ডিজিটাল বাজারে সবচেয়ে ভোগান্তিতে ভোক্তারা by মহিউদ্দীন আহমেদ
আগামীকাল
বৃহস্পতিবার বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। এবারের
প্রতিপাদ্য বিষয় ‘‘ডিজিটাল বাজার ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচছতা ও ন্যয্যতা
নিশ্চিত করণ”। ভোক্তা অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। যা কিনা সংবিধানের
অনুচ্ছেদ ২৬ থেকে ৪৭(ক) এ নিশ্চিত করা আছে। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ভোক্তা
অধিকার আইন পাশ করে। যেখানে খাদ্য, চিকিৎসা, পণ্য, ঔষধ ও সেবা খাতের
ভোক্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ ও ডিজিটাল খাতের গ্রাহকদের সেবা
খাতে অন্তর্ভূক্ত করা হলেও এ খাতে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আইনটি
ডিজিটাল বান্ধব না হওয়ায় এ খাতের ভোক্তরা বর্তমানে সবচাইতে ভোগান্তি ও
প্রতারণার শিকার হচ্ছে। বর্তমান বিশ্ব যখন প্রযুক্তি বান্ধব তখন সরকারও
২০০৮ সালে ভিশন-২০২১ ঘোষণা করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কাজ শরু করে। টেলিকম
খাতে গ্রাহক প্রায় ১৪ কোটি ৫০ লাখ, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রায় ৮ কোটি ৩৮
লাখ,মোবাইল ব্যাংকিং এর গ্রাহক প্রায় ৬ কোটি। ই-কমার্সের ব্যবসা প্রায় ৭শত
কোটি, ই-টিকেটিং, ই-বিলিং, ই-স্বাস্থ্য, ই-কৃষি, ই-বুক, ই-পেপার,
ই-সার্ভিস, অনলাইন ব্যাংকি, পরিবহনে উবার, পাঠাওসহ প্রযুক্তি খাতে অসংখ্য
এ্যাপস চালু আছে। যার মাধ্যমে দেশের জনগণ ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে।
আর এসবই
হচ্ছে গুগল সার্চ ইঞ্জিন, সোস্যাল মিডিয়া, ই-মেইলও বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে।
বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৫০ ভাগ জনগণই প্রযুক্তির সেবা নিচ্ছে। ১৯৯৫ সালেও এ
খাতে ভোক্তা ছিল একভাগ। বর্তমানে জীবন জীবিকার সবকিছুই ডিজিটাল নির্ভর হয়ে
পড়েছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে চলেছে এ খাতে প্রতারণা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০
কোটি টাকা রিজার্ভ চুরি, সাইবারক্রাইম, পর্নগ্রাফি, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস,
মোবাইল ব্যাংকিং এর প্রতারণা, হ্যাকিং, ই-কমার্সের পণ্য ক্রয় বিক্রয়ের
ক্ষেত্রে প্রতারণা, টেলিকম খাতে উচ্চমূল্যের ইন্টারনেট ও কলরেট, কলড্রপ,
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ধর্মীয় অপপ্রচারের নামে দাঙ্গা হামলাসহ বিভিন্ন
নৈরাজ্য চলছে। জি-২০ সামিট ২০১৭ তে জার্মান প্রেসিডেন্ট নিজেই এ খাতের
ভোক্তা স্বার্থ নিশ্চিত করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তারই
ধারাবাহিকতায় এবারের ভোক্তা অধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য। ই-কমার্সের বাজারসহ
ডিজিটাল বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য আজ অবধি কোন ধরণের নীতিমালা তৈরী করা হয়
নাই। যদি দ্রুত এ খাতের ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য আইন ও নীতিমালা
তৈরিসহ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে গতিশীল না করা হবে ততদিন এ খাতের গ্রাহকরা
প্রতারিচত হতে থাকবে।
মহিউদ্দীন আহমেদ, সভাপতি, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
মহিউদ্দীন আহমেদ, সভাপতি, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
No comments