সিজারে নবজাতকের নাড়ি-ভুঁড়ি ও কলিজা বের করে ফেলার অভিযোগ
'মৃত
শিশুর জন্ম হয়েছে, দ্রুত বাড়িতে নিয়ে যান' সিজারের পর পরই হাসপাতালে
কর্মকর্তারা স্বজনদের এ কথা বলে প্যাকেট করে মৃত বাচ্চা বুঝিয়ে দেন। যেমন
কথা তেমন কাজ। নবজাতকের পরিবার মাকে হাসপাতালে রেখে শিশুটিকে প্যাকেটজাত
অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে যান। সকালে শিশুটিকে দাফন করার জন্য প্যাকেট খুললে
দেখতে পান ভিন্ন চিত্র। নবজাতকের পেটের নাড়ি-ভুঁড়ি ও কলিজা বের হওয়া। পাশে
পড়ে রয়েছে সিজারের কাজে ব্যবহৃত কাচিসহ আনুসাঙ্গিক যন্ত্রপাতি।
ভুক্তভোগীদের দাবি, ভুল চিকিৎসার কারণে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে
ফরিদগঞ্জ উপজেলার সদর সেন্ট্রাল হাসপাতালে সিজার করার সময় এই ঘটনা ঘটে।
সংবাদ পেয়ে চাঁদপুর পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নবজাতক শিশুটির
বাড়ি উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম দায়চারা গ্রামে। নবজাতকের
নানী সাজেদা বেগম জানান, তার মেয়ে খাদিজার (২০) প্রসব বেদনা উঠলে বুধবার
রাতে প্রথমে সিনিয়র ভিজিটর শামীমা ইসলামের কাছে নিলে তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাফি
করার জন্য সেন্ট্রাল হাসপাতালে পাঠান। রোগীর অবস্থা গুরুতর বলে হাসপাতাল
কর্তৃপক্ষ দ্রুত সিজারের পরামর্শ দেন।
পরে রাত ১১টায় খাদিজার সিজারিয়ান
অপারেশন হয়। হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক ডা. মাহমুদার সিজারিয়ান অপারেশন করেন
বলে সাজেদা বেগম জানান। সিজারিয়ান অপারেশন শেষে হাসপাতালের কর্মকর্তারা
জানান, শিশুটি মৃত জন্মগ্রহণ করেছে। পরে প্যাকেটজাত অবস্থায় শিশুটির লাশ
দ্রুত তাদের কাছে দিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। সকালে শিশুটিকে দাফন করার জন্য
প্যাকেট খুললে এই অবস্থা দেখতে পান শিশুটির পরিবার। পরে তারা শিশুটিকে
ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে আসেন। এ ব্যাপারে সেন্ট্রাল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা
পরিচালক দেলোয়ার হোসেন বেলাল জানান, রাতে কি হয়েছে তা তিনি জানেন না। সকালে
এসে তিনি ঘটনা জানতে পারেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা
কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর আলম শিপন জানান, শিশুটি জন্ম হওয়ার সময় পরির্পূণতা
নিয়ে আসেনি। তার পেটের ওয়াল ছিল না। ফলে পেটের ভেতরের সব কিছু বের হয়ে
গেছে। ফরিদগঞ্জ থানার ওসি শাহ্ আলম জানান, এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের
হচ্ছে। চাঁদপুর পুলিশ সুপার সামছুন্নাহার জানান, শিশুর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে
তিনি ঘটনাস্থলে এসেছেন। অপরাধ হয়ে থাকলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
No comments