বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি: বিভিন্ন মহলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
বুয়েটে ছাত্র বিক্ষোভ (ফাইল ফটো) |
সরকার
সমর্থক ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাদের নির্যাতনে বাংলাদেশ প্রকৌশল
বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ নিহত হবার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট
তীব্র ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গতকাল ছাত্র-শিক্ষক
রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের পরিপ্রেক্ষিতে ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে বৈঠকে বসে এ ঘোষণা দেন। এ সময় জোর করতালিতে এ সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানান সমবেত শিক্ষার্থীরা।
অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধের ব্যাপারে ভিসি বলেন, বুয়েট অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী শিক্ষক রাজনীতিও নিষিদ্ধ। বুয়েটের শিক্ষকরা কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না।
গত ৯ অক্টোবর বুধবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বুয়েট কর্তৃপক্ষ চাইলে ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ করতে পারে, তবে তিনি সামগ্রিকভাবে ছাত্র রাজনীতি বন্ধে অনাগ্রহ প্রকাশ করে জানান, তিনি নিজেও ছাত্র জীবনে রাজনীতি করেছেন।
এদিকে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে ছাত্রসংগঠন তথা শিক্ষাঙ্গনে দুর্বৃত্তায়িত অসুস্থ রাজনৈতিক প্রভাবের নিষ্ঠুর পরিণতি উল্লেখ করে অবিলম্বে বুয়েটসহ দেশের সকল ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষাঙ্গনকে সম্পূর্ণ দলীয় রাজনীতিমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে।
টিআইবি উল্লেখ করেছে- ‘দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একের পর এক রক্তক্ষয়ী ছাত্র সহিংসতা, ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম, দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবদুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতা এবং একই কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যত নিষ্ক্রিয়তার ফলে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী আদর্শিক ছাত্র আন্দোলনের অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি।’
’বুয়েটের রাজনীতির বিষয়টি নিয়ে এনজিও সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এক বিবৃতিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী ছাত্র সংগঠনগুলোকে রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে।
লেজুড়বৃত্তির ছাত্র সংগঠবের বিপক্ষে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনও বলেছেন, ‘ছাত্র রাজনীতি ‘লেজুড়বৃত্তি’ হওয়ার পরিণামে আজ সারাদেশ ভুগছে।
ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা বলেছেন, বুয়েটে ছাত্রদের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার জন্য ছাত্রলীগের গত ১২ বছরের আচরণই দায়ী। হলে-হলে ছাত্রলীগের নেতাদের টর্চার সেল, ছাত্রদের ওপর নির্যাতনসহ নানা কারণেই বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
তবে, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা একটি চরম প্রতিক্রিয়াশীল উদ্যোগ বলে দাবি করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা। তিনি রেডিও তেহরানকে বলেছেন, ‘যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কথিত ছাত্র রাজনীতি বন্ধ আছে সেখানেও প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ ও গোপনে ছাত্রশিবিরের তৎপরতা আছে৷ এছাড়া ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্র সেখানে প্রবল মাত্রায় চালু থাকবে। আর ছাত্র-শিক্ষকরা ক্ষমতাসীনদের ছ্ত্রসংগঠনের হাতে জিম্মি হয়ে হয়ে পড়বে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়ে পুরো ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা একটি অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ।
তবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে মৌলবাদী, জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। এছাড়া প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা বেড়ে যাবে যা মোটেও শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণ হবে না।’
এ প্রসঙ্গে, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হবে। আর এটির জন্য ছাত্রলীগই দায়ী থাকবে। কারণ তারাই ক্যাম্পাসগুলোতে দখলদারিত্ব এবং সন্ত্রাসবাদী রাজনীতি চালু করেছে। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে প্রশাসনের স্বৈরাচারিতা বাড়বে।'
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের পরিপ্রেক্ষিতে ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে বৈঠকে বসে এ ঘোষণা দেন। এ সময় জোর করতালিতে এ সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানান সমবেত শিক্ষার্থীরা।
অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধের ব্যাপারে ভিসি বলেন, বুয়েট অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী শিক্ষক রাজনীতিও নিষিদ্ধ। বুয়েটের শিক্ষকরা কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না।
গত ৯ অক্টোবর বুধবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বুয়েট কর্তৃপক্ষ চাইলে ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ করতে পারে, তবে তিনি সামগ্রিকভাবে ছাত্র রাজনীতি বন্ধে অনাগ্রহ প্রকাশ করে জানান, তিনি নিজেও ছাত্র জীবনে রাজনীতি করেছেন।
এদিকে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক বিবৃতিতে ছাত্রসংগঠন তথা শিক্ষাঙ্গনে দুর্বৃত্তায়িত অসুস্থ রাজনৈতিক প্রভাবের নিষ্ঠুর পরিণতি উল্লেখ করে অবিলম্বে বুয়েটসহ দেশের সকল ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষাঙ্গনকে সম্পূর্ণ দলীয় রাজনীতিমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে।
টিআইবি উল্লেখ করেছে- ‘দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একের পর এক রক্তক্ষয়ী ছাত্র সহিংসতা, ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম, দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবদুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতা এবং একই কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যত নিষ্ক্রিয়তার ফলে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী আদর্শিক ছাত্র আন্দোলনের অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি।’
’বুয়েটের রাজনীতির বিষয়টি নিয়ে এনজিও সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এক বিবৃতিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী ছাত্র সংগঠনগুলোকে রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে।
লেজুড়বৃত্তির ছাত্র সংগঠবের বিপক্ষে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনও বলেছেন, ‘ছাত্র রাজনীতি ‘লেজুড়বৃত্তি’ হওয়ার পরিণামে আজ সারাদেশ ভুগছে।
ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা বলেছেন, বুয়েটে ছাত্রদের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার জন্য ছাত্রলীগের গত ১২ বছরের আচরণই দায়ী। হলে-হলে ছাত্রলীগের নেতাদের টর্চার সেল, ছাত্রদের ওপর নির্যাতনসহ নানা কারণেই বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
তবে, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা একটি চরম প্রতিক্রিয়াশীল উদ্যোগ বলে দাবি করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা। তিনি রেডিও তেহরানকে বলেছেন, ‘যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কথিত ছাত্র রাজনীতি বন্ধ আছে সেখানেও প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ ও গোপনে ছাত্রশিবিরের তৎপরতা আছে৷ এছাড়া ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্র সেখানে প্রবল মাত্রায় চালু থাকবে। আর ছাত্র-শিক্ষকরা ক্ষমতাসীনদের ছ্ত্রসংগঠনের হাতে জিম্মি হয়ে হয়ে পড়বে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়ে পুরো ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা একটি অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ।
তবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে মৌলবাদী, জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। এছাড়া প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা বেড়ে যাবে যা মোটেও শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণ হবে না।’
এ প্রসঙ্গে, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হবে। আর এটির জন্য ছাত্রলীগই দায়ী থাকবে। কারণ তারাই ক্যাম্পাসগুলোতে দখলদারিত্ব এবং সন্ত্রাসবাদী রাজনীতি চালু করেছে। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে প্রশাসনের স্বৈরাচারিতা বাড়বে।'
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ |
No comments