আবাসিক এলাকার ভেতরে লেগুনাস্ট্যান্ড
মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের বি ব্লকে আবাসিক এলাকার ভেতরে গড়ে তোলা হয়েছে লেগুনাস্ট্যান্ড। লেগুনার বেপরোয়া গতির কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। নষ্ট হচ্ছে আবাসিক এলাকার পরিবেশ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতারা এই লেগুনাস্ট্যান্ড বসিয়েছেন। গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের ২ নম্বর সড়কে লেগুনাস্ট্যান্ড। সড়কের দুই পাশে ১২টি লেগুনা দাঁড়ানো। পাশের আবাসিক ভবনের ফটক আটকে এসব লেগুনা রাখা হয়েছে। ২০ ফুট প্রস্থের সড়কের দুই পাশে লেগুনা দাঁড় করিয়ে রাখায় হেঁটে চলতেও বাসিন্দাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যাত্রা শেষে লেগুনা ঘোরানোর মতো যথেষ্ট জায়গা সড়কে নেই। ফলে পাশের আবাসিক ভবনের ফটকের সীমানায় ঢুকে লেগুনা ঘোরাচ্ছেন চালকেরা। সড়কের একজন বাসিন্দা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আবাসিক এলাকার ভেতরে বেপরোয়া গতিতে লেগুনা চলায় সড়কের বাসিন্দারা বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় বের হতেই ভয় পাচ্ছেন। বাসার গেট দিয়ে বের হতেও সমস্যা হচ্ছে। এসব লেগুনা মিরপুর ১০ নম্বরের অ্যাভিনিউ-৫ থেকে মিরপুর ১০ নম্বর বি ব্লক পর্যন্ত চলাচল করে।
সব লেগুনাই হজরত শাহ্ চন্দ্রপুরী (রহ.) পরিবহন প্রাইভেট লিমিটেডের। নাম না প্রকাশের শর্তে একজন লেগুনা মালিক ও ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিলে গড়ে তুলেছেন। এই স্ট্যান্ডে মোট ২৫টি লেগুনা আছে। এখানে কারও একার দু-তিনটি লেগুনা যেমন আছে, তেমনি ৮-১০ জন নেতা-কর্মী মিলেও একটি লেগুনা নামিয়েছেন। স্ট্যান্ডে লেগুনা রেখে এর চালক এবং তাদের সহকারীদের আবাসিক ভবনের সামনে বসেই আড্ডা দিতে দেখা যায়। পাশেই গড়ে উঠেছে চা-সিগারেটের দোকান। সড়কের পাশের নালায় চালক ও তাদের সহকারীরা মূত্র ত্যাগ করছে। লেগুনার চালক ও সহকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লেগুনাগুলোর রুট পারমিট অনুযায়ী মিরপুর ১০ নম্বরের অ্যাভিনিউ-৫ থেকে যাত্রা শুরু করে শেষ হওয়ার কথা এ ব্লকের অ্যাভিনিউ-১ এর শেষ মাথায়। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে বেশ খানিকটা দূরে হওয়ায় সেখানে যাত্রী পাওয়া যায় না। বর্তমান জায়গাটি গোলচত্বরের কাছাকাছি হওয়ায় লেগুনার মালিকেরা এখানে স্ট্যান্ড বসিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৫ সালের এপ্রিলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরে চারটি লেগুনা নিয়ে স্ট্যান্ডটি চালু হয়। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে মাঝে কিছুদিন ছিল না। গত বছর থেকে বড় পরিসরে আবার লেগুনাস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়। এলাকাটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। লেগুনাস্ট্যান্ডের বিষয়ে কথা বলতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
No comments