রক্তচাপের সংজ্ঞা বদল : ১৩০/৮০-বেশি থাকলেই বিপদ!
ব্লাড
প্রেশার কাঁটায় কাঁটায় ১৩০/৮০ হলেই রেড অ্যালার্ট। কারণ, সিস্টোলিক ও
ডায়াস্টলিক ব্লাড প্রেশার এক করে বেশি হলেই তাকে বলা হবে হাই ব্লাড
প্রেশার! অন্তত এমনই বলছে পৃথিবীর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের অন্যতম নিয়ন্ত্রক
সংস্থা আমেকিান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (এএইচএ)। অতি সম্প্রতি হাই ব্লাড
প্রেশার নিয়ে এতদিনকার সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছে এএইচএ। এতদিন উপরের প্রেশার
বা সিস্টোলিক ১৪০ এবং নিচেরটা অর্থাৎ ডায়াস্টোলিক ৯০ এমএম এইচজি’র বেশি
হলেই সেই মানুষটি উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনে ভুগছেন বলা হতো। এবার সেই
ধারণা পাল্টে দিয়ে আমেকিান কলেজ অব কার্ডিওলজি এবং আমেরিকান হার্ট
অ্যাসোসিয়েশন নিজেদের ২১ জন বিশেষজ্ঞ সদস্যের পরামর্শকে গ্রহণযোগ্যতা দিয়ে
প্রকাশ করেছে নয়া গাইডলাইন। তাতে বলা হচ্ছে ১৪০/৯০-এর বেশি নয়, ১৩০/৮০’র
বেশি হলেই রোগী উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বলা হবে। এএইচএ তার ব্যাখ্যাও করে
দিয়েছে। জানিয়েছে, ১৩০/৮০’র বেশি (১৩০-১৩৯/৮০-৮৯ এমএম এইচজি) ব্লাড
প্রেশারকে বলা হবে টাইপ ১ হাইপারটেনশন। অন্যদিকে ১৪০/৯০ এমএম এইচজি ব্লাড
প্রেশারকে বলা হবে টাইপ ২ হাইপারটেনশন।
শুধু এইটাই নয়, রোগীকে নিজের ব্লাড
প্রেশার নিজে মাপতেও সুপারিশ করেছে এই গাইডলাইন। তাদের মতে, ডাক্তারের
চেম্বারে প্রেশার মাপলে উদ্বেগে প্রেশার অন্তত ৫ করে বাড়ে। যদিও যদিও অন্য
মহলের মত, তারা পুরানো মানে ১৪০/৯০-এর মত মেনেই হাই প্রেশারের হিসেব করবেন।
আবার নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কার্ডিওলজিস্ট মনে করছেন, এ ধরনের
গাইডলাইন প্রকাশের পিছনে অন্য স্বার্থ কাজ করাও অস্বাভাবিক নয়। কারণ, এটি
মানলে শুধু উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা কমপক্ষে পাঁচ থেকে আট শতাংশ বাড়বে।
বাড়বে ওষুধ ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কোম্পানির রমরমা। বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট
ডাঃ কে কে আগরওয়াল বলেন, আমার মতে, এই গাইডলাইন মেনে চলাই উচিত। তবে
১৩০/৮০’র একটু বেশি হলেই ওষুধ শুরু না করে বরং সতর্ক হয়ে তখন জীবনযাপন
পাল্টানো উচিত। অনেকটা একই সুরে বিশিষ্ট হার্ট সার্জেন ডাঃ সত্যজিৎ বসু
বলেন, হ্যাঁ, এএইচএ গাইলাইন পাল্টেছে। ১৩০/৮০ এখন হাই প্রেশারের বিপদসীমার
সূচক। মানতে দোষ নেই। কিন্তু, হুট করে প্রেশারের ওষুধ শুরু করা ঠিক নয়।
উপরের এবং নিচের প্রেসার ১৩০-১৪০ এবং ৮০ থেকে ৯০-এর ঘরে থাকলে জীবনযাপনে
বদল এনে মর্নিং ওয়াক শুরু করে করুন। ধূমপান ছেড়ে দিন। হাঁটুন। এতেও না কমলে
তখন অল্পস্বল্প ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ অরূপ
দাশবিশ্বাসও এই গাইডলাইন মানার পক্ষে। তিনি বলেন, একটু সাবধান হলেই
১৩০/৮০—এই মাত্রা মেনে চলা সম্ভব।
No comments