আফগানিস্তানে দিনে গড়ে নিহত ৭৪, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তালেবানরা
আগস্ট
মাসে আফগানিস্তানে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৭৪ জন নারী,
পুরুষ ও শিশু। কিভাবে সন্ত্রাস দেশটিকে গ্রাস করেছে তার এক ভয়াবহ চিত্র
ফুটে উঠেছে এতে। বিবিসির অনুসন্ধানে এ অবস্থা ধরা পড়েছে। বিবিসি বলছে,
আগস্ট মাসে ৬১১ টি ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৩০৭ জন মানুষ। তবে এই সংখ্যার বৈধতা
নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তালেবান ও আফগানিস্তানের সরকার। আফগানিস্তানে
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সামরিক হামলার পর দেশটি এক ভয়াবহ পরিস্থিতির
শিকার। যেন মৃত্যু উপত্যকায় রূপ নিয়েছে এ দেশ। প্রতিদিনই যেখানে সহিংসতায়
প্রাণহানী হচ্ছে।
১৮ বছরের যুদ্ধের পর এখন আফগানিস্তান থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তা নিয়ে দেনদরবার চলছে। প্রথমবারের মতো তালেবানদের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের। কিন্তু তিনি শেষ মুহূর্তে সেই বৈঠক বাতিল করেন।
বিবিসি বলছে, তাদের অনুসন্ধানে উপরের ওই পরিসংখ্যান বেরিয়ে এসেছে। বেশির ভাগ মারা গেছেন যুদ্ধে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন তালেবান যোদ্ধারা। আর এক-পঞ্চমাংশ বেসামরিক মানুষ। এতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৯৪৮ জন। বিবিসি লিখেছে, হতাহতের এসব সংখ্যা বলে দেয় আফগানিস্তানে প্রকৃতপক্ষে কি অবস্থা। এ থেকে উত্তরণে নানা রকম সমঝোতা প্রক্রিয়া চলছে। তবে যুদ্ধবিরতি কখনো আলোচনায় আসেনি। এর ফলে এখনও প্রতি সপ্তাহে প্রাণ হারাচ্ছেন শত শত মানুষ। এ মাসের শেষের দিকে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আফগানদের আশঙ্কা এ সময় সহিংসতা আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
আগস্টের হত্যাকাণ্ড
আগস্টের প্রথম সপ্তাহের সহিংসতার পর তালেবান ও সরকারি সেনারা অনানুষ্ঠানিক অস্ত্রবিরতিতে যায় পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে। তা সত্ত্বেও ছুটির সময়ে ১০ই আগস্ট থেকে ১৩ই আগস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৯০ জন। এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি। সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন ২৭ শে আগস্ট। এদিন বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৬২ জন। আহত হয়েছেন ৪৭ জন। এর বেশির ভাগই তালেবান। তবে সবচেয়ে বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন ১৮ই আগস্ট। এদিন নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১২জন বেসামরিক মানুষ। এদিন রাজধানী কাবুলে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হন ৯২ জন। আহত হয়েছেন ১৪২ জন। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন বর মিরওয়াইজ। তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু নিহত হয়েছেন এতে। তার নববধূ সেদিন হারিয়েছেন তার বেশ কয়েকজন কাজিন ও এক ভাইকে। এ জন্য তার মনে এখন যন্ত্রণার আগুন। মিরওয়াইজ বলেছেন, এখন তার স্ত্রী চাইছেন তার বিয়ের পোশাক ও ফটো এলবাম পুড়িয়ে ফেলতে। তার ভাষায়, মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যে আমার সব আশা ও জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ ধ্বংস হয়ে গেছে।
কে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
২০০১ সালের আগে কখনোই এত বেশি শক্তিশালী ছিল না তালেবানরা। কিন্তু বিবিসি আগস্ট মাসে যেসব মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছে তার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই তালেবান সদস্য। বিষয়টি তাদের কাছে বিস্ময়ের। এ জন্য বেশ কিছু ঘটনা কারণ হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে, যখন শান্তি আলোচনা চলছিল তখন তালেবানরা আক্রমণ চালিয়েছে। জবাবে বিমান হামলা ও রাতে অভিযান বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন বহু তালেবান। পাশাপাশি নিহত হয়েছেন সাধারণ মানুষও। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কত সংখ্যক যোদ্ধাকে তালেবানরা হারিয়েছে তা জানা যায় নি। ধারণা করা হয়, তাদের অস্ত্রধারী ৩০ হাজার সদস্য থাকতে পারেন। গত মাসে তাদের ১০০০ সদস্য নিহত হওয়ার খবরকে দৃঢ়তার সঙ্গে ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে তালেবানরা। তারা বলেছেন, এত বেশি হতাহতের তথ্য প্রমাণের মতো কোনো ডকুমেন্ট নেই। দেশের ভিতরে নিত্যদিন যেসব প্রচারণা হয় এবং কাবুলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যেসব তথ্য দেয় তার ওপর ভিত্তি করে বিবিসি এই রিপোর্ট করেছে বলে দাবি করে তালেবানরা।
ওদিকে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হতাহতের বিষয় একটি টপ সিক্রেট। এর ভিত্তিতে বিবিসি বলছে, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীতে হতাহতের তথ্য যোগ করলে আগস্ট মাসে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। জানুয়ারি মাসে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে তার দেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪৫০০০ সদস্য নিহত হয়েছেন। বিবিসি উত্থাপিত তথ্যকে পর্যালোচনা করার প্রয়োজন বলে দাবি করেছে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে বিবিসি নিশ্চিত হয়েছে যে, আগস্ট মাসে আফগানিস্তানে কমপক্ষে ৪৭৩ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে আহত হয়েছেন ৭৮৬ জন। আফগানিস্তানে জাতিসংঘ মিশনের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ফিওনা ফ্রাজার বলেছেন, আফগান যুদ্ধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বেসামরিক লোকজন। তিনি আরো বলেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে অন্য যেকোনো স্থানের চেয়ে আফগানিস্তানে সবচেয়ে বেশি বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে। জাতিসংঘের ডাটা দৃঢ়তার সঙ্গে একথাই বলছে। বাস্তবে যে পরিমাণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন, নিহত বা আহত হন তার প্রকৃত সংখ্যা সামনে আসে না।
১৮ বছরের যুদ্ধের পর এখন আফগানিস্তান থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তা নিয়ে দেনদরবার চলছে। প্রথমবারের মতো তালেবানদের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের। কিন্তু তিনি শেষ মুহূর্তে সেই বৈঠক বাতিল করেন।
বিবিসি বলছে, তাদের অনুসন্ধানে উপরের ওই পরিসংখ্যান বেরিয়ে এসেছে। বেশির ভাগ মারা গেছেন যুদ্ধে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন তালেবান যোদ্ধারা। আর এক-পঞ্চমাংশ বেসামরিক মানুষ। এতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৯৪৮ জন। বিবিসি লিখেছে, হতাহতের এসব সংখ্যা বলে দেয় আফগানিস্তানে প্রকৃতপক্ষে কি অবস্থা। এ থেকে উত্তরণে নানা রকম সমঝোতা প্রক্রিয়া চলছে। তবে যুদ্ধবিরতি কখনো আলোচনায় আসেনি। এর ফলে এখনও প্রতি সপ্তাহে প্রাণ হারাচ্ছেন শত শত মানুষ। এ মাসের শেষের দিকে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আফগানদের আশঙ্কা এ সময় সহিংসতা আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
আগস্টের হত্যাকাণ্ড
আগস্টের প্রথম সপ্তাহের সহিংসতার পর তালেবান ও সরকারি সেনারা অনানুষ্ঠানিক অস্ত্রবিরতিতে যায় পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে। তা সত্ত্বেও ছুটির সময়ে ১০ই আগস্ট থেকে ১৩ই আগস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৯০ জন। এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি। সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন ২৭ শে আগস্ট। এদিন বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৬২ জন। আহত হয়েছেন ৪৭ জন। এর বেশির ভাগই তালেবান। তবে সবচেয়ে বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন ১৮ই আগস্ট। এদিন নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১২জন বেসামরিক মানুষ। এদিন রাজধানী কাবুলে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হন ৯২ জন। আহত হয়েছেন ১৪২ জন। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন বর মিরওয়াইজ। তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু নিহত হয়েছেন এতে। তার নববধূ সেদিন হারিয়েছেন তার বেশ কয়েকজন কাজিন ও এক ভাইকে। এ জন্য তার মনে এখন যন্ত্রণার আগুন। মিরওয়াইজ বলেছেন, এখন তার স্ত্রী চাইছেন তার বিয়ের পোশাক ও ফটো এলবাম পুড়িয়ে ফেলতে। তার ভাষায়, মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যে আমার সব আশা ও জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ ধ্বংস হয়ে গেছে।
কে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
২০০১ সালের আগে কখনোই এত বেশি শক্তিশালী ছিল না তালেবানরা। কিন্তু বিবিসি আগস্ট মাসে যেসব মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছে তার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই তালেবান সদস্য। বিষয়টি তাদের কাছে বিস্ময়ের। এ জন্য বেশ কিছু ঘটনা কারণ হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে, যখন শান্তি আলোচনা চলছিল তখন তালেবানরা আক্রমণ চালিয়েছে। জবাবে বিমান হামলা ও রাতে অভিযান বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন বহু তালেবান। পাশাপাশি নিহত হয়েছেন সাধারণ মানুষও। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কত সংখ্যক যোদ্ধাকে তালেবানরা হারিয়েছে তা জানা যায় নি। ধারণা করা হয়, তাদের অস্ত্রধারী ৩০ হাজার সদস্য থাকতে পারেন। গত মাসে তাদের ১০০০ সদস্য নিহত হওয়ার খবরকে দৃঢ়তার সঙ্গে ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে তালেবানরা। তারা বলেছেন, এত বেশি হতাহতের তথ্য প্রমাণের মতো কোনো ডকুমেন্ট নেই। দেশের ভিতরে নিত্যদিন যেসব প্রচারণা হয় এবং কাবুলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যেসব তথ্য দেয় তার ওপর ভিত্তি করে বিবিসি এই রিপোর্ট করেছে বলে দাবি করে তালেবানরা।
ওদিকে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হতাহতের বিষয় একটি টপ সিক্রেট। এর ভিত্তিতে বিবিসি বলছে, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীতে হতাহতের তথ্য যোগ করলে আগস্ট মাসে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। জানুয়ারি মাসে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে তার দেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪৫০০০ সদস্য নিহত হয়েছেন। বিবিসি উত্থাপিত তথ্যকে পর্যালোচনা করার প্রয়োজন বলে দাবি করেছে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে বিবিসি নিশ্চিত হয়েছে যে, আগস্ট মাসে আফগানিস্তানে কমপক্ষে ৪৭৩ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে আহত হয়েছেন ৭৮৬ জন। আফগানিস্তানে জাতিসংঘ মিশনের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ফিওনা ফ্রাজার বলেছেন, আফগান যুদ্ধে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বেসামরিক লোকজন। তিনি আরো বলেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে অন্য যেকোনো স্থানের চেয়ে আফগানিস্তানে সবচেয়ে বেশি বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে। জাতিসংঘের ডাটা দৃঢ়তার সঙ্গে একথাই বলছে। বাস্তবে যে পরিমাণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন, নিহত বা আহত হন তার প্রকৃত সংখ্যা সামনে আসে না।
>>>বিবিসি
No comments