মিসর চায় ২ সন্তান বা তার কম, হাঙ্গেরি চায় ৪ বা তারও বেশি!
জনসংখ্যা
নিয়ে সম্প্রতি দুই দেশে দেখা গেছে দুই চিত্র। ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরি চাইছে
জনসংখ্যা বাড়াতে। আর মধ্যপ্রাচ্য ঘেঁসে থাকা আফ্রিকার দেশ মিসর চাচ্ছে
জনসংখ্যা কমাতে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য হাঙ্গেরি ঘোষণা করেছে আর্থিক
প্রণোদনা। অন্যদিকে জনসংখ্যা হ্রাসে মিসর কমিয়ে দিচ্ছে আর্থিক সহায়তা!
অবশ্য দুই দেশেই সফলতা নিয়ে আশাবাদ কম। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হাঙ্গেরি যে
ধরনের আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে তা বেশি সন্তান জন্মদানে প্রত্যক্ষভাবে
উৎসাহিত করতে পারবে না। উদাহরণ হিসেবে সামনে আনা হয়েছে জাপানের প্রসঙ্গ।
অন্যদিকে মিসরে জন্ম হার হ্রাসের সরকারি উদ্যোগকে শ্লথ করে দিচ্ছে অশিক্ষা,
ঐতিহ্যগত রীতি, দারিদ্র্য ও ধর্মীয় ব্যাখ্যা। জন্ম নিয়ন্ত্রণের পক্ষে আল
আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফতোয়াও তেমন কাজে আসছে না।
মিসরের জনসংখ্যা প্রায় ১০ কোটিতে গিয়ে ঠেকেছে। জনসংখ্যা প্রতি বছর ২৬ লাখ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি মন্তব্য করেছেন, মিসরের সবচাইতে বড় দুইটি ঝুঁকির একটি হচ্ছে জঙ্গিবাদ, অপরটি হচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। মিসর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে দুইটির বেশি শিশু না নেওয়ার নীতি বাস্তবায়নের জন্য। এ লক্ষ্যে দেশটি জাতিসংঘের দেওয়া অর্থের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নেও জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ ও সচেতনতা তৈরি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। যদিও এসব কর্মসূচিতে সচেতনতা তৈরীর জন্য যাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদেরই কেউ কেউ তিনটি সন্তান নেওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন!
নিম্ন জন্মহার এবং নাগরিকদের অন্যান্য দেশে থিতু হওয়ার প্রবণতার কারণে এক প্রজন্মের মধ্যেই হাঙ্গেরির জনসংখ্যা ১০ লাখ কমে গেছে। দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ৯৮ লাখ। এতে ধীরে ধীরে দেখা দিতে শুরু করেছে শ্রম সরবরাহে ঘাটতি। কিন্তু দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর ওরবান অভিবাসীদের গ্রহণ করে শ্রমবাজারের এই সংকট নিরসনের ঘোরতর বিরোধী। তিনি চান, দেশের জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধি। গত সপ্তাহে ওরবান ঘোষণা করেছেন, বেশি সদস্যের পরিবারগুলোর জন্য দেওয়া হবে ভর্তুকি, কর রেয়াত, বিশেষ অনুদান ও গাড়ি। বেশি সন্তান নিয়ে একটি পরিবার পেতে পারে সর্বোচ্চ এক লাখ ৩৫ হাজার ডলার পর্যন্ত। চারটি বা তারও বেশি শিশুর আছে এমন পরিবারগুলোই পাবে সবচাইতে বেশি পরিমাণ আর্থিক আনুকূল্য।
ওরবানের ভাষ্য, ‘ইউরোপে দিন দিন শিশু জন্মের হার কমে যাচ্ছে। অন্যান্য দেশের জন্য এর সমাধান হচ্ছে অভিবাসীদের নিয়ে আসা। কিন্তু আমাদের দরকার হাঙ্গেরীয় শিশু। অভিবাসীদের ডেকে নিয়ে আসার মানে হচ্ছে আত্মসমর্পণ করা।’
সাধারণত জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রত্যেক নারীকে দুই দশমিক একটি শিশুর জন্ম দিতে হয়। হাঙ্গেরিতে এ সংখ্যা বর্তমানে এক দশমিক পাঁচ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ওরবানের ঘোষণা করা আর্থিক প্রণোদনার সূত্রে জন্মহার বৃদ্ধি পেয়ে বড়জোর এক দশমিক সাতে উপনীত হতে পারে, এর বেশি নয়। ‘সেন্ট্রাল স্ট্যাটিসটিকস অফিসের’ গবেষক বালাজ কাপিটানি মন্তব্য করেছেন, ‘আর্থিক প্রণোদনা যখন প্রত্যক্ষ হয় তখন তা জন্মহার বৃদ্ধিতে ভালো ভূমিকা রাখে। কিন্তু এখানে ব্যবস্থাটি জটিল এবং শর্তসাপেক্ষ। দ্রুত জন্মহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটি যথেষ্ট অনুপ্রেরণা দিতে পারবে না।’
এ বিষয়ে সামনে আনা হয়েছে জাপানের প্রসঙ্গ। বিশ্বের মধ্যে জাপানে জনসংখ্যা হ্রাসের হার সবচেয়ে বেশি। ২০১৭ সালে ‘বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ’ এক সমীক্ষায় দেখেছে, বেশি শিশু জন্ম দেওয়ার প্রণোদনা হিসেবে সরকার যেসব সুবিধার কথা ঘোষণা করেছিল, নাগরিকরা সেগুলো প্রায় উপেক্ষা করে গেছে। রাশিয়া এবং সিঙ্গাপুরেও জন্মহার বৃদ্ধির এমন প্রচেষ্টা সফলতা পায়নি।
ভিক্তর ওরবানের ঘোষণা উচ্ছ্বাসের বদলে হাঙ্গেরির কর্মহীন ও দরিদ্রদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। কারণ তাদের ক্ষেত্রে কর রেয়াত সুবিধা প্রাসঙ্গিক কোনও বিষয় নয়। লিজা রুডম্যান ভ্যাঙ্ক নামের একজন নার্স মন্তব্য করেছেন, ‘সরকারি পরিকল্পনা অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে কোনও কাজেরই না। দাদি-নানির বড় সহায়তা বা বেবিসিটার ছাড়া চারটি শিশু লালন-পালন করা অসম্ভব ব্যাপার।’
এদিকে মিসরে ভিন্ন চিত্র। সেখানে নেসমা ঘানিম নামের এক মিশরীয় নারী সঙ্গে কথা হয়েছে রয়টার্সের। ঘানিমের তিন কন্যা সন্তান রয়েছে। তারপরও তিনি আরেকটি সন্তান গ্রহণ করতে চান। তার ভাষ্য, ‘এবার যদি একটি পুত্র সন্তান হয় তাহলে সে বংশের বাতি হতে পারবে। বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মাকে সাহায্য করতে পারবে। বোনদের দেখভাল করতে পারবে।’ মিসর সরকার চাইছে মন মানসিকতার পরিবর্তন। এ উদ্দেশ্যে তারা ‘দুইটি সন্তানই যথেষ্ট’ নীতি ঘোষণা করেছে।
১৯৭৬ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তায় সেখানে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি চালু ছিল। তখন নারী প্রতি শিশু জন্ম হার পাঁচ দশমিক ছয় থেকে কমে তিন দশমিক শূন্য হয়েছিল। কিন্তু তারপর আর্থিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জন্ম হার বৃদ্ধি পেয়ে তিন দশমিক পাঁচে উন্নীত হয়।
বর্তমানে যে দুই সন্তান নীতি বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে মিসর তার জন্য দেশটির নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ করেছে প্রায় ৪৩ লাখ ডলার। জাতিসংঘ দিচ্ছে প্রায় এক কোটি ডলার। সেই সঙ্গে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সহায়তা। কর্মসূচির আওতায় যেমন দেওয়া হচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী, তেমনি আয়োজন করা হচ্ছে সচেতনতামূলক সভার। নারীদেরকে জানানো হচ্ছে, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইসলামে নিষিদ্ধ নয়। মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় জন্মনিয়ন্ত্রণকে বৈধ ঘোষণা করলেও মিসরের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এর সঙ্গে একমত নয়।
তাছাড়া ঐতিহ্যগত রীতিনীতির প্রভাবও রয়ে গেছে। গিজার একটি গ্রামে কর্মরত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবক আসমা মোহাম্মদ এখনও বিয়ে করেনি, তার নেই কোনও সন্তান। কিন্তু তিনি বলেছেন, তার তিনটি সন্তান নেওয়ার ইচ্ছে। তার ভাষ্য, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই আমি ঠিক করে রেখেছিলাম আমি তিনটি সন্তান নেব!’
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য মিসর সরকার দরিদ্র পরিবারগুলোর আর্থিক সহায়তা কমিয়ে দিচ্ছে সন্তান সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু এতে তৈরি হয়েছে অসন্তুষ্টি। নিমা মাহমুদ নামের একজন নারী মন্তব্য করেছেন, ‘কাউকে কোনও কিছু দিয়ে সেটা কেড়ে নেওয়া ঠিক না। যাদের ইতোমধ্যেই তিনটি সন্তান আছে তাদের আর্থিক সহায়তা না কমিয়ে, দুইটি সন্তানের বেশি জন্ম দিলে আর্থিক সহায়তা হ্রাসের নীতি নববিবাহিতদের ওপর কার্যকর করতে পারত সরকার।’ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ‘দুইটি সন্তানই যথেষ্ট’ নীতি ঘোষণা যথেষ্ট নয় শিশুর জন্ম হার হ্রাসের জন্য। বরং পরিবার পরিকল্পনার বিষয়টি স্কুলের পাঠ্যসূচিতেও যুক্ত করা দরকার।
মিসরের জনসংখ্যা প্রায় ১০ কোটিতে গিয়ে ঠেকেছে। জনসংখ্যা প্রতি বছর ২৬ লাখ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি মন্তব্য করেছেন, মিসরের সবচাইতে বড় দুইটি ঝুঁকির একটি হচ্ছে জঙ্গিবাদ, অপরটি হচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। মিসর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে দুইটির বেশি শিশু না নেওয়ার নীতি বাস্তবায়নের জন্য। এ লক্ষ্যে দেশটি জাতিসংঘের দেওয়া অর্থের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নেও জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ ও সচেতনতা তৈরি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। যদিও এসব কর্মসূচিতে সচেতনতা তৈরীর জন্য যাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদেরই কেউ কেউ তিনটি সন্তান নেওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন!
নিম্ন জন্মহার এবং নাগরিকদের অন্যান্য দেশে থিতু হওয়ার প্রবণতার কারণে এক প্রজন্মের মধ্যেই হাঙ্গেরির জনসংখ্যা ১০ লাখ কমে গেছে। দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ৯৮ লাখ। এতে ধীরে ধীরে দেখা দিতে শুরু করেছে শ্রম সরবরাহে ঘাটতি। কিন্তু দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর ওরবান অভিবাসীদের গ্রহণ করে শ্রমবাজারের এই সংকট নিরসনের ঘোরতর বিরোধী। তিনি চান, দেশের জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধি। গত সপ্তাহে ওরবান ঘোষণা করেছেন, বেশি সদস্যের পরিবারগুলোর জন্য দেওয়া হবে ভর্তুকি, কর রেয়াত, বিশেষ অনুদান ও গাড়ি। বেশি সন্তান নিয়ে একটি পরিবার পেতে পারে সর্বোচ্চ এক লাখ ৩৫ হাজার ডলার পর্যন্ত। চারটি বা তারও বেশি শিশুর আছে এমন পরিবারগুলোই পাবে সবচাইতে বেশি পরিমাণ আর্থিক আনুকূল্য।
ওরবানের ভাষ্য, ‘ইউরোপে দিন দিন শিশু জন্মের হার কমে যাচ্ছে। অন্যান্য দেশের জন্য এর সমাধান হচ্ছে অভিবাসীদের নিয়ে আসা। কিন্তু আমাদের দরকার হাঙ্গেরীয় শিশু। অভিবাসীদের ডেকে নিয়ে আসার মানে হচ্ছে আত্মসমর্পণ করা।’
সাধারণত জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রত্যেক নারীকে দুই দশমিক একটি শিশুর জন্ম দিতে হয়। হাঙ্গেরিতে এ সংখ্যা বর্তমানে এক দশমিক পাঁচ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ওরবানের ঘোষণা করা আর্থিক প্রণোদনার সূত্রে জন্মহার বৃদ্ধি পেয়ে বড়জোর এক দশমিক সাতে উপনীত হতে পারে, এর বেশি নয়। ‘সেন্ট্রাল স্ট্যাটিসটিকস অফিসের’ গবেষক বালাজ কাপিটানি মন্তব্য করেছেন, ‘আর্থিক প্রণোদনা যখন প্রত্যক্ষ হয় তখন তা জন্মহার বৃদ্ধিতে ভালো ভূমিকা রাখে। কিন্তু এখানে ব্যবস্থাটি জটিল এবং শর্তসাপেক্ষ। দ্রুত জন্মহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটি যথেষ্ট অনুপ্রেরণা দিতে পারবে না।’
এ বিষয়ে সামনে আনা হয়েছে জাপানের প্রসঙ্গ। বিশ্বের মধ্যে জাপানে জনসংখ্যা হ্রাসের হার সবচেয়ে বেশি। ২০১৭ সালে ‘বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ’ এক সমীক্ষায় দেখেছে, বেশি শিশু জন্ম দেওয়ার প্রণোদনা হিসেবে সরকার যেসব সুবিধার কথা ঘোষণা করেছিল, নাগরিকরা সেগুলো প্রায় উপেক্ষা করে গেছে। রাশিয়া এবং সিঙ্গাপুরেও জন্মহার বৃদ্ধির এমন প্রচেষ্টা সফলতা পায়নি।
ভিক্তর ওরবানের ঘোষণা উচ্ছ্বাসের বদলে হাঙ্গেরির কর্মহীন ও দরিদ্রদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। কারণ তাদের ক্ষেত্রে কর রেয়াত সুবিধা প্রাসঙ্গিক কোনও বিষয় নয়। লিজা রুডম্যান ভ্যাঙ্ক নামের একজন নার্স মন্তব্য করেছেন, ‘সরকারি পরিকল্পনা অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে কোনও কাজেরই না। দাদি-নানির বড় সহায়তা বা বেবিসিটার ছাড়া চারটি শিশু লালন-পালন করা অসম্ভব ব্যাপার।’
এদিকে মিসরে ভিন্ন চিত্র। সেখানে নেসমা ঘানিম নামের এক মিশরীয় নারী সঙ্গে কথা হয়েছে রয়টার্সের। ঘানিমের তিন কন্যা সন্তান রয়েছে। তারপরও তিনি আরেকটি সন্তান গ্রহণ করতে চান। তার ভাষ্য, ‘এবার যদি একটি পুত্র সন্তান হয় তাহলে সে বংশের বাতি হতে পারবে। বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মাকে সাহায্য করতে পারবে। বোনদের দেখভাল করতে পারবে।’ মিসর সরকার চাইছে মন মানসিকতার পরিবর্তন। এ উদ্দেশ্যে তারা ‘দুইটি সন্তানই যথেষ্ট’ নীতি ঘোষণা করেছে।
১৯৭৬ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তায় সেখানে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি চালু ছিল। তখন নারী প্রতি শিশু জন্ম হার পাঁচ দশমিক ছয় থেকে কমে তিন দশমিক শূন্য হয়েছিল। কিন্তু তারপর আর্থিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জন্ম হার বৃদ্ধি পেয়ে তিন দশমিক পাঁচে উন্নীত হয়।
বর্তমানে যে দুই সন্তান নীতি বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে মিসর তার জন্য দেশটির নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ করেছে প্রায় ৪৩ লাখ ডলার। জাতিসংঘ দিচ্ছে প্রায় এক কোটি ডলার। সেই সঙ্গে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সহায়তা। কর্মসূচির আওতায় যেমন দেওয়া হচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী, তেমনি আয়োজন করা হচ্ছে সচেতনতামূলক সভার। নারীদেরকে জানানো হচ্ছে, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইসলামে নিষিদ্ধ নয়। মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় জন্মনিয়ন্ত্রণকে বৈধ ঘোষণা করলেও মিসরের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এর সঙ্গে একমত নয়।
তাছাড়া ঐতিহ্যগত রীতিনীতির প্রভাবও রয়ে গেছে। গিজার একটি গ্রামে কর্মরত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবক আসমা মোহাম্মদ এখনও বিয়ে করেনি, তার নেই কোনও সন্তান। কিন্তু তিনি বলেছেন, তার তিনটি সন্তান নেওয়ার ইচ্ছে। তার ভাষ্য, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই আমি ঠিক করে রেখেছিলাম আমি তিনটি সন্তান নেব!’
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য মিসর সরকার দরিদ্র পরিবারগুলোর আর্থিক সহায়তা কমিয়ে দিচ্ছে সন্তান সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু এতে তৈরি হয়েছে অসন্তুষ্টি। নিমা মাহমুদ নামের একজন নারী মন্তব্য করেছেন, ‘কাউকে কোনও কিছু দিয়ে সেটা কেড়ে নেওয়া ঠিক না। যাদের ইতোমধ্যেই তিনটি সন্তান আছে তাদের আর্থিক সহায়তা না কমিয়ে, দুইটি সন্তানের বেশি জন্ম দিলে আর্থিক সহায়তা হ্রাসের নীতি নববিবাহিতদের ওপর কার্যকর করতে পারত সরকার।’ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ‘দুইটি সন্তানই যথেষ্ট’ নীতি ঘোষণা যথেষ্ট নয় শিশুর জন্ম হার হ্রাসের জন্য। বরং পরিবার পরিকল্পনার বিষয়টি স্কুলের পাঠ্যসূচিতেও যুক্ত করা দরকার।
No comments