চীনের মধ্যস্থতায় নিউ ইয়র্কে বৈঠক: পাল্টাপাল্টি, চুক্তির শর্ত পড়ে শোনানোর পর ক্ষান্ত মিয়ানমার!
রোহিঙ্গা
প্রত্যাবাসনের জট খুলতে চীনের মধ্যস্থতায় ফের বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ও
মিয়ানমার। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের সাইড লাইনে সোমবার
সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোরে) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের
ত্রিদেশীয় ওই বৈঠক হয়। ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল
মোমেন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করেন
দেশটির স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মন্ত্রী চাও থিন সোয়ে। চীনের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েং ই’র মধ্যস্থতার ওই বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার
বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গনার উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে যোগ
দেয়া ঢাকার একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মানবজমিনকে জানিয়েছেন-বৈঠকে
রোহিঙ্গা সংকটের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তুমুল বিতর্কও হয়েছে। বাংলাদেশ
স্পষ্টভাবেই বলেছে, প্রত্যাবাসনে ঢাকার প্রস্তুতির কোন ঘাটতি নেই। যে কোন
সময়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর লজিস্টিক সাপোর্টসহ বাংলাদেশের যা করণীয়
(চুক্তি মতে) সব কিছু করতে ঢাকা প্রস্তুত। কিন্তু রাখাইনে রোহিঙ্গাদের
নিরাপত্তা ও মুক্তভাবে চলাফেরার নিশ্চিয়তার গ্যারান্টিসহ প্রত্যাবাসনের
উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং দুনিয়ার কাছে বিষয়টি দৃশ্যমান করে তাদের
বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে রাজী করানো মিয়ানমারের দায়িত্ব।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওই বক্তব্যে দেয়ার পর মিয়ানমার আপত্তি তোলে। দেশটির
পক্ষ থেকে বলার চেষ্টা করা হয় যে, বাংলাদেশ না-কী প্রত্যাবাসনের নতুন শর্ত
দিচ্ছে! তারা বরাবরের মত প্রত্যাবাসন দেরির জন্য বাংলাদেশকে দোষারোপের
চেষ্টা করে।
মিয়ানমারের বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। বৈঠকের পরিবেশ খানিকটা পাল্টাপাল্টি অবস্থায় রূপ নেয়। এই সময় বাংলাদেশের তরফে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় অ্যারেঞ্জমেন্টের শর্তাবলী বৈঠকে পড়ে শোনানো হয়। যে চুক্তিটি ২০১৭ সালের নভেম্বরে নেপি’ডতে সই হয়েছিল। চুক্তির শর্তগুলো তুলে ধরে বাংলাদেশ বক্তব্য দিলে মিয়ানমার ক্ষান্ত হয়। সূত্র মতে, বৈঠকে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে মিয়ানমারকে অগ্রগতির দৃশ্যমান তাগিদ দেয়া হয়। তবে প্রত্যাবাসন শুরুর কোন দিন-তারিখের বিষয়ে তারা একমত হতে পারেনি। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে নিউইয়র্কে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় এমন বৈঠক হয়েছিল। সেখানে জাতিসংঘ মহাসচিবও উপস্থিত ছিলেন । সেই সময় মধ্যস্থতাকারী চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল- প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে চীন তার বন্ধু বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ইনফরমাল বা অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই আলোচনার অংশ হিসাবেই নিউ ইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বৈঠক। ’১৮ সালের জুনে বেইজিংয়ে বাংলাদেশের তৎকালীণ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মন্ত্রী চাও থিন সোয়েকে নিয়ে প্রথম অনানুষ্ঠানিক ত্রি-দেশীয় বৈঠক করেছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েং ই। সেই থেকে শুরু। এরপর নিউইয়র্ক এবং নেপি’ডতে দু’দফা ত্রিদেশীয় বৈঠক হয়েছে। ওই সব বৈঠকের ফল হিসাবে দু’দফা প্রত্যাবাসন চেষ্টাও হয়। কিন্তু তা সফল হয়নি। একজন রোহিঙ্গাও ফিরতে রাজী হয়নি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এবার চতুর্থ দফায় বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের বৈঠক হলো।
প্রত্যাবাসন পরিস্থিতি যৌথভাবে মূল্যায়ন করবে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার: এদিকে নিউইয়র্কের বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রকৃত পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য একটি ‘ত্রিপক্ষীয় যৌথ কার্যনির্বাহী ব্যবস্থা’ গঠনে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বৈঠক শেষে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি মিডিয়া প্রতিনিধিদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। বলেন, কিছু আপত্তি সত্ত্বেও চীনের ওই প্রস্তাবে রাজি হয় মিয়ানমার। অক্টোবরে ত্রিপক্ষীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম বেঠক হওয়ার বিষয়ে তারা সব পক্ষ একমত হয়েছে। বৈঠকে মিয়ানমার দাবি করেছে যে তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ সম্পন্ন করেছে। তবে বাংলাদেশ জানিয়েছে, মিয়ানমার এখনও রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস আনতে পারেনি। তারা নিজ দেশে তখনই ফিরে যাবে, যখন তারা মনে করবে মিয়ানমারে ফেরার পর তারা নিরাপদে থাকবে ও স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে। ড. মোমেন নিউইয়র্ক বৈঠকে মিয়ানমারের অঙ্গীকার ব্যক্ত করার বিষয়ে বলেন, একটি সুসংবাদ হচ্ছে মিয়ানমার যত দ্রুত সম্ভব তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে রাজি হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টে আচমকা রোহিঙ্গা ঢলে প্রায় সাড়ে ৭লাখ নারী-পুরুষ শিশু বাংলাদেশে ঢুকে। বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয়, নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। রাখাইনে রাজ্যে উপযুক্ত পরিবেশ না থাকার কারণে একজন রোহিঙ্গাও তাদের জন্মভূমিতে ফিরতে রাজি হচ্ছে না।
মিয়ানমারের বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। বৈঠকের পরিবেশ খানিকটা পাল্টাপাল্টি অবস্থায় রূপ নেয়। এই সময় বাংলাদেশের তরফে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় অ্যারেঞ্জমেন্টের শর্তাবলী বৈঠকে পড়ে শোনানো হয়। যে চুক্তিটি ২০১৭ সালের নভেম্বরে নেপি’ডতে সই হয়েছিল। চুক্তির শর্তগুলো তুলে ধরে বাংলাদেশ বক্তব্য দিলে মিয়ানমার ক্ষান্ত হয়। সূত্র মতে, বৈঠকে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে মিয়ানমারকে অগ্রগতির দৃশ্যমান তাগিদ দেয়া হয়। তবে প্রত্যাবাসন শুরুর কোন দিন-তারিখের বিষয়ে তারা একমত হতে পারেনি। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে নিউইয়র্কে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় এমন বৈঠক হয়েছিল। সেখানে জাতিসংঘ মহাসচিবও উপস্থিত ছিলেন । সেই সময় মধ্যস্থতাকারী চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল- প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে চীন তার বন্ধু বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ইনফরমাল বা অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই আলোচনার অংশ হিসাবেই নিউ ইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বৈঠক। ’১৮ সালের জুনে বেইজিংয়ে বাংলাদেশের তৎকালীণ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মন্ত্রী চাও থিন সোয়েকে নিয়ে প্রথম অনানুষ্ঠানিক ত্রি-দেশীয় বৈঠক করেছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েং ই। সেই থেকে শুরু। এরপর নিউইয়র্ক এবং নেপি’ডতে দু’দফা ত্রিদেশীয় বৈঠক হয়েছে। ওই সব বৈঠকের ফল হিসাবে দু’দফা প্রত্যাবাসন চেষ্টাও হয়। কিন্তু তা সফল হয়নি। একজন রোহিঙ্গাও ফিরতে রাজী হয়নি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এবার চতুর্থ দফায় বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের বৈঠক হলো।
প্রত্যাবাসন পরিস্থিতি যৌথভাবে মূল্যায়ন করবে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার: এদিকে নিউইয়র্কের বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রকৃত পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য একটি ‘ত্রিপক্ষীয় যৌথ কার্যনির্বাহী ব্যবস্থা’ গঠনে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বৈঠক শেষে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি মিডিয়া প্রতিনিধিদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। বলেন, কিছু আপত্তি সত্ত্বেও চীনের ওই প্রস্তাবে রাজি হয় মিয়ানমার। অক্টোবরে ত্রিপক্ষীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম বেঠক হওয়ার বিষয়ে তারা সব পক্ষ একমত হয়েছে। বৈঠকে মিয়ানমার দাবি করেছে যে তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ সম্পন্ন করেছে। তবে বাংলাদেশ জানিয়েছে, মিয়ানমার এখনও রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস আনতে পারেনি। তারা নিজ দেশে তখনই ফিরে যাবে, যখন তারা মনে করবে মিয়ানমারে ফেরার পর তারা নিরাপদে থাকবে ও স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে। ড. মোমেন নিউইয়র্ক বৈঠকে মিয়ানমারের অঙ্গীকার ব্যক্ত করার বিষয়ে বলেন, একটি সুসংবাদ হচ্ছে মিয়ানমার যত দ্রুত সম্ভব তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে রাজি হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টে আচমকা রোহিঙ্গা ঢলে প্রায় সাড়ে ৭লাখ নারী-পুরুষ শিশু বাংলাদেশে ঢুকে। বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয়, নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। রাখাইনে রাজ্যে উপযুক্ত পরিবেশ না থাকার কারণে একজন রোহিঙ্গাও তাদের জন্মভূমিতে ফিরতে রাজি হচ্ছে না।
No comments