ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড, নামফলকের ছড়াছড়ি
সব
সাইনবোর্ড ও নামফলক বাংলায় লিখতে হবে। আদালতের এই আদেশটি পাঁচ বছরের
পুরোনো। কিন্তু রাজধানীর যেকোনো সড়কে গেলে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান-গুলোর
সাইনবোর্ডে ইংরেজির দৌরাত্ম্য চোখে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়, বিপণিবিতান,
রেস্তোরাঁ, হাসপাতাল বা অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানই হোক, নামই ইংরেজিতে (রোমান
হরফ) রাখার প্রবণতা বেশি। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর
সাইনবোর্ড বাংলায় প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দিলেও তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, নামফলকের ছড়াছড়ি। তবে সরকারি দপ্তরের সাইনবোর্ড বা নামফলক বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাংলায় রূপান্তর হয়েছে। এ ছাড়া যানবাহনের ডিজিটাল নম্বরপ্লেটগুলো বাংলায় সরবরাহ হওয়ার কারণে এ ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ অনেকটাই বাস্তবায়ন হয়েছে। একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আদালত বিদেশি দূতাবাস ও প্রতিষ্ঠান বাদে দেশের সব সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার, গাড়ির নম্বরপ্লেট, দপ্তরগুলোর নামফলক এবং গণমাধ্যমে ইংরেজি বিজ্ঞাপন ও মিশ্র ভাষার ব্যবহার বন্ধ করতে নির্দেশ দেন।
পরে ২০১৪ সালের ২৯ মে আন্তমন্ত্রণালয় সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মাধ্যমে এটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত হয়। তারপরও বাংলা ব্যবহারে দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট আদালত কড়া ভাষায় মন্তব্য করেন। যে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দেন, সেই রিটের আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ অভিযোগ করেন, সরকারের গাফিলতির কারণে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সরকার বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে আন্তরিক না। সরকার এ বিষয়ে সক্রিয় হলে এবং জনগণ সচেতন হলেই কেবল সর্বস্তরে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া বলেন, সাইনবোর্ডে ভিনদেশি ভাষার ব্যবহার দীর্ঘদিনের বাজে অভ্যাস। সিটি করপোরেশনের অভিযান চলমান প্রক্রিয়া। এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন হতে হবে, বাংলা ভাষার প্রতি দরদ থাকতে হবে।
ইংরেজিতে সাইনবোর্ড টাঙানো বিভিন্ন ধরনের অন্তত ১৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেকেই জানেন না বাংলায় সাইনবোর্ড লেখা নিয়ে আদালতের আদেশের বিষয়ে। ব্র্যান্ডের নাম ও লোগো ইংরেজিতে হওয়ায় ইংরেজিতেই সাইনবোর্ড তৈরি করেছেন বলেও কেউ কেউ দাবি করলেন। অথচ ব্যবসা সনদ (ট্রেড লাইসেন্স) নেওয়ার সময় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সাইনবোর্ডে বাংলা ব্যবহারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়। ‘সাইনবোর্ড/ব্যানার বাংলায় লিখতে হবে’—এই কথাটি ব্যবসা সনদে আলাদাভাবে লেখা থাকে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সাইনবোর্ডে ভাষার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া থাকার পরও অনেকে সেটা অনুসরণ করেন না। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতা থাকলেও সিটি করপোরেশন কখনোই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় না।
ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড বড় বড় ইংরেজি হরফে লেখা। শংকর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত একটি ভবনের বাইরের অংশে ১০টি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড টাঙানো। এর অধিকাংশই রেস্তোরাঁ। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ইংরেজিতে লেখা। তবে দুটি প্রতিষ্ঠান ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ডের পাশে ছোট করে পৃথক ব্যানারে বাংলায় প্রতিষ্ঠানের নাম টাঙিয়েছে।
একই চিত্র দেখা যায়, বনানী ১১ নম্বর সড়কে। এই সড়কের প্রায় প্রতিটি ভবনেই আছে ব্র্যান্ডের পোশাক ও খাবারের দোকান। এই সড়কের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ইংরেজিতে লেখা। একটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘বাংলার প্রতি অবজ্ঞা থেকে এটি করা হয়েছে, বিষয়টি এমন না। নামটি ইংরেজিতে তাই সাইনবোর্ড ইংরেজি হরফেই লেখা হয়েছে। আমাদের সচেতনতার অভাব আছে এটি সত্যি।’
জানতে চাইলে শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এটি দুর্ভাগ্যের বিষয়। শুধু প্রতিষ্ঠানের নাম নয়, সামাজিক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রও ইংরেজিতে করা হচ্ছে। এগুলো সরকারের বা আদালতের আদেশেই কেন বাংলায় লিখতে হবে? এটি নাগরিকদের দায়িত্ববোধ থেকেই করা উচিত।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, নামফলকের ছড়াছড়ি। তবে সরকারি দপ্তরের সাইনবোর্ড বা নামফলক বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাংলায় রূপান্তর হয়েছে। এ ছাড়া যানবাহনের ডিজিটাল নম্বরপ্লেটগুলো বাংলায় সরবরাহ হওয়ার কারণে এ ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ অনেকটাই বাস্তবায়ন হয়েছে। একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আদালত বিদেশি দূতাবাস ও প্রতিষ্ঠান বাদে দেশের সব সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার, গাড়ির নম্বরপ্লেট, দপ্তরগুলোর নামফলক এবং গণমাধ্যমে ইংরেজি বিজ্ঞাপন ও মিশ্র ভাষার ব্যবহার বন্ধ করতে নির্দেশ দেন।
পরে ২০১৪ সালের ২৯ মে আন্তমন্ত্রণালয় সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মাধ্যমে এটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত হয়। তারপরও বাংলা ব্যবহারে দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট আদালত কড়া ভাষায় মন্তব্য করেন। যে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দেন, সেই রিটের আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ অভিযোগ করেন, সরকারের গাফিলতির কারণে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সরকার বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে আন্তরিক না। সরকার এ বিষয়ে সক্রিয় হলে এবং জনগণ সচেতন হলেই কেবল সর্বস্তরে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া বলেন, সাইনবোর্ডে ভিনদেশি ভাষার ব্যবহার দীর্ঘদিনের বাজে অভ্যাস। সিটি করপোরেশনের অভিযান চলমান প্রক্রিয়া। এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন হতে হবে, বাংলা ভাষার প্রতি দরদ থাকতে হবে।
ইংরেজিতে সাইনবোর্ড টাঙানো বিভিন্ন ধরনের অন্তত ১৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেকেই জানেন না বাংলায় সাইনবোর্ড লেখা নিয়ে আদালতের আদেশের বিষয়ে। ব্র্যান্ডের নাম ও লোগো ইংরেজিতে হওয়ায় ইংরেজিতেই সাইনবোর্ড তৈরি করেছেন বলেও কেউ কেউ দাবি করলেন। অথচ ব্যবসা সনদ (ট্রেড লাইসেন্স) নেওয়ার সময় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সাইনবোর্ডে বাংলা ব্যবহারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়। ‘সাইনবোর্ড/ব্যানার বাংলায় লিখতে হবে’—এই কথাটি ব্যবসা সনদে আলাদাভাবে লেখা থাকে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সাইনবোর্ডে ভাষার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া থাকার পরও অনেকে সেটা অনুসরণ করেন না। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতা থাকলেও সিটি করপোরেশন কখনোই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় না।
ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড বড় বড় ইংরেজি হরফে লেখা। শংকর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত একটি ভবনের বাইরের অংশে ১০টি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড টাঙানো। এর অধিকাংশই রেস্তোরাঁ। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ইংরেজিতে লেখা। তবে দুটি প্রতিষ্ঠান ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ডের পাশে ছোট করে পৃথক ব্যানারে বাংলায় প্রতিষ্ঠানের নাম টাঙিয়েছে।
একই চিত্র দেখা যায়, বনানী ১১ নম্বর সড়কে। এই সড়কের প্রায় প্রতিটি ভবনেই আছে ব্র্যান্ডের পোশাক ও খাবারের দোকান। এই সড়কের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ইংরেজিতে লেখা। একটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘বাংলার প্রতি অবজ্ঞা থেকে এটি করা হয়েছে, বিষয়টি এমন না। নামটি ইংরেজিতে তাই সাইনবোর্ড ইংরেজি হরফেই লেখা হয়েছে। আমাদের সচেতনতার অভাব আছে এটি সত্যি।’
জানতে চাইলে শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এটি দুর্ভাগ্যের বিষয়। শুধু প্রতিষ্ঠানের নাম নয়, সামাজিক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রও ইংরেজিতে করা হচ্ছে। এগুলো সরকারের বা আদালতের আদেশেই কেন বাংলায় লিখতে হবে? এটি নাগরিকদের দায়িত্ববোধ থেকেই করা উচিত।
No comments