মুফতি হান্নানদের ফাঁসি কার্যকরে প্রস্তুত কারা কর্তৃপক্ষ
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত
জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানসহ অপর আসামির ফাঁসি কার্যকরে কারা কর্তৃপক্ষ
প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল
সুপার মোঃ মিজানুর রহমান। বুধবার সকাল ১০টার দিকে কাশিমপুর হাই সিটিউরিটি
কেন্দ্রীয় কারাগারে রিভিউ আবেদন খারিজের রায় তাদের পড়ে শুনানো শেষে তিনি
সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। রায় কার্যকরের ব্যাপারে জেল সুপার বলেন, সকল
প্রকার আইনি প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলেই কেবল রায়
কার্যকরের ব্যবস্থা নেবে কারা কর্তৃপক্ষ। আর সরকারি আদেশ বাস্তবায়নের জন্য
কারা কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত রয়েছে। মিজানুর রহমান জানান, বুধবার সকাল ১০টার
দিকে রিভিউ আবেদন খারিজের রায় পড়ে শুনানো হলে মুফতি হান্নান ও শাহেদুল আলম
ওরফে বিপুল মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার ব্যাপারে মত
প্রকাশ করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে বারটার দিকে রায়ের কপি কাশিমপুর
হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। রাত গভীর হয়ে যাওয়ায় তখন
তাদের রায় পড়ে শুনানো হয়নি। পরে আহ সকাল ১০টার দিকে মুফতি হান্নানসহ দুই
জঙ্গিকে রিভিউ আবেদন খারিজের রায় পড়ে শুনানো হয়। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১
মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার
চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়।
এতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত
এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এ
মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ৫ আসামির মধ্যে মুফতি
হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল
বিপুলকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং দেলোয়ার
হোসেন রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। নিয়ম অনুসারে
মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯
সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন। পরে গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে
শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১
ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের
পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও
বিপুল। অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার
জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন। আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ৭
ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ হয়ে যায়। গত ১৭ জানুয়ারি এ রায় প্রকাশের পর
আসামিরা রিভিউ করেন। ১৯ মার্চ দেয়া রিভিউ খারিজের রায় মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়
এবং আজ বুধবার তা পড়ে শুনানো হয়।
No comments