রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে কি খালেদা জিয়া মুক্ত হতে পারবেন?
সাবেক
প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রায় ১৮ মাস ধরে কারাগারে। আদালতের রায়ে ১৭
বছরের সাজা হয়েছে তার। খালেদা জিয়া তিন মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর
দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া বিরোধী দল বিএনপির প্রধান ছিলেন। পৃথক দু’টি মামলায়
তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের প্রয়াত স্বামী ও
সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে একটি দাতব্য সংস্থার তহবিল আত্মসাৎ
করেছেন। খালেদার আইনজীবীরা দ্বিতীয়বারের মতো দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল
করেছেন।
বর্তমানে ৭৪ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে আইনি লড়াইয়ে লড়ছেন। কিন্তু দল থেকে রাজনৈতিক সমঝোতারও চেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কি খালেদা মুক্ত হতে পারবেন? জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে তারই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলছেন, যদি আদালত তাকে দু’টি মামলায় জামিন দেয়, তবে তিনি মুক্ত হবেন। কিন্তু বিচারকরা বেশ কয়েকবার তার জামিন আবেদন নাকচ করেছেন। বিএনপির নেতারা এখন হাইকোর্টে আপিলের চিন্তাভাবনা করছেন। ডয়েচে ভেলের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আদালত যদি তার সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থান ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করতো, তাহলে খালেদা জিয়া এতদিনে জামিন পেয়ে যেতেন।’
তবে এমন গুজবও আছে যে, পর্দার আড়ালে শাসক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দরকষাকষি করছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে যে, বিএনপির এমপি হারুনুর রশিদ শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে এ মাসের শুরুতে দেখা করেছেন। তিনি ডয়েচে ভেলেকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘আমি খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক অবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করতে ওবায়দুল কাদেরকে অনুরোধ করেছি।’
হারুনুর রশিদকে প্রশ্ন করা হয়, সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর খালেদা জিয়ার জামিন নির্ভর করে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, অনেক সময়ই দেখা গেছে যে, এমনকি খুনের দায়ে দ-প্রাপ্ত ব্যক্তিরাও হাইকোর্টে জামিন পেয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। শাসক দলের নেতারা অবশ্য অস্বীকার করে বলছেন, এ বিষয়ে তাদের করার কিছু নেই। তাদের বক্তব্য, খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে এখতিয়ার বিচার বিভাগের।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিরোধী দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা খুবই সাধারণ বিষয়। অনেক ক্ষেত্রেই আদালত এ ধরণের মামলা খারিজ করে দেয়। বিএনপি নেতাদের বক্তব্য, তাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে হওয়া এসব মামলা ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, যার উদ্দেশ্য তাকে হয়রানি করা ও তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করা। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা এই বক্তব্য অস্বীকার করেছেন।
তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আইনি শাস্তি এড়াতে রাজনৈতিক দরকষাকষি একেবারেই নতুন কিছু নয়। অতীতে দেখা গেছে, বাংলাদেশের সাবেক সামরিক একনায়ক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের নয় বছরের শাসনের অবসান হওয়ামাত্রই তার বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে সাবেক এই স্বৈরশাসক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে ব্যবহার করে ঠিকই সাজা এড়াতে পেরেছেন।
প্রতিবেদনে একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে: বিএনপির দিন কি ফুরিয়ে এসেছে? এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতেই বলা হয়, খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েক মাস আগে। তাকে গ্রেপ্তারের ফলে দলে নেতৃত্ব শূন্যতা দেখা দেয়। তার ছেলে তারেক রহমান, যাকে দলের ভবিষ্যৎ নেতা ভাবা হচ্ছে, তাকেও যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন। এই দুই প্রধান নেতাকে ছাড়া নির্বাচনে গিয়ে বিএনপি পার্লামেন্টের ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ৭টি আসনে জয়লাভে সক্ষম হয়।
জার্মানির রাইন-ওয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ ডিয়েটের রেইনহার্ডও মনে করেন যে, বিএনপি অস্তিত্বহীন হওয়ার পথে। তবে তার ধারণা, বিএনপি ছোট দল হিসেবে সামনের দিনগুলোতে টিকে থাকতে পারবে।
তার মতে, ইসলামপন্থি জামায়াতে ইসলামী, নিজেদের অস্পষ্ট রাজনৈতিক ম্যানিফেস্টো ও তাদের নেতার নির্বাসনে বসবাস, ইত্যাদি বিষয় দলটির অবস্থানকে দুর্বল করে দিয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক সলিমুল্লাহ খান মনে করেন, বিএনপি হয়তো কঠিন সময় পাড় করছে। তবে এখনও দলটি নিজ সমর্থক গোষ্ঠীকে জাগিয়ে তোলার সুযোগ পেতে পারে। কেননা, এখন পর্যন্ত অন্য কোনো দলই প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির অবস্থান নিতে পারেনি।
বর্তমানে ৭৪ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে আইনি লড়াইয়ে লড়ছেন। কিন্তু দল থেকে রাজনৈতিক সমঝোতারও চেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কি খালেদা মুক্ত হতে পারবেন? জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে তারই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলছেন, যদি আদালত তাকে দু’টি মামলায় জামিন দেয়, তবে তিনি মুক্ত হবেন। কিন্তু বিচারকরা বেশ কয়েকবার তার জামিন আবেদন নাকচ করেছেন। বিএনপির নেতারা এখন হাইকোর্টে আপিলের চিন্তাভাবনা করছেন। ডয়েচে ভেলের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আদালত যদি তার সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থান ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করতো, তাহলে খালেদা জিয়া এতদিনে জামিন পেয়ে যেতেন।’
তবে এমন গুজবও আছে যে, পর্দার আড়ালে শাসক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দরকষাকষি করছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে যে, বিএনপির এমপি হারুনুর রশিদ শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে এ মাসের শুরুতে দেখা করেছেন। তিনি ডয়েচে ভেলেকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘আমি খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক অবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করতে ওবায়দুল কাদেরকে অনুরোধ করেছি।’
হারুনুর রশিদকে প্রশ্ন করা হয়, সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর খালেদা জিয়ার জামিন নির্ভর করে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, অনেক সময়ই দেখা গেছে যে, এমনকি খুনের দায়ে দ-প্রাপ্ত ব্যক্তিরাও হাইকোর্টে জামিন পেয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। শাসক দলের নেতারা অবশ্য অস্বীকার করে বলছেন, এ বিষয়ে তাদের করার কিছু নেই। তাদের বক্তব্য, খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে এখতিয়ার বিচার বিভাগের।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিরোধী দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা খুবই সাধারণ বিষয়। অনেক ক্ষেত্রেই আদালত এ ধরণের মামলা খারিজ করে দেয়। বিএনপি নেতাদের বক্তব্য, তাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে হওয়া এসব মামলা ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, যার উদ্দেশ্য তাকে হয়রানি করা ও তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করা। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা এই বক্তব্য অস্বীকার করেছেন।
তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আইনি শাস্তি এড়াতে রাজনৈতিক দরকষাকষি একেবারেই নতুন কিছু নয়। অতীতে দেখা গেছে, বাংলাদেশের সাবেক সামরিক একনায়ক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের নয় বছরের শাসনের অবসান হওয়ামাত্রই তার বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে সাবেক এই স্বৈরশাসক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে ব্যবহার করে ঠিকই সাজা এড়াতে পেরেছেন।
প্রতিবেদনে একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে: বিএনপির দিন কি ফুরিয়ে এসেছে? এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতেই বলা হয়, খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েক মাস আগে। তাকে গ্রেপ্তারের ফলে দলে নেতৃত্ব শূন্যতা দেখা দেয়। তার ছেলে তারেক রহমান, যাকে দলের ভবিষ্যৎ নেতা ভাবা হচ্ছে, তাকেও যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন। এই দুই প্রধান নেতাকে ছাড়া নির্বাচনে গিয়ে বিএনপি পার্লামেন্টের ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ৭টি আসনে জয়লাভে সক্ষম হয়।
জার্মানির রাইন-ওয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ ডিয়েটের রেইনহার্ডও মনে করেন যে, বিএনপি অস্তিত্বহীন হওয়ার পথে। তবে তার ধারণা, বিএনপি ছোট দল হিসেবে সামনের দিনগুলোতে টিকে থাকতে পারবে।
তার মতে, ইসলামপন্থি জামায়াতে ইসলামী, নিজেদের অস্পষ্ট রাজনৈতিক ম্যানিফেস্টো ও তাদের নেতার নির্বাসনে বসবাস, ইত্যাদি বিষয় দলটির অবস্থানকে দুর্বল করে দিয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক সলিমুল্লাহ খান মনে করেন, বিএনপি হয়তো কঠিন সময় পাড় করছে। তবে এখনও দলটি নিজ সমর্থক গোষ্ঠীকে জাগিয়ে তোলার সুযোগ পেতে পারে। কেননা, এখন পর্যন্ত অন্য কোনো দলই প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির অবস্থান নিতে পারেনি।
No comments