রেখে এসেছিলাম সন্তান আর ভিসি ফেরত দিলেন লাশ: -আবরার ফাহাদের মা by মোহাম্মদ ওমর ফারুক
শোকে
কাতর মা। ক’দিন ধরে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ। কান্না থামছে না কিছুতেই। চোখগুলো
ফুলে গেছে। একটু পর পর চিৎকার দিয়ে লুটে পড়ছেন মাটিতে। শোকাতুর এ মায়ের
সঙ্গে কথা হয় গতকাল। বলেন, আমি চাই ঘাতকদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে
বিচার হোক। তাদের ফাঁসি দিয়ে আমার সন্তানের আত্মাকে শান্তি দিক।
যারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের স্থায়ী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। তিনি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, এমন জানলে আমার ছেলেকে আমি বুয়েটে দিতাম না। যে বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কি করে সন্তান দেই আমার ছোট ছেলেকে তো আমি সেখানে দিবো না।
রোববার রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পিটুনিতে নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। বুয়েটের ভিসির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন তিনি। বলেন, আমার সন্তান যখন মারা গেছে ওখানে সংবাদ পাওয়ার পরও ভিসি তার কাছে ছুটে যান নাই। যখন জানাজা হয়েছে তখনও তিনি যান নাই। আমার ছেলেটা মরে গেল এই কথা শোনার পর একবারও তিনি দেখতে আসলেন না। তার কি সন্তান নেই তার সন্তানের প্রতিও কি তিনি এমনই নির্দয়। যে ভিসি ক্যাম্পাসে আমার ছেলেকে দেখতে গেলেন না তিনি ২৫৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে চলে গেলেন, আমার সঙ্গে দেখাও করলেন না। তিনি যখন সুদূর ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ায় আসছিলেন তখন আমি বুকভরা আশা নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম, হয়তো তিনি আমার কাছে আসবেন। আমি তাকে বলতে চেয়েছিলাম, আপনার কাছে সন্তান রেখে এসেছি, আর আপনি আমাকে দিলেন লাশ। তিনি এখানে এসেছেন নাটক করতে। আমি তার পদত্যাগ চাই।
এমন নির্দয় ভিসির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার অধিকার নেই। তিনি কিভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হন বুয়েটে যারা দশ দফা দাবি করছে তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। আবরারের মা বলেন, আমার ছেলে খুব সহজ-সরল ছিল। কারো সঙ্গে কোনো দিন তার বাধেনি। সারাদিন পড়াশোনা করতো। পড়াশোনা নিয়ে থাকতো। একজন মানুষকে কি করে এতগুলো মানুষ পেটালো তাদের কি স্বজন নেই তারা আমার বুকটা খালি করে দিলো ‘স্কুল কলেজের গণ্ডি শেষ করে আমার ছেলেকে যখন বুয়েটে ভর্তি করে হলে উঠিয়ে দিয়ে আসি তখন ছেলেকে বলেছিলাম, বাপগো, এখন থেকে তুমি তোমার নিজের বুদ্ধি দিয়ে চলবা। রোকেয়া খাতুন বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট সেখানে কোনো কলহ নাই, কোনো মারামারি নাই, রাজনীতি নাই। সে কারণে ছেলের ইচ্ছে-ই তাকে ভর্তি করিয়ে দিলাম। অথচ আজ আমার ছেলে লাশ হয়ে ফিরলো। আমি তো সন্তান হারিয়ে ফেলেছি। যারা আমার ছেলের জন্য ঢাকায় আন্দোলন করছে তারা সবাই আমার সন্তান। যারা আমার ছেলের মতো বুয়েটে পড়ছে তাদের নিরাপত্তার জন্য হলেও এই ভিসির পদত্যাগ দরকার। তিনি বলেন, আমি তাকে সামনে পেলে হয়তো তার কাছে বলতাম, আমি চাই আমার সন্তান যেভাবে বুয়েট থেকে লাশ হয়ে আমার কাছে ফিরে আসছে, আর যেন কোনো মায়ের সন্তান তার বুকে লাশ না হয়ে ফিরে যায়। আবরারের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ঢাকায় আসার জন্য রোববার সকালে আবরারকে ঘুম থেকে তুলে দেই আমি।
ঢাকায় আসার পথে কয়েকবার ফাহাদের সঙ্গেও কথাও হয়। পরে বিকাল ৫টার দিকে ক্যাম্পাসে পৌঁছে আমাকে ফোন করে সে খবরও জানান। কিন্তু এরপর মা রোকেয়া খাতুন ছেলের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি। ছেলের খবর নিতে রাতে বারবার ফোন করেছেন তিনি। কিন্তু ছেলের মোবাইল ফোনটি একবারও রিসিভ হয়নি। আবরারের মা বলেন, আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আমি আর পারছি না। আমি কিভাবে আমার সন্তানকে ভুলবো। একটু বলে দেন না। আমার চোখের সামনে এখনো ফাহাদ ঘুরছে। রোববার রাতে অনেকবার ফোন দিয়েছিলাম, ও আর ফোন ধরেনি। আমার ছোট ছেলে ফায়াজ ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ফাহাদকে নক করে। সে সময়ও ফেসবুকে অ্যাকটিভ ছিল, তবে সাড়া দেয়নি। আমার ছেলের কি কষ্টটা মনে হয়েছিল। কিভাবে যে আমার ছেলের প্রাণটা গেছে মা হয়ে আর ভাবতে পারছি না। আমার এই ছেলেটা খুব মেধাবী ছিল, দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার খুব ইচ্ছে ছিলো তার, তাই চার থেকে পাঁচটি ভাষা শিখেছে, বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আমার ছেলেটার আর বিদেশ যাওয়া হলো না। কিন্তু এমন জায়গায় চলে গেল আর কোনো দিন ফিরে আসবে না।
আবরার ফাহাদের মা বলেন, আমার বড় ছেলেকে মেরেছে এখন ছোট ছেলেটাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তার ফেসবুক আইডিটা কে যেন নষ্ট করে দিয়েছে। তার নামে বেশ কয়েকটি আইডিতে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিচ্ছে। এই স্ট্যাটাসের দায় আমার সন্তান বা পরিবার কেউ নিবে না। আমাকে বেশ কয়েকজন ফোন দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছে, ছোট ছেলেকে যেন বাড়ির বাইরে না পাঠাই। অনেক অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। গত বুধবার প্রশাসনের লোকজন আমার ছেলেটাকে ধরে মারলো। এসব আর সহ্য হচ্ছে না। আমার ছোট ছেলের নিরাপত্তা এখন কে দিবে আমি চাই না আমার ছোট ছেলেটাকেও হারিয়ে ফেলি।
যারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের স্থায়ী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। তিনি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, এমন জানলে আমার ছেলেকে আমি বুয়েটে দিতাম না। যে বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কি করে সন্তান দেই আমার ছোট ছেলেকে তো আমি সেখানে দিবো না।
রোববার রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পিটুনিতে নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। বুয়েটের ভিসির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন তিনি। বলেন, আমার সন্তান যখন মারা গেছে ওখানে সংবাদ পাওয়ার পরও ভিসি তার কাছে ছুটে যান নাই। যখন জানাজা হয়েছে তখনও তিনি যান নাই। আমার ছেলেটা মরে গেল এই কথা শোনার পর একবারও তিনি দেখতে আসলেন না। তার কি সন্তান নেই তার সন্তানের প্রতিও কি তিনি এমনই নির্দয়। যে ভিসি ক্যাম্পাসে আমার ছেলেকে দেখতে গেলেন না তিনি ২৫৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে চলে গেলেন, আমার সঙ্গে দেখাও করলেন না। তিনি যখন সুদূর ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ায় আসছিলেন তখন আমি বুকভরা আশা নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম, হয়তো তিনি আমার কাছে আসবেন। আমি তাকে বলতে চেয়েছিলাম, আপনার কাছে সন্তান রেখে এসেছি, আর আপনি আমাকে দিলেন লাশ। তিনি এখানে এসেছেন নাটক করতে। আমি তার পদত্যাগ চাই।
এমন নির্দয় ভিসির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার অধিকার নেই। তিনি কিভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হন বুয়েটে যারা দশ দফা দাবি করছে তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। আবরারের মা বলেন, আমার ছেলে খুব সহজ-সরল ছিল। কারো সঙ্গে কোনো দিন তার বাধেনি। সারাদিন পড়াশোনা করতো। পড়াশোনা নিয়ে থাকতো। একজন মানুষকে কি করে এতগুলো মানুষ পেটালো তাদের কি স্বজন নেই তারা আমার বুকটা খালি করে দিলো ‘স্কুল কলেজের গণ্ডি শেষ করে আমার ছেলেকে যখন বুয়েটে ভর্তি করে হলে উঠিয়ে দিয়ে আসি তখন ছেলেকে বলেছিলাম, বাপগো, এখন থেকে তুমি তোমার নিজের বুদ্ধি দিয়ে চলবা। রোকেয়া খাতুন বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট সেখানে কোনো কলহ নাই, কোনো মারামারি নাই, রাজনীতি নাই। সে কারণে ছেলের ইচ্ছে-ই তাকে ভর্তি করিয়ে দিলাম। অথচ আজ আমার ছেলে লাশ হয়ে ফিরলো। আমি তো সন্তান হারিয়ে ফেলেছি। যারা আমার ছেলের জন্য ঢাকায় আন্দোলন করছে তারা সবাই আমার সন্তান। যারা আমার ছেলের মতো বুয়েটে পড়ছে তাদের নিরাপত্তার জন্য হলেও এই ভিসির পদত্যাগ দরকার। তিনি বলেন, আমি তাকে সামনে পেলে হয়তো তার কাছে বলতাম, আমি চাই আমার সন্তান যেভাবে বুয়েট থেকে লাশ হয়ে আমার কাছে ফিরে আসছে, আর যেন কোনো মায়ের সন্তান তার বুকে লাশ না হয়ে ফিরে যায়। আবরারের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ঢাকায় আসার জন্য রোববার সকালে আবরারকে ঘুম থেকে তুলে দেই আমি।
ঢাকায় আসার পথে কয়েকবার ফাহাদের সঙ্গেও কথাও হয়। পরে বিকাল ৫টার দিকে ক্যাম্পাসে পৌঁছে আমাকে ফোন করে সে খবরও জানান। কিন্তু এরপর মা রোকেয়া খাতুন ছেলের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি। ছেলের খবর নিতে রাতে বারবার ফোন করেছেন তিনি। কিন্তু ছেলের মোবাইল ফোনটি একবারও রিসিভ হয়নি। আবরারের মা বলেন, আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আমি আর পারছি না। আমি কিভাবে আমার সন্তানকে ভুলবো। একটু বলে দেন না। আমার চোখের সামনে এখনো ফাহাদ ঘুরছে। রোববার রাতে অনেকবার ফোন দিয়েছিলাম, ও আর ফোন ধরেনি। আমার ছোট ছেলে ফায়াজ ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ফাহাদকে নক করে। সে সময়ও ফেসবুকে অ্যাকটিভ ছিল, তবে সাড়া দেয়নি। আমার ছেলের কি কষ্টটা মনে হয়েছিল। কিভাবে যে আমার ছেলের প্রাণটা গেছে মা হয়ে আর ভাবতে পারছি না। আমার এই ছেলেটা খুব মেধাবী ছিল, দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার খুব ইচ্ছে ছিলো তার, তাই চার থেকে পাঁচটি ভাষা শিখেছে, বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আমার ছেলেটার আর বিদেশ যাওয়া হলো না। কিন্তু এমন জায়গায় চলে গেল আর কোনো দিন ফিরে আসবে না।
আবরার ফাহাদের মা বলেন, আমার বড় ছেলেকে মেরেছে এখন ছোট ছেলেটাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তার ফেসবুক আইডিটা কে যেন নষ্ট করে দিয়েছে। তার নামে বেশ কয়েকটি আইডিতে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিচ্ছে। এই স্ট্যাটাসের দায় আমার সন্তান বা পরিবার কেউ নিবে না। আমাকে বেশ কয়েকজন ফোন দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছে, ছোট ছেলেকে যেন বাড়ির বাইরে না পাঠাই। অনেক অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। গত বুধবার প্রশাসনের লোকজন আমার ছেলেটাকে ধরে মারলো। এসব আর সহ্য হচ্ছে না। আমার ছোট ছেলের নিরাপত্তা এখন কে দিবে আমি চাই না আমার ছোট ছেলেটাকেও হারিয়ে ফেলি।
No comments