হকিংয়ের শেষ বার্তা
আইনস্টাইনের
পর আধুনিক বিশ্বের ‘জিনিয়াস’ বিশেষণটি যদি ব্যবহার করা হয় তা স্টিফেন
হকিংয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। মোটর নিউরন ডিজিজে আক্রান্ত এক জিনিয়াস। কাজ
করে শুধু মাথা। রেট্রো–রোবোটিক ভয়েসই ছিল তার ভরসা। বাকিটা বিস্ময়।
কৃষ্ণগহ্বর আবিষ্কার করেছিলেন? বা বিগ ব্যাং? কয়েকটা আবিষ্কারের গতে
বাঁধা যাবে না হকিংকে। তিনি নিজেই তো একটা বিশাল অ্যাচিভমেন্ট। এই
শতাব্দীর সেরা পদার্থবিদদের যদি একটা তালিকা তৈরি করা যায়, তাহলে হকিংয়ের
স্থান সবার আগে থাকবে। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছেন প্রতিদিন।
গ্রাভিটেশন, কসমোলজি, কোয়ান্টাম থিওরি, ইনফেরমেশন থিওরি আরো কত কী!
কেমব্রিজে ভর্তি হওয়ার পরই হকিং মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত হন। শরীরের প্রায়
বেশিরভাগ অংশই ধীরে ধীরে অসাড় হয়ে পড়ে। মগজই শুধু ভরসা।ভিনগ্রহীদের নিয়ে
গবেষণায় হকিং বারবার বলেছেন, ‘ওরা আছে। তারাও আমাদের খুঁজছে। যেমন আমরা
তাদের খুঁজছি। হয়ত তারা প্রযুক্তিতে আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে।
অনেক বেশি
শক্তিশালী। ভিনগ্রহীদের সভ্যতা আমাদের চেয়ে উন্নত।’ একটি সাক্ষাৎকারে হকিং
জানিয়েছিলেন, একদিন হয়ত এরকম কোনো গ্রহ থেকেই সিগন্যাল পাব আমরা। তবে ওই
সিগন্যালের জবাব দেয়ার বিষয়টি ভালো করে ভেবে দেখতে হবে। এমনও তো হতে পারে
ব্যাকটেরিয়াদের আমরা যে দৃষ্টিতে দেখি, এলিয়েনরাও আমাদের সেই দৃষ্টিতে
দেখতে পারে। গতবছরই হকিং সাবধান করে বলেছিলেন, ৩০ বছরের মধ্যে পৃথিবী না
ছাড়লে বিপদ ঘনিয়ে আসবে। কারণ জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে শিগগিরই বসবাসের
জায়গার অভাব হবে। ব্ল্যাক হোল, সুপারনোভা, সোলার রেডিয়েশনের প্রভাবে
পৃথিবীতে মানুষের বসবাস অসম্ভব হয়ে উঠবে। তার কথায়, ‘পৃথিবী থেকে বেঁচে
থাকার রসদ কমছে দ্রুত।’ হ্যাঁ, জিনিয়াসদের ভবিষ্যদ্বাণী মেলে। নিজে চলে
গেলেও বিশ্বকে বাঁচাতে শেষ বার্তা দিয়ে গেলেন হকিং।
No comments