গলার কাঁটা হয়ে গেলেন ট্রট by তারেক মাহমুদ
লর্ডসে বাংলাদেশ দলের চেয়েও নবীন বলতে পারেন জনাথন ট্রটকে। এ মাঠে বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেক ২০০৫ সালে হলেও ট্রটের হলো কালই। শুধু অভিষেক কেন, লর্ডসে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি করে অনার্স বোর্ডে জায়গা করে নেওয়াটাকে স্বপ্নের মতো অভিষেক বলাই তো ভালো! দিনশেষে ট্রট নিজেও সেটাই বললেন, ‘লর্ডসে খেলার স্বপ্ন ছিল। সেঞ্চুরি দিয়ে তা পূরণ করতে পেরে ভালো লাগছে।’
ট্রটের জন্য যেটা প্রথম, সেটা এরই মধ্যে চারবার দেখে ফেলেছেন অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। ২০০৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই অনার্স বোর্ডে নাম লিখিয়েছিলেন, লর্ডসে সেঞ্চুরি করেছেন এরপর আরও তিনটি। ট্রটের মতো কাল সেঞ্চুরি না পেলেও মাহমুদউল্লাহর বলে বোল্ড হওয়ার আগে এক সিরিজ পর দলে ফেরাটা স্ট্রাউস উদ্যাপন করলেন ৮৩ রানের ইনিংস দিয়ে। প্রয়াত চেক স্থাপত্যবিদ ইয়ান কাপালিসি ও তাঁর সঙ্গী আমান্দা লেভেতের বানানো স্পেসশিপ-সদৃশ প্রেসবক্স হয়তো ট্রট-স্ট্রাউসদের স্বপ্নের মতো ব্যাটিং দেখার জন্যই। তবে প্রথম দিনে হাসি ছিল বাংলাদেশের বোলারদের মুখেও। ২৭০ বলে ট্রটের অপরাজিত ১৭৫ আর স্ট্রাউসের ৮৩ রানের সৌজন্যে প্রথম দিন শেষে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৩৬২ রান করে ফেললেও বাংলাদেশের বোলাররা তুলে নিতে পেরেছেন চারটি উইকেট।
লর্ডস টেস্টে ইংলিশ কন্ডিশন বড় বেশি প্রতিকূল হওয়ার আশঙ্কা জেগেছিল পরশু রাতে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির সঙ্গে হাড়ে কাঁপন ধরানো ঠান্ডা হাওয়া। আকাশ আর আবহাওয়া গুমোট হয়ে থাকল কাল সকালেও। এই কন্ডিশনে আগে ব্যাট করলে সাকিব আল হাসানের দলকে অবধারিতভাবেই ভুগতে হতো। সাকিব টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ায় সেটা হয়নি, সকালের সুইং আর মুভমেন্টে সমস্যায় পড়ে যাচ্ছিলেন বরং স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরাই।
অ্যালিস্টার কুককে এলবিডব্লু করে দিয়ে দলের মাত্র ৭ রানের সময় ইংল্যান্ডকে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন। কিন্তু সকালের মেঘ সরে গিয়ে সূর্য তাপ ছড়ানো শুরু করার পর আবহাওয়ার মন যত ভালো হতে লাগল, ততই মন খারাপ হতে থাকে বাংলাদেশ বোলারদের। লর্ডসের ঘাসে ঢাকা উইকেটও তখন স্ট্রাউস-ট্রটের কাছে চমত্কার ব্যাটিং উপযোগী। দ্বিতীয় উইকেটে ১৮১ রানের জুটিতে বাংলাদেশের সুন্দর সকালটাকে দুপুরে গড়াতে দেননি এই দুই ব্যাটসম্যানই।
শাহাদাতের সঙ্গে নতুন বলে বোলিং শুরু করেন রবিউল ইসলাম। চ্যালেঞ্জ ছিল দুজনের জন্যই। ২০০৫ সালে লর্ডসে দুঃস্বপ্নের মতো টেস্ট অভিষেক হয়েছিল শাহাদাতের। রবিউল ঠিক সে মাঠেই অভিষেক টেস্ট খেলতে নামলেন কাল। চ্যালেঞ্জে প্রাথমিকভাবে দুজনই সফল। সকালের সিমিং কন্ডিশনে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলার পাশাপাশি প্রেসবক্সের ব্রিটিশ সাংবাদিকদেরও প্রশংসা কুড়িয়ে নিচ্ছিলেন বাংলাদেশের দুই পেসার। কিন্তু সেসব খেলা লাঞ্চ গড়ানোর আগ পর্যন্তই। লাঞ্চের আগে ১০৫ রান তুলে ফেলা ইংল্যান্ডের আর কোনো উইকেট নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। যদিও শাহাদাত-রবিউলের সঙ্গে ততক্ষণে হাত ঘোরাতে শুরু করেছেন আরও তিন বোলার—সাকিব, রুবেল হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ।
গত বছর আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওভালে সেঞ্চুরি দিয়ে টেস্ট অভিষেক হলেও ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে জনাথন ট্রটকে নিয়ে প্রশ্ন ছিল। থাকাটাই স্বাভাবিক, গতকালের আগে টেস্টে ১৩ ইনিংস খেলে অভিষেকের সেঞ্চুরির সঙ্গে মাত্র দুটি ফিফটিই তো করেছেন! বাংলাদেশের বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট হতে পারে সে অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মাইলফলক। ১৩৩ বলে নিজের ১২তম বাউন্ডারিটি মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর শূন্যে ভেসে করা তাঁর উদ্যাপনেও খুঁজে পাওয়া গেল সমালোচনা থেকে মুক্তির আনন্দ। ট্রটকে নিয়ে বেশি সমালোচনা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গত সিরিজের ব্যর্থতার কারণেই। যদিও ট্রট বলছেন, ‘আমি ওই সফর নিয়ে হতাশ নই। কিছু ভালো ইনিংসও তো খেলেছিলাম! কিছু ভালো বল হবে, কিছু বাজে শট হবে—এটাই তো ক্রিকেট।’
স্ট্রাউস-ট্রটের কাছে হেরে গেলেও বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিন আরও একবার অসহায় বানিয়ে দিল কেভিন পিটারসেনকে। গত সিরিজে চট্টগ্রামে ৯৯ আর ঢাকায় অপরাজিত ৭৪ রানের দুটি ইনিংস খেললেও পিটারসেনকে ঠিক পিটারসেন মনে হয়নি। কাল তো ১৮ রানেই সাকিবের বলে বোল্ড। প্রথম দিনে বাংলাদেশও খুব বেশি পিছিয়ে পড়ল না সে সুবাদে। স্ট্রাউস আর ট্রট মিলেই যা করেছেন, নইলে ইংল্যান্ডের বাকি ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থই। কুক ফিরলেন ৭ রানে, পিটারসেন ১৮ আর রুবেল হোসেনের বলে বোল্ড ইয়ান বেল ১৭ রানে। তবে শেষ বেলায় ট্রটের সঙ্গী হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা এউইন মরগান দলে আসার সার্থকতা প্রমাণ করছেন। চতুর্থ উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন ১০৪ রানের জুটিতে কাল আর কোনো উইকেট হারায়নি ইংল্যান্ড। দিনশেষে বাংলাদেশ কোচ জেমি সিডন্সের হতাশা হয়তো সে কারণেই, ‘আমি দলের এই পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নই। আমাদের পরিকল্পনা ছিল ঠিক জায়গায় বল ফেলে যাওয়া। সেটা খুব বেশি হয়নি। দিন শেষে সে কারণেই আমরা পিছিয়ে।’ ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে দাঁড়ানো ইমরুল কায়েস মরগানের শটে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়লেও তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে জানালেন সিডন্স, ‘মাথায় আঘাত পাওয়ার পরপরই ওকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এমআরআই স্ক্যানের রিপোর্ট হাতে না এলেও ধারণা করা হচ্ছে, গুরুতর কিছু হয়নি তার।’
আর একটা কারণ অবশ্যই জোনাথন ট্রট। কে জানে, লর্ডস-অভিষেকে নিজেকে ফিরে পাওয়া এই ব্যাটসম্যানই হয়তো হয়ে যাবেন ম্যাচের নির্ধারকই!
ট্রটের জন্য যেটা প্রথম, সেটা এরই মধ্যে চারবার দেখে ফেলেছেন অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। ২০০৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই অনার্স বোর্ডে নাম লিখিয়েছিলেন, লর্ডসে সেঞ্চুরি করেছেন এরপর আরও তিনটি। ট্রটের মতো কাল সেঞ্চুরি না পেলেও মাহমুদউল্লাহর বলে বোল্ড হওয়ার আগে এক সিরিজ পর দলে ফেরাটা স্ট্রাউস উদ্যাপন করলেন ৮৩ রানের ইনিংস দিয়ে। প্রয়াত চেক স্থাপত্যবিদ ইয়ান কাপালিসি ও তাঁর সঙ্গী আমান্দা লেভেতের বানানো স্পেসশিপ-সদৃশ প্রেসবক্স হয়তো ট্রট-স্ট্রাউসদের স্বপ্নের মতো ব্যাটিং দেখার জন্যই। তবে প্রথম দিনে হাসি ছিল বাংলাদেশের বোলারদের মুখেও। ২৭০ বলে ট্রটের অপরাজিত ১৭৫ আর স্ট্রাউসের ৮৩ রানের সৌজন্যে প্রথম দিন শেষে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৩৬২ রান করে ফেললেও বাংলাদেশের বোলাররা তুলে নিতে পেরেছেন চারটি উইকেট।
লর্ডস টেস্টে ইংলিশ কন্ডিশন বড় বেশি প্রতিকূল হওয়ার আশঙ্কা জেগেছিল পরশু রাতে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির সঙ্গে হাড়ে কাঁপন ধরানো ঠান্ডা হাওয়া। আকাশ আর আবহাওয়া গুমোট হয়ে থাকল কাল সকালেও। এই কন্ডিশনে আগে ব্যাট করলে সাকিব আল হাসানের দলকে অবধারিতভাবেই ভুগতে হতো। সাকিব টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ায় সেটা হয়নি, সকালের সুইং আর মুভমেন্টে সমস্যায় পড়ে যাচ্ছিলেন বরং স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরাই।
অ্যালিস্টার কুককে এলবিডব্লু করে দিয়ে দলের মাত্র ৭ রানের সময় ইংল্যান্ডকে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন। কিন্তু সকালের মেঘ সরে গিয়ে সূর্য তাপ ছড়ানো শুরু করার পর আবহাওয়ার মন যত ভালো হতে লাগল, ততই মন খারাপ হতে থাকে বাংলাদেশ বোলারদের। লর্ডসের ঘাসে ঢাকা উইকেটও তখন স্ট্রাউস-ট্রটের কাছে চমত্কার ব্যাটিং উপযোগী। দ্বিতীয় উইকেটে ১৮১ রানের জুটিতে বাংলাদেশের সুন্দর সকালটাকে দুপুরে গড়াতে দেননি এই দুই ব্যাটসম্যানই।
শাহাদাতের সঙ্গে নতুন বলে বোলিং শুরু করেন রবিউল ইসলাম। চ্যালেঞ্জ ছিল দুজনের জন্যই। ২০০৫ সালে লর্ডসে দুঃস্বপ্নের মতো টেস্ট অভিষেক হয়েছিল শাহাদাতের। রবিউল ঠিক সে মাঠেই অভিষেক টেস্ট খেলতে নামলেন কাল। চ্যালেঞ্জে প্রাথমিকভাবে দুজনই সফল। সকালের সিমিং কন্ডিশনে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলার পাশাপাশি প্রেসবক্সের ব্রিটিশ সাংবাদিকদেরও প্রশংসা কুড়িয়ে নিচ্ছিলেন বাংলাদেশের দুই পেসার। কিন্তু সেসব খেলা লাঞ্চ গড়ানোর আগ পর্যন্তই। লাঞ্চের আগে ১০৫ রান তুলে ফেলা ইংল্যান্ডের আর কোনো উইকেট নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। যদিও শাহাদাত-রবিউলের সঙ্গে ততক্ষণে হাত ঘোরাতে শুরু করেছেন আরও তিন বোলার—সাকিব, রুবেল হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ।
গত বছর আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওভালে সেঞ্চুরি দিয়ে টেস্ট অভিষেক হলেও ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে জনাথন ট্রটকে নিয়ে প্রশ্ন ছিল। থাকাটাই স্বাভাবিক, গতকালের আগে টেস্টে ১৩ ইনিংস খেলে অভিষেকের সেঞ্চুরির সঙ্গে মাত্র দুটি ফিফটিই তো করেছেন! বাংলাদেশের বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট হতে পারে সে অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মাইলফলক। ১৩৩ বলে নিজের ১২তম বাউন্ডারিটি মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর শূন্যে ভেসে করা তাঁর উদ্যাপনেও খুঁজে পাওয়া গেল সমালোচনা থেকে মুক্তির আনন্দ। ট্রটকে নিয়ে বেশি সমালোচনা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গত সিরিজের ব্যর্থতার কারণেই। যদিও ট্রট বলছেন, ‘আমি ওই সফর নিয়ে হতাশ নই। কিছু ভালো ইনিংসও তো খেলেছিলাম! কিছু ভালো বল হবে, কিছু বাজে শট হবে—এটাই তো ক্রিকেট।’
স্ট্রাউস-ট্রটের কাছে হেরে গেলেও বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিন আরও একবার অসহায় বানিয়ে দিল কেভিন পিটারসেনকে। গত সিরিজে চট্টগ্রামে ৯৯ আর ঢাকায় অপরাজিত ৭৪ রানের দুটি ইনিংস খেললেও পিটারসেনকে ঠিক পিটারসেন মনে হয়নি। কাল তো ১৮ রানেই সাকিবের বলে বোল্ড। প্রথম দিনে বাংলাদেশও খুব বেশি পিছিয়ে পড়ল না সে সুবাদে। স্ট্রাউস আর ট্রট মিলেই যা করেছেন, নইলে ইংল্যান্ডের বাকি ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থই। কুক ফিরলেন ৭ রানে, পিটারসেন ১৮ আর রুবেল হোসেনের বলে বোল্ড ইয়ান বেল ১৭ রানে। তবে শেষ বেলায় ট্রটের সঙ্গী হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা এউইন মরগান দলে আসার সার্থকতা প্রমাণ করছেন। চতুর্থ উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন ১০৪ রানের জুটিতে কাল আর কোনো উইকেট হারায়নি ইংল্যান্ড। দিনশেষে বাংলাদেশ কোচ জেমি সিডন্সের হতাশা হয়তো সে কারণেই, ‘আমি দলের এই পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নই। আমাদের পরিকল্পনা ছিল ঠিক জায়গায় বল ফেলে যাওয়া। সেটা খুব বেশি হয়নি। দিন শেষে সে কারণেই আমরা পিছিয়ে।’ ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে দাঁড়ানো ইমরুল কায়েস মরগানের শটে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়লেও তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে জানালেন সিডন্স, ‘মাথায় আঘাত পাওয়ার পরপরই ওকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এমআরআই স্ক্যানের রিপোর্ট হাতে না এলেও ধারণা করা হচ্ছে, গুরুতর কিছু হয়নি তার।’
আর একটা কারণ অবশ্যই জোনাথন ট্রট। কে জানে, লর্ডস-অভিষেকে নিজেকে ফিরে পাওয়া এই ব্যাটসম্যানই হয়তো হয়ে যাবেন ম্যাচের নির্ধারকই!
No comments