস্কফোর্সের কেউ নেই, সমন্বয়ক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টাও নেই। অথচ রোষানলে পড়ে গেল মাঠে অবস্থানকারী দুদক নামের প্রতিষ্ঠানটি। হয়তো এ জন্যই এর ডানা ছাঁটার প্রয়াস!
কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের মতো দুদক না চাইতে পারেন। কিন্তু প্রকারান্তরে কি এমন দুদক আইন চাইবেন যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি প্রয়োজনীয় শক্তি-সামর্থ্যহীন ও কার্যকর রাখার উপাদানহীন থাকে? যেটি নামে থাকবে, যাতে দাতারা খুশি থাকেন; কাজের মধ্যে থাকবে ছোটখাটো অর্থাৎ চুনোপুঁটিদের বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষমতা। সরকারের বড়কর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করতে গেলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে। সেই আগের অবস্থা যা এরশাদ সাহেব ও বেগম জিয়ার সময় প্রচলিত ছিল। বড়কর্তা যাঁরা আশপাশে থাকতেন, যাঁদের সাহায্য ছাড়া ফাইলপত্রে প্রয়োজনীয় সুবিধা সৃষ্টি করা যেত না; তাঁরা চাইতেন রক্ষাকবচ। সে অবস্থায়ই ফিরিয়ে নিতে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। মোদ্দা কথা হচ্ছে, দুদককে এমন স্বাধীনতা দেওয়া যাবে না যাতে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ব্যক্তি বা উচ্চস্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে পারে। সব দেশেই কোনো ধরনের অপরাধ-তৎপরতা বেড়ে গেলে নতুন নতুন আইন করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলে। ৯/১১’র পর সন্ত্রাস দমনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে কঠোর থেকে কঠোরতর আইন করা হয়েছে। জনগণ নানা হয়রানির শিকার হলেও মেনে নিচ্ছে এই বলে যে দেশ নিরাপদ থাকবে। আর আমাদের কী হলো? দুর্নীতিতে পরপর চ্যাম্পিয়ন হলেও দুর্নীতি দমনে আরও কঠোর ব্যবস্থার বদলে দুর্বল রাখার পথ খোঁজা হচ্ছে। টিআইবির অভিমত, বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেনি, বরং বেড়েই চলেছে। পত্রপত্রিকার প্রতিবেদন সঠিক হলে সরকারি অফিসে—উপজেলা থেকে রাজধানী পর্যন্ত—কোথাও দুর্নীতি কমেছে বলে মনে হয় না।
দুদককে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার অর্থও এই নয় যে সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ পাবেন। তাঁরাও সরকারের একটি অংশ এবং সুনির্দিষ্ট আইন ও বিধিবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবেন। এই সংস্থাকে নিরপেক্ষ, শক্তিশালী ও কার্যকর রাখার জন্য বিশেষ কিছু প্রতিবিধানের প্রয়োজন আছে। সংস্থার প্রধানকে যথাযথ আইনি ও অন্যান্য ক্ষমতা দিতে হবে এবং অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় রাখতে হবে। দুদকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি, তদন্ত-প্রক্রিয়ায় অযৌক্তিক ও অন্যায় আচরণের অভিযোগগুলো দেখার কড়া ব্যবস্থা রাখতে হবে। দুদক আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীর খসড়া এখন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। সেখানে পাস হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বিরোধী দল থেকে জোরালো বিরোধিতার আশা নেই। কারণ সে দলেই সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের সংখ্যা বেশি। সরকারি দলের কেউ বিপক্ষে কথা বলবেন বলে আশা করাও বৃথা। তাদেরও একটি অংশ যে দুদকের ওপর ভীষণ রকম ক্ষিপ্ত তার বহিঃপ্রকাশ টিভির টক-শো, গোলটেবিল আলোচনা সভা এবং সংসদেও দেখা গেছে। এখন একমাত্র ভরসা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার কিছু সদস্য, যাঁদের দেশ ও জনগণের স্বার্থকে ঊর্ধ্বে রাখার সুনাম রয়েছে। সংসদে তাঁরা সঠিক নির্দেশনার সূচনা করবেন বলে আশা রাখি। প্রধানমন্ত্রী বরাবরই শক্তিশালী দুদক দেখতে চান বলে আসছেন। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও এই প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যম, সুশীল সমাজ ও দেশি-বিদেশি সংগঠন-সংস্থা প্রস্তাবিত সংশোধনীর বিপক্ষে মত দিয়ে আসছে, যাকে জনমতেরই প্রতিফলন বলা যেতে পারে। আশা করি, গণতান্ত্রিক সরকার এর প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেবে।
মেজর জেনারেল (অব.) মনজুর রশীদ খান: সাবেক সেনা কর্মকর্তা।
mnzr23@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.